মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খন্ড নির্বাচনের আগে কংগ্রেসকে আক্রমণ মোদীর, পাল্টা প্রতিক্রিয়া রাহুলের

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Modi And Rahul Gandhi) মহারাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ধুলে শহরে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপির প্রচার শুরু করেছেন। এখানে মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের…

Before Maharashtra and Jharkhand Elections, Modi Attacks Congress, Rahul's Counter Response

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Modi And Rahul Gandhi) মহারাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ধুলে শহরে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপির প্রচার শুরু করেছেন। এখানে মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের বসবাস। আর সেখান থেকেই মোদী কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। তিনি ‘অত্যাচারিত জনগণের’ বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ করেছেন।

মোদী বলেছেন, কংগ্রেস এক একটি জাতিকে নিয়ে অন্যটির বিরুদ্ধে লড়াতে চায়, যা জনগণের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তিনি মহারাষ্ট্রবাসীকে মহায়ুতি বিজেপি, শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে) এবং এনসিপি (অজিত পওয়ার) জোটকে পুনরায় নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “যদি একসঙ্গে থাকো, তবে নিরাপদ থাকবে”।

   

কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

প্রধানমন্ত্রী মোদী দাবি করে বলেছেন, কংগ্রেস দল ‘একটি বিপজ্জনক খেলা’ খেলছে, যেখানে এক সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, কংগ্রেস কখনোই দলিত, পিছিয়ে পড়া শ্রেণি বা আদিবাসী সম্প্রদায়ের উন্নতি দেখতে চায়নি এবং এটাই হচ্ছে কংগ্রেসের ইতিহাস। মোদী আরও জানিয়েছেন, মহায়ুতি জোটই একমাত্র সরকার হতে পারে যা মহারাষ্ট্রের উন্নতি নিশ্চিত করতে পারবে।

তিনি একদিকে মহাবিকাশ আঘাদি (MVA) জোটকে আক্রমণ করে বলেন, তারা কেবল ভাতা কল্যাণমূলক প্রকল্প বন্ধ করতে চায়। অন্যদিকে মহায়ুতি সরকারের নেতৃত্বে রাজ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

মহাবিকাশ আঘাদির অস্থিরতা

মোদী মহাবিকাশ আঘাদি (MVA) জোটের মধ্যে চলমান অস্থিরতা নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেন। মহাবিকাশ আঘাদি হচ্ছে কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) এবং এনসিপি (শরদ পওয়ার) এর জোট, যারা গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের ২৮৮ আসনের জন্য আসন ভাগাভাগির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছিল। মোদী বলেন, “মহাবিকাশ আঘাদির গাড়ির চাকা ও ব্রেক নেই। আর চালকের সিট নিয়ে নিজেদের মধ্যে লড়াই চলছে।”

অবশ্য, কংগ্রেস নেতা রামেশ চেনিথালা জোটের আসন ভাগাভাগি বিষয়ে বিভ্রান্তির কথা অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, সব আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে এবং পুরো আসন ভাগাভাগির চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, “যতটুকু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, তা মিটে গেছে এবং কোনো ধরনের অস্থিরতা বা সংঘাত নেই।”

রাহুল গান্ধীর পাল্টা আক্রমণ

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী শুক্রবার এক জবাবে বিজেপি এবং মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, বিজেপি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ‘জল, জঙ্গল, জমি’-কে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, মোদী এবং বিজেপি আদিবাসীদের “বনবাসী” বলে আখ্যায়িত করলেও আসলে তারা ‘উন্নয়নের নামে আদিবাসী জমি কেড়ে নিচ্ছে’।

এছাড়া, রাহুল গান্ধী পুনরায় জাতিগত জনগণনা করার দাবি তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “আমরা জানি না দেশের কতজন দলিত, ওবিসি, আদিবাসী, মহিলা বা আলপসঙ্ঘিক জনগণ আছেন। এই জনগণনার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে তাদের উন্নয়নে সঠিক নীতি গৃহীত হবে।”

মহারাষ্ট্রের রাজনীতির এই উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে, প্রধান দলগুলো তাদের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে এবং একে অপরকে আক্রমণ করছে। মোদী ও কংগ্রেসের মধ্যে যে একে অপরকে খোঁচা মেরে পাল্টা ভাষণ চলছে তা আগামী নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের ভবিষ্যত অনেকটাই নির্ধারণ করবে। সেইসঙ্গে আগামী পাঁচ বছরে রাজ্য কতটা উন্নতি করতে পারবে তার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটারদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।