বিদেশের মাটিতে বারবার কেন ব্যর্থ মোদীর ‘গোপন’ মিশন?

নিউজ ডেস্ক: এক বার নয়,দু-বার নয়, বারবার বিদেশের মাটিতে মুখ পুড়ছে ভারতের।  ভারতীয় গুপ্তচর সন্দেহে চারজনকে দেশ থেকে তাড়াল অস্ট্রেলিয়া। বুধবার সেদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি…

Prime Minister Narendra Modi

নিউজ ডেস্ক: এক বার নয়,দু-বার নয়, বারবার বিদেশের মাটিতে মুখ পুড়ছে ভারতের।  ভারতীয় গুপ্তচর সন্দেহে চারজনকে দেশ থেকে তাড়াল অস্ট্রেলিয়া। বুধবার সেদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। ওই চারজন ব্যক্তিই অস্ট্রেলিয়ার ভারতীয় দূতাবাসে আধিকারিক হিসেবে কাজ করতেন। ওই প্রতিবেদনের দাবি, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের ওপর নজরদারি চালাচ্ছিল ওই চার আধিকারিক। যেটি সম্পূর্ণ অস্ট্রেলিয়ার আইনবিরুদ্ধ। জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় থাকা ভারতীয়দের মধ্যে বিশেষ করে শিখ সম্প্রদায়ই ছিল তাঁদের আঁতস কাচের নিচে।

শুধু তাই নয়, প্রতিবেদনের দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছিলেন ওই চার ভারতীয় আধিকারিক। তারা বিভিন্নভাবে সেদেশের পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক দলের নেতা, সামরিক ঘাঁটি ও একাধিক বিমানবন্দরের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করছিলেন। এই ‘সিস্টেম’ দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল রাজধানী ক্যানবেরা স্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে। কিন্তু হঠাত্ করেই নজরে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার গুপ্তচর সংস্থা অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরটি ইন্টেলিজেন্স অর্গানাইজেশনের। তাঁরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিস্তাবিত জানতে পারেন ওই চার আধিকারিক সম্পর্কে। তারপরই অস্ট্রেলিয়ার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার কারণে তাঁদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেয় সে দেশের সরকার। এবার সেই ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে কূটনৈতিক মহলে। এরফলে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ধাক্কা খাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

   

গত বছর খালিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপব সিং নিজ্জারকে কানাডার মাটিতে হত্যা করেছিল ভারতের গুপ্তচরেরা। এই ঘটনার জেরে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ফলে ভারত-কানাডার সম্পর্কে দেখা দিয়েছিল বিরাট ‘ফাটল’। আবার কিছুদিন আগে আমেরিকায় আরও এক খালিস্তানি নেতা পান্নুনকে হত্যার চেষ্টা করেছিল বলে ভারতকে কাঠগড়ায় তোলে মার্কিন প্রশাসন। সেই কারণেও অস্বস্তি বেড়েছিল ভারত-মার্কিন সম্পর্কে। ভারতের বিরুদ্ধে তাঁরা আন্তর্জাতিকস্তরে প্রতিবাদ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল হোয়াইট হাউজ। কিন্তু সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার অস্ট্রেলিয়ার এই অভিযোগ নিঃসন্দেহে উদ্বেগ বাড়াবে নয়াদিল্লির। কূটনৈতিকদের মত, এর প্রভাব পড়তে পারে কোয়াড গ্রুপেও। কারণ চিনকে মোকাবিলা করতে ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান মিলে এই গ্রুপটি তৈরি করেছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে ভারত যেভাবে আমেরিকা,কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের আভ্যন্তরে নাক গলিয়েছে তাতে মোটেও খুশি নয় এই পশ্চিমী দেশগুলি।

অতীতে মনমোহন সিং কিংবা বাজপেয়ীর আমলেও এমন কোনও অনভিপ্রেত ঘটনার কথা প্রকাশ পায়নি। কোনও বিদেশি রাষ্ট্র এভাবে আঙুল তোলার সাহস পায়নি নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে। তাহলে কেন এখন ঘনঘন এমনটা হচ্ছে? কেন গোপনীয়তা বজায় রেখে এই কাজ করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে ভারত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে বিদেশের মাটিতে মোদী সরকারের কূটনৈতিক সামর্থ্য নিয়েও।