পাইপ দিয়ে ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ, পলাতক অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক

 বেঙ্গালুরু: শিক্ষার জগতে এক নৃশংস ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বেঙ্গালুরুতে। শহরের এক বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাকেশ কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি মাত্র নয় বছরের এক ছাত্রকে পিভিসি পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর (Student abuse) করেছেন। বর্তমানে ওই ছাত্র হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

Advertisements

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৪ অক্টোবর। অভিযোগ অনুসারে, একটি সামান্য ভুলের জন্য প্রধান শিক্ষক রাকেশ কুমার ছাত্রটির উপর অতিরিক্ত রাগ দেখান এবং ক্লাসরুমেই নির্মমভাবে প্রহার করেন। ছাত্রটির শরীরে একাধিক জায়গায় ফোলা, কালশিটে দাগ ও রক্ত জমাট দেখা গিয়েছে।

শিশুটির মা বলেন, “আমার ছেলে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে আসে। তার গায়ে হাতের দাগ, পিঠে রক্ত জমাট ছিল। পরে জানতে পারি, প্রধান শিক্ষক পিভিসি পাইপ দিয়ে মেরেছেন।” তিনি আরও জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে উল্টে হুমকি দেওয়া হয়, “ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে চলে যান।”

শিশুটির মা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং ছেলের আঘাতের ছবি ও ভিডিও প্রমাণ হিসেবে জমা দিয়েছেন। ওই প্রমাণে দেখা গিয়েছে, শিশুর শরীরের একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।

এই ঘটনার পর বেঙ্গালুরু পুলিশের হালাসুরু থানায় রাকেশ কুমার, শিক্ষিকা চন্দ্রিকা এবং স্কুলের মালিক বিজয় কুমারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, চন্দ্রিকা ছাত্রটিকে আটকে রেখেছিলেন এবং মালিক বিজয় কুমার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকেও কোনো প্রতিবাদ করেননি।

পুলিশ ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধির 324 (আঘাত), 341 (অবৈধভাবে আটক), 506 (হুমকি) ধারায় এবং জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা শুরু করেছে। অভিযুক্তরা ঘটনার পর থেকেই পলাতক বলে জানা গিয়েছে।

Advertisements

স্থানীয় সমাজকর্মীরা এই ঘটনাকে “মানবিকতার চরম লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের দাবি, “বিদ্যালয়ে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ প্রয়োজন। শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।”

এই ঘটনায় শিক্ষা দপ্তরও তদন্ত শুরু করেছে। বেঙ্গালুরু সিটি এডুকেশন অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলের রেজিস্ট্রেশন ও স্বীকৃতি আপাতত পর্যালোচনার অধীনে রাখা হয়েছে। দোষ প্রমাণিত হলে স্কুলের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।

অন্যদিকে, শিশুটির মা সংবাদমাধ্যমকে জানান, “আমি চাই আমার সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার হোক। কোনো অন্য মা যেন এমন দিনের মুখোমুখি না হন।”

এই ঘটনায় সমগ্র বেঙ্গালুরু জুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। নেটিজেনরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশাসনের কাছে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন। অনেকেই বলেছেন, “শিক্ষকের হাতে ছাত্র মার খাচ্ছে—এটা সভ্য সমাজে সহ্য করা যায় না।”