থানে: মহারাষ্ট্রের থানে জেলার একটি অতিরিক্ত সেশনস কোর্ট বাংলাদেশী নাগরিক জোশিম সোবুর মুল্লাকে (২৬) দুই নাবালিকার ধর্ষণের অপরাধে আট বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। বিচারক পারাগ এ সানে গত ২৪ অক্টোবর এই রায় ঘোষণা করেন, যার প্রতিলিপি শুক্রবার প্রকাশ্যে আসে। একই মামলায় জোশিমের স্ত্রী মুর্শিদা এবং আরেক সহযোগী জানা রাবুল মুল্লাকে অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানের অপরাধে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রায় অনুযায়ী, সাজা পূর্ণ হওয়ার পর তিনজনকেই বাংলাদেশে নির্বাসিত করা হবে।এই মামলা ২০১৭ সালে শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে আসা দুই নাবালিকাকে জোশিম ধর্ষণ করেছে। একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ওই দুই মেয়েকে উদ্ধার করে। মামলার তদন্তে উঠে আসে, জোশিম ও তার সহযোগীরা মেয়ে দুটিকে দেহব্যবসায় বাধ্য করার চেষ্টা করছিল।
সুনীলের পজিশন নিয়ে খালিমকে খোঁচা দিয়ে ‘বিষ্ফোরক’ বেঙ্গালুরু কোচ
কিন্তু আদালতে প্রমাণের অভাবে মানব পাচার, নাবালিকা সংগ্রহ এবং পতিতাবৃত্তির জন্য মেয়ে সরবরাহের অভিযোগ থেকে জোশিমকে খালাস দেওয়া হয়। এমনকি পকসো আইনের অধীনে অভিযোগও প্রমাণিত হয়নি, কারণ অভিযোগকারী পক্ষ মেয়ে দুটির বয়স প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়।বিশেষ সরকারি আইনজীবী যোগেন্দ্র পাতিল জানান, বিচার চলাকালীন ১২ জন সাক্ষীকে জেরা করা হয়েছে।
আদালত জোশিমকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধর্ষণের ধারায় দোষী সাব্যস্ত করলেও, পকসো আইনের অধীনে মুক্তি দিয়েছে। অন্যদিকে, মুর্শিদা এবং জানা রাবুলকে পাসপোর্ট আইন এবং বিদেশী নাগরিক আইন লঙ্ঘনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে বসবাসের প্রমাণ পাওয়া গেছে।আদালতের রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মামলায় জড়িত আরও পাঁচজন অভিযুক্তকে সম্পূর্ণ খালাস দেওয়া হয়েছে।
এদের বিরুদ্ধে অপহরণ, মানব পাচার, পকসো আইন লঙ্ঘন এবং দেহব্যবসার অভিযোগ ছিল। কিন্তু বিচারকের মতে, তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ “অত্যন্ত দুর্বল” এবং “অবিশ্বাস্য”। ফলে তারা সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।এই রায় মহারাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার কঠোরতার প্রতিফলন। থানে জেলা, যা মুম্বই মহানগরের অংশ হিসেবে পরিচিত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিবাসন, পাচার এবং যৌন নির্যাতনের মামলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশী নাগরিকদের অবৈধ প্রবেশ এবং স্থানীয় অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনা বেড়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, থানে এবং নবী মুম্বই এলাকায় বাংলাদেশী অভিবাসীদের একটি বড় অংশ শ্রমিক হিসেবে কাজ করে, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তারা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ছে।



