অযোধ্যায় ২৫ নভেম্বর নির্ধারিত রাম মন্দিরের (Ayodhya Ram Mandir) ঐতিহাসিক ধ্বজারোহণ অনুষ্ঠানের আগে পুরো শহর যেন রূপ নিয়েছে এক অটুট সুরক্ষাবলয়ের। সর্বত্র টহল, বাড়তি নজরদারি, ড্রোন পর্যবেক্ষণ—সব মিলিয়ে অযোধ্যা এখন কার্যত ‘ফোর্ট্রেস সিটি’। কারণ, রাম মন্দিরের ১৯১-ফুট চূড়ায় প্রথমবারের মতো যে ধ্বজা উত্তোলন হবে, সেখানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাম মন্দির ট্রাস্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রায় ৭,০০০ অতিথি অযোধ্যায় আসছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন দেশ-বিদেশের ভিভিআইপি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও শিল্পপতি, কাশি ও অযোধ্যার বৈদিক গবেষক, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধান, বিশেষভাবে আমন্ত্রিত ৮০ জন দাতা, যারা ট্রাস্টের অন্যতম প্রধান অবদানকারী এসব অতিথিদের বিশেষ নিরাপত্তা দিতে আলাদা প্রটোকল তৈরি হয়েছে।
২৫ নভেম্বরের ধ্বজারোহণের আগে পুরো শহর নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। প্রশাসনের তরফে মোট ১৫ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১ কোম্পানি বন্যা মোকাবিলা বাহিনী (SDRF), ৫ কোম্পানি RAF, ১৪ জন পুলিশ সুপার (SP), ৩০ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ASP), ৯০ জন সার্কেল অফিসার (CO)।
এছাড়াও ডগ স্কোয়াড, বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড, র্যাপিড রেসপন্স টিম, অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট থেকে শুরু করে প্রতিটি মোড়ে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধান সড়ক, রামপথ, বিমানবন্দর থেকে মন্দির এলাকায় হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনের আগে SPG ইতিমধ্যেই একাধিক রুট পর্যালোচনা করেছে। সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে নতুন ট্রাফিক ডাইভারশন পরিকল্পনা কার্যকর করা হয়েছে।
বাতিল হচ্ছে আগাম বুকিং—কারা থাকতে পারবেন?
রাম মন্দির থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে থাকা অতিথিশালা, হোমস্টে, আশ্রম এই তিন ধরনের আবাসনের সাধারণ পর্যটকদের সব বুকিং ২৪ ও ২৫ নভেম্বরের জন্য বাতিল করে দিয়েছে প্রশাসন। তবে যাঁরা আমন্ত্রিত, তাঁদের বুকিং বহাল থাকবে। অন্য পর্যটকদের জন্য আলাদা রুট ম্যাপ ও নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
শহরের রাস্তাঘাট, রামপথ, চৌরাস্তা এবং মন্দিরের চারপাশকে সাজানো হচ্ছে আলোকসজ্জা, ফুল, ধর্মীয় ব্যানার, রামায়ণ-ভিত্তিক অলঙ্করণে, শহরবাসীর মধ্যে উৎসবের আমেজ তুঙ্গে।, বৈদিক পণ্ডিতদের বিশেষ আয়োজন।
অনুষ্ঠানের আগে কাশি ও অযোধ্যার বৈদিক গবেষক ও পণ্ডিতরা মন্দির চত্বরে শুরু করেছেন বেদপাঠ, যজ্ঞ, রামরক্ষা স্তোত্র পাঠ, ধ্বজারোহণ সংক্রান্ত আচার। ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদী রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ করেছিলেন। তার প্রায় এক বছর পর চূড়ার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো ২৫ নভেম্বর মন্দিরের চূড়ায় ধ্বজা উত্তোলন হবে, যা অযোধ্যার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করবে।
