দূরপাল্লার যাত্রায় এবার নতুন ধরণের ব্ল্যাঙ্কেট কভার! ঘোষণা রেল মন্ত্রীর

ashwini-vaishnaw-railway-blanket-cover-initiative

নয়াদিল্লি: ভারতীয় রেল এবার যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এবার থেকে দীর্ঘপথের ট্রেনযাত্রায় যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া হবে নতুনভাবে প্রস্তুত করা কাঁথার কভার (Blanket Cover)। বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “আজ যে পদক্ষেপটি নেওয়া হচ্ছে, এটি সম্পূর্ণরূপে যাত্রীকেন্দ্রিক পরিবর্তন। আমাদের লক্ষ্য হল প্রতিটি যাত্রীর আরাম, স্বাস্থ্যবিধি ও সন্তুষ্টি নিশ্চিত করা।”

Advertisements

রেলমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর থেকেই যাত্রীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই যাত্রীরা অভিযোগ করছিলেন, ট্রেনে ব্যবহৃত কম্বল ও বালিশ যথাযথভাবে পরিষ্কার রাখা হয় না। করোনা পরবর্তী সময়ে ট্রেনে কম্বল পরিষেবা বন্ধও করা হয়েছিল। তবে এখন আবার নতুন রূপে ও উন্নত মানে ফিরে আসছে এই পরিষেবা।

ভারতীয় সেনার রাতের লক্ষ্যবস্তু হবে নির্ভুল, আমেরিকান কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত

রেল মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম ধাপে রাজধানী এক্সপ্রেস, দুরন্ত এক্সপ্রেস, শতাব্দী ও বন্দে ভারত ট্রেনগুলোতে এই নতুন কাঁথার কভার পরিষেবা চালু করা হবে। পরে ধাপে ধাপে দেশের অন্যান্য দূরপাল্লার ট্রেনেও তা কার্যকর হবে। কভারগুলো সম্পূর্ণভাবে হাইজেনিক, ধোয়া যায় এমন এবং পুনঃব্যবহারযোগ্য উপকরণে তৈরি করা হচ্ছে। রেলের দাবি, এতে যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাও চালু হবে।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “রেল শুধু পরিবহণের মাধ্যম নয়, এটি কোটি কোটি ভারতবাসীর দৈনন্দিন জীবনের অংশ। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্যবিধি এবং যাত্রী সন্তুষ্টি আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এই কাঁথা-কভার ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা প্রতিটি যাত্রাকে আরও আরামদায়ক ও নিরাপদ করতে চাই।”

অন্যদিকে, রেলওয়ে বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে যে নতুন কভারগুলো রেলওয়ের নিজস্ব মেকানিক্যাল লন্ড্রি ইউনিটে ধোয়া ও জীবাণুমুক্ত করা হবে। প্রতিটি কভার ব্যবহারের পর যথাযথভাবে পরীক্ষা করা হবে, যাতে পরবর্তী যাত্রী সেটি পরিষ্কার অবস্থায় পান। এছাড়া কভারগুলোর রঙ ও ডিজাইনেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে—যাতে দেখতে আকর্ষণীয় হয় এবং রেলওয়ের নতুন ব্র্যান্ডিং প্রতিফলিত হয়।

Advertisements

যাত্রী সংগঠনগুলিও রেলমন্ত্রকের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। সর্বভারতীয় যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বলেন, “যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বদলে দিতে পারে এই উদ্যোগ। অনেক সময় রাতে যাত্রার সময় কাঁথার অবস্থা নিয়ে যাত্রীদের অসন্তোষ তৈরি হত।

এবার সেই সমস্যার অবসান ঘটবে।” বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত রেলের ‘প্যাসেঞ্জার-সেন্ট্রিক সার্ভিস রিভাইভাল’-এর একটি বড় অংশ। কোভিডের পর যেভাবে ভারতীয় রেল নতুন প্রযুক্তি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ডিজিটাল টিকিটিং ব্যবস্থায় গুরুত্ব দিয়েছে, এবার সেই ধারাবাহিকতায় যাত্রীদের আরাম ও স্বাস্থ্যবিধির দিকেও সমান নজর দিচ্ছে।

রেলমন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে, যাত্রীদের ফিডব্যাক বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে—৬৮% যাত্রী দীর্ঘপথের ট্রেনে পরিচ্ছন্নতা ও বেডরোল মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তাই এই নতুন ব্যবস্থাকে যাত্রী সন্তুষ্টি বৃদ্ধির অন্যতম মাইলফলক বলে মনে করছে মন্ত্রক।

রেলের দাবি, এটি কেবলমাত্র একটি নতুন পরিষেবা নয়, বরং রেলের ভাবমূর্তি উন্নয়নেরও প্রতীক। যাত্রীসেবা ও আধুনিকীকরণের এই যুগল প্রয়াস ভারতীয় রেলকে আগামী দিনে আরও যাত্রীবান্ধব করে তুলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।