বেঙ্গালুরুর রাস্তায় নিরাপত্তাহীনতা, মুখ্যমন্ত্রীর সহকারীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক

কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহকারী এল.কে. আথিক সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর রাস্তাঘাটের দুরবস্থা নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। তিনি গভীর রাতের বাইক রাইডের পর শহরের এমজি রোড…

Bengaluru Roads Under Scrutiny as Siddaramaiah’s Ex-Aide Joins Chorus of Criticism

কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহকারী এল.কে. আথিক সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর রাস্তাঘাটের দুরবস্থা নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন। তিনি গভীর রাতের বাইক রাইডের পর শহরের এমজি রোড ও ব্রিগেড রোডে রাস্তাগুলির বিপজ্জনক অবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

Advertisements

সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, সড়ক মেরামতির অদক্ষ ও নিম্নমানের কাজের জন্য এই রাস্তা এখন দুই চাকার গাড়ির চালকদের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এল.কে. আথিকের কথায়, “গত রাতে এমজি রোড ও ব্রিগেড রোড দিয়ে বাইকে যাচ্ছিলাম। লক্ষ্য করলাম, যেসব জায়গায় রাস্তার কাজ করা হয়েছে, সেগুলিতে প্যাচওয়ার্ক এতটাই খারাপভাবে করা হয়েছে যে রাস্তা অসমান, ঢেউখেলানো এবং একেবারেই সুরক্ষিত নয়। এমনকি ছোটখাটো মেরামতও যদি ভাল মানের যন্ত্রপাতি দিয়ে করা হয়, তাহলে রাস্তাগুলো অনেক বেশি মসৃণ ও নিরাপদ হয়ে উঠতে পারে।”

   

তাঁর এই মন্তব্য দ্রুত ভাইরাল হয় এবং শহরের নাগরিকদের মধ্যে একটি বড় অংশ তা সমর্থন করেন। দীর্ঘদিন ধরেই বেঙ্গালুরুর রাস্তা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় খানাখন্দ, অপরিকল্পিত মেরামত ও জল জমার কারণে প্রায়শই দুর্ঘটনার খবর সামনে আসে। এমন পরিস্থিতিতে এল.কে. আথিকের মতো একজন প্রশাসনিক অভিজ্ঞ ব্যক্তির এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এল.কে. আথিক চলতি বছরের জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রীর অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ইস্তফা দেন। তবে তিনি এখনও বেঙ্গালুরু বিজনেস করিডোরের চেয়ারপার্সনের দায়িত্বে রয়েছেন এবং শহরের পেরিফেরাল রিং রোড প্রকল্পেও যুক্ত আছেন। অর্থাৎ শহরের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজে তাঁর সম্পৃক্ততা এখনও রয়েছে, এবং সেই সূত্রেই তাঁর এই পর্যবেক্ষণ আরও গুরুত্ব পাচ্ছে।

শহরের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন যে, রাস্তার অবস্থা শুধু যানজটের কারণ নয়, বরং অনেক সময় মৃত্যুর কারণও হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে রাস্তার গর্ত ও অমসৃণ প্যাচওয়ার্ক বড়সড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে ওঠে। এল.কে. আথিকের পোস্টের পর সেই ক্ষোভ যেন আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

বেঙ্গালুরুর মতো প্রযুক্তিনগরীতে এমন অব্যবস্থা প্রশ্ন তোলে রাজ্য প্রশাসনের দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু রাস্তা মেরামত করলেই চলবে না, সেই সঙ্গে প্রয়োজন মানসম্পন্ন উপকরণ, সুসংগঠিত পরিকল্পনা ও প্রকল্প তদারকির জন্য দায়িত্বশীল দল। এল.কে. আথিকও তাঁর পোস্টে সেই বিষয়েই ইঙ্গিত দিয়েছেন— যেখানে ‘মাইনর ফিক্স’ করেই সমস্যা অনেকটা মেটানো সম্ভব, সেখানে বরাদ্দ অর্থ ও মনোযোগের অভাবেই এই পরিস্থিতি।

এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন তুলেছে। যদিও আথিক তাঁর পোস্টে কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রশাসনের সরাসরি সমালোচনা করেননি, তবে তাঁর পর্যবেক্ষণ স্পষ্টতই একটি বার্তা বহন করে— উন্নয়ন মানে শুধুই প্রকল্প ঘোষণা নয়, বাস্তবে তার কার্যকর বাস্তবায়নও জরুরি।