‘মোদী সরকার গরিব বিরোধী তা স্পষ্ট’, বিবৃতি অতসীর

দিল্লি বিধানসভার বিরোধী দলনেত্রী এবং আম আদমি পার্টির (আপ) সিনিয়র নেত্রী অতসী (atishee) বুধবার কালকাজি এলাকার ভূমিহীন ক্যাম্পে চালানো বস্তি ভাঙার অভিযানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ…

atishee alleges rekha gupta

দিল্লি বিধানসভার বিরোধী দলনেত্রী এবং আম আদমি পার্টির (আপ) সিনিয়র নেত্রী অতসী (atishee) বুধবার কালকাজি এলাকার ভূমিহীন ক্যাম্পে চালানো বস্তি ভাঙার অভিযানের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করে বিজেপিকে ‘গরিব বিরোধী’ দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

অতসী প্রশ্ন তুলেছেন (atishee)

অতসী (atishee) প্রশ্ন তুলেছেন, এই ভাঙার নির্দেশ কে আদালতে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, “এটা স্পষ্ট যে বিজেপি একটি ‘গরিব বিরোধী’ দল। তিন দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা বলেছিলেন, একটিও বস্তি ভাঙা হবে না। কিন্তু আজ ভোর ৫টা থেকে বুলডোজার চলছে, মানুষকে তাদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করা হচ্ছে, লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে।

   

রেখা গুপ্তা দাবি করছেন, এটি আদালতের নির্দেশ। কিন্তু কে গিয়েছিল আদালতে? এটা বিজেপির দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ডিডিএ) এবং তাদের দলই এই নির্দেশ নিয়ে এসেছে। এই গরিব মানুষেরা আদালতে গিয়েছিল, কিন্তু বিজেপি এবং ডিডিএ তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলেছে, তাদের বাড়ি দেওয়া হবে না এবং আদালতকে ভাঙার অনুমোদন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।”

ইতিহাসের খাতায় নাম লেখাতে পারবেন গিল? ইংল্যান্ড সফরে ভারতের ভরসা তরুণ ব্রিগেড

বস্তি ভাঙার পটভূমি

দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (ডিডিএ) সোমবার দক্ষিণ দিল্লির কালকাজি এক্সটেনশনের ভূমিহীন ক্যাম্পের বাসিন্দাদের একটি সরকারি নোটিশ জারি করে, যাতে অবৈধ ঝুপড়ি ভাঙার জন্য তাদের তিন দিনের মধ্যে (৮, ৯ এবং ১০ জুন) বাড়ি খালি করতে বলা হয়। এই নির্দেশ এসেছে দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় বাড়ি খালি না করলে কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক ভাঙার পদক্ষেপ নেবে। এছাড়া, ভাঙার সময় ঝুপড়িতে থাকা কোনো ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি বা হানির জন্য ডিডিএ দায়ী থাকবে না। ডিডিএ শান্তি বজায় রাখতে এবং প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বাসিন্দাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।

অতসীর প্রতিবাদ ও গ্রেফতার

মঙ্গলবার, কালকাজি এলাকার আপ বিধায়ক অতসী  প্রতিবাদে নামেন(atishee)। তিনি বস্তিবাসীদের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হন। প্রতিবাদের সময় অতিশি বিজেপি এবং মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “বিজেপি আগামীকাল এই ঝুপড়িগুলো ভেঙে ফেলবে, আর আমাকে আজ জেলে পাঠানো হচ্ছে কারণ আমি এই বস্তিবাসীদের জন্য কথা বলছি। বিজেপি এবং রেখা গুপ্তাকে বস্তিবাসীদের অভিশাপ লাগবে। বিজেপি আর কখনো ফিরে আসবে না।”

Advertisements

অতসীর (atishee) গ্রেফতারের পর এএপি নেতা এবং জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে লেখেন, “তারা মাত্র তিন মাসে দিল্লিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।” কেজরিওয়ালের এই মন্তব্য বিজেপি শাসনের সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যারা গত তিন মাসে দিল্লির পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

রাজনৈতিক বিতর্ক

অতসীর (atishee) প্রতিবাদ এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তার অভিযোগ রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও তীব্র করেছে। এএপি দাবি করছে, বিজেপি গরিব বস্তিবাসীদের বিরুদ্ধে কাজ করছে এবং তাদের বাড়িঘর ভেঙে তাদের উচ্ছেদ করছে। অন্যদিকে, বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, ভাঙার নির্দেশ হাইকোর্টের, এবং তারা কেবল আদালতের নির্দেশ পালন করছে। তবে অতসী প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ডিডিএ বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা না করে আদালতে ভাঙার পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের বিষয়টি এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে। ভূমিহীন ক্যাম্পের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বসবাস করে আসছেন, এবং তাদের মধ্যে অনেকেই দাবি করছেন, তাদের বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা অন্যায়। অতসী (atishee) বলেন, “এই মানুষেরা গরিব, তাদের বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে, কিন্তু তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বিজেপি তাদের কোনো বিকল্প দেয়নি।”

সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব

এই ঘটনা দিল্লির রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এএপি এই ইস্যুটিকে গরিব মানুষের পক্ষে তাদের অবস্থান জোরদার করতে ব্যবহার করছে। অতসী এবং কেজরিওয়ালের মতো নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে জনমত গঠনের চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, বিজেপি দাবি করছে, তারা আইনের শাসন মেনে চলছে এবং অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

বস্তি ভাঙার এই ঘটনা শুধু কালকাজি এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। দিল্লির বিভিন্ন অংশে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার প্রক্রিয়া চলছে, যা বস্তিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনাগুলো গরিব মানুষের পুনর্বাসন এবং নগর উন্নয়ন নীতির উপর নতুন করে আলোচনার সূচনা করেছে।

কালকাজির ভূমিহীন ক্যাম্পে বস্তি ভাঙার ঘটনা দিল্লির রাজনীতি এবং সমাজে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। অতসী (atishee) এবং আপ এই ইস্যুকে গরিব মানুষের অধিকারের লড়াই হিসেবে তুলে ধরছে, যখন বিজেপি আদালতের নির্দেশের কথা বলে নিজেদের পক্ষে যুক্তি দিচ্ছে। তবে, এই বিতর্কের মূলে রয়েছে বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের প্রশ্ন। আগামী দিনে এই ইস্যু কীভাবে সমাধান হয় এবং দিল্লির রাজনীতিতে এর প্রভাব কী হয়, তা দেখার বিষয়।