প্রতিবেশী বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে উঠে আসা সাম্প্রতিক এক চাঞ্চল্যকর তথ্য ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে চরম সতর্ক অবস্থায় নিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, বাংলাদেশ ক্রমশই ভারতের জন্য একটি শত্রুতাপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে গড়ে উঠছে। ভারত-বিরোধী মনোভাব ও হিন্দু-বিরোধী এজেন্ডা প্রচারে এতদিন পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ ইউনুসকে। তবে এবার খবর পাওয়া গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি অংশ এই ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন এক অফিসার পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিমের (BAT) আদলে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি হচ্ছেন মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়া-উল-হক। তার পরিষেবা ব্যাচ নম্বর BA-5916। জিয়া-উল-হক ইতিপূর্বে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আনসারুল বাংলা টিমের সামরিক শাখার কমান্ডার হিসেবে কাজ করেছেন। এবার তিনি প্রায় ২৫০ জন সৈনিক ও অফিসারকে নিয়ে একটি নতুন সন্ত্রাসী দল গঠনের পরিকল্পনা করছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
পাকিস্তানের মডেল অনুসরণে ষড়যন্ত্র
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি-নিউজ জানাচ্ছে, এই ষড়যন্ত্রে একটি বিশেষ ইউনিট গঠনের চেষ্টা চলছে, যা পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ (SSG)-এর মতো কাজ করবে। পাকিস্তানের এই বিশেষ কমান্ডো ইউনিট BAT নামে কাশ্মীর সীমান্তে বারংবার আক্রমণ চালিয়েছে। একই ধাঁচে বাংলাদেশেও একটি সন্ত্রাসবাদী ইউনিট গঠনের চক্রান্ত চলছে।
মেজর জিয়া-উল-হক পাকিস্তানের SSG-এর কৌশলকে অনুসরণ করে একটি দল গঠন করতে চাইছেন, যেখানে প্রায় ২০০ জন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার (JCO) এবং ১৭ জন কমিশন্ড অফিসার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই দলটি মূলত সীমান্তে আক্রমণ চালানোর জন্য “হিট-অ্যান্ড-স্কুট” পদ্ধতি গ্রহণ করবে। অর্থাৎ, দ্রুত আক্রমণ চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কৌশল প্রয়োগ করা হবে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সন্ত্রাসের ছায়া
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পরিস্থিতি ক্রমশই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। সূত্রমতে, নবগঠিত এই বাংলাদেশি ইউনিটটি সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশে সাহায্য করবে। ভারতের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনার জন্যই এই ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, এই ইউনিটটি গঠিত হলে এটি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠবে।
মেজর জিয়া-উল-হকের পরিকল্পনার রূপরেখা
মেজর জিয়া-উল-হক তাঁর সন্ত্রাসবাদী দল গঠনের জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহ করছেন। তার মূল লক্ষ্য হল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে থেকে সেনা কর্মকর্তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে সন্ত্রাসবাদে যুক্ত করা। তার এই পরিকল্পনার প্রধান উদ্দেশ্য হলো ভারতের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল করা এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ পরিচালনার মাধ্যমে আঞ্চলিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি অংশ ইতিমধ্যেই এই ষড়যন্ত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলে দাবি করা হচ্ছে। পাকিস্তান যে কৌশলে তার সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবহার করেছে, বাংলাদেশেও ঠিক একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। মেজর জিয়া-উল-হকের পরিকল্পনায় স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ সরকার বা সেনাবাহিনীর একটি অংশ ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের মডেলে কাজ করতে চায়।
ভারতের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ
ভারতের জন্য এই ষড়যন্ত্র একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের মডেলে চলতে শুরু করে, তবে এটি ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, এবং ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলিতে এই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের প্রভাব পড়তে পারে।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং বাংলাদেশ থেকে আসা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের উপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের এই ষড়যন্ত্র আন্তর্জাতিক মহলেও সমালোচনার মুখে পড়তে পারে। ভারত এই বিষয়ে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে বিষয়টি উত্থাপন করতে পারে। পাকিস্তানের মতো একটি দেশকে অনুসরণ করে বাংলাদেশ যদি সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়ে, তবে এটি পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করবে।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই এই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক এবং সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক স্তরে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই ধরনের ষড়যন্ত্রের ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জকে বাড়িয়ে তুলবে।
বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানের মডেলে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী গঠনের এই ষড়যন্ত্র ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সক্রিয়তা এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বিষয়টি তুলে ধরা এখন সময়ের দাবি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের এই উত্থান আগামী দিনে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য একটি কঠিন সময় ডেকে আনতে পারে।
Alarming reports reveal Bangladesh‘s retired army officer planning a pro-terror squad inspired by Pakistan’s BAT. Indian security agencies on high alert as cross-border threats rise.