মণিপুরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে আসাম রাইফেলসের ধারাবাহিক অভিযানে বড় ধরনের সাফল্য মিলেছে। সেপ্টেম্বরের ২৮ ও ২৯ তারিখে ইমফল ইস্ট ও ইমফল ওয়েস্ট জেলা থেকে কেসিপি (মাওবাদী/সিটি মেইতেই) সংগঠনের তিন সক্রিয় জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি অক্টোবরের ১ ও ৪ তারিখে পরিচালিত অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
আসাম রাইফেলসের তরফে জারি করা এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ২৮ সেপ্টেম্বর ইমফল ওয়েস্ট জেলার ফেইয়াং এলাকা থেকে কেসিপি (সিটি মেইতেই) সংগঠনের এক জঙ্গিকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় একটি ডাবল ব্যারেল বন্দুক ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়।
এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর ইমফল ইস্ট জেলার স্বামবুং এলাকা থেকে কেসিপি (মাওবাদী) সংগঠনের এক সক্রিয় সদস্যকে এবং একই দিনে ইমফল ওয়েস্ট জেলার উরিপোক এলাকা থেকে কেসিপি (সিটি মেইতেই) সংগঠনের আরেকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
ইমফল ওয়েস্ট থেকে অস্ত্র উদ্ধারে চাঞ্চল্য:
১ অক্টোবর আসাম রাইফেলস আলাদা এক অভিযানে ইমফল ওয়েস্ট জেলার খোঙ্গামপাত এলাকায় অস্ত্রভাণ্ডার উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলির মধ্যে ছিল একটি .৩০৩ স্নাইপার রাইফেল টেলিস্কোপসহ, দুটি সিঙ্গেল ব্যারেল রাইফেল, একটি ৯ মিমি পিস্তল, একটি .৩২ পিস্তল, তিনটি ‘পম্পি’ লং রেঞ্জ গান, বিপুল পরিমাণ গুলি এবং অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র।
বহু জেলা জুড়ে যৌথ অভিযান:
৪ অক্টোবর প্রাপ্ত একাধিক গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আসাম রাইফেলস, মণিপুর পুলিশ ও মণিপুর কমান্ডো বাহিনী যৌথভাবে তামেংলং, ইমফল ওয়েস্ট এবং নোনেই জেলায় একযোগে অভিযান চালায়। নিউ নামতিরাম (তামেংলং), সেকমাই (ইমফল ওয়েস্ট) ও কোতজিম (কেএপিআই জেলা) এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ২৫টি অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলির মধ্যে রয়েছে— দুটি ৯ মিমি সিএমজি (একটি লুট করা), একটি .৩০৩ রাইফেল (লুট করা), একটি জার্মান নির্মিত এইচকে জি৩ রাইফেল, একটি ইতালীয় ৯ মিমি পিস্তল, তিনটি মার্কিন নির্মিত .৩২ ক্যালিবার পিস্তল, নয়টি বোল্ট অ্যাকশন রাইফেল, দুটি ‘পুল মেকানিজম’ রাইফেল, তিনটি দেশীয় তৈরি সিঙ্গেল ব্যারেল রাইফেল, দুটি ইম্প্রোভাইজড মর্টার (পম্পি), একটি টিউব লঞ্চার এবং বিপুল পরিমাণ গুলি ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম।
তদন্তের জন্য পুলিশের হাতে হস্তান্তর:
গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের ও উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও সরঞ্জাম মণিপুর পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের মতে, এই ধারাবাহিক অভিযান আসাম রাইফেলস ও রাজ্য পুলিশের মধ্যে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাফল্যের প্রতীক। মণিপুরে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযান আগামী দিনেও জারি থাকবে বলে সূত্রের খবর।