দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন ফলপ্রকাশের ২৪ ঘণ্টা আগে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) । তিনি দাবি করেছেন, বিজেপি তাদের ১৬ জন আম আদমি পার্টি (আপ) প্রার্থীকে ১৫ কোটি টাকা দিয়ে কেনার চেষ্টা করেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি পাল্টা আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দিল্লির রাজনৈতিক মহলে এই অভিযোগের ফলে তোলপাড় শুরু হয়েছে, এবং নির্বাচনী ফলাফল ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) তাঁর অভিযোগে বলেন, গত দু’ঘণ্টার মধ্যে আপ দলের ১৬ জন প্রার্থীর কাছে ফোন এসেছে। ফোনে বলা হয়েছে, যদি তারা আপ ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন, তবে তাদের মন্ত্রিত্ব দেওয়া হবে এবং ১৫ কোটি টাকা প্রলোভনও দেওয়া হচ্ছে। কেজরিওয়াল এই ঘটনাকে বিজেপির একটি গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “আমাদের দলের কোনো প্রার্থীই মাথা নত করবেন না।”
এদিকে, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকেই বুথফেরত সমীক্ষাগুলির রিপোর্টে বিজেপির পক্ষেই পাল্লা ভারী দেখা যাচ্ছে। বেশ কিছু সমীক্ষার রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিজেপি ৫৫টি আসন পেতে পারে। এসব রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই দিল্লির রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কেজরিওয়াল এই সমীক্ষাগুলিকে ভুয়ো বলে দাবি করেছেন এবং বলেছেন, এসব রিপোর্ট শুধুমাত্র প্রার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ছড়ানো হচ্ছে।
এছাড়া, দিল্লির মন্ত্রী মুকেশ আহলওয়াট এবং সুলতানপুর মাজরার প্রার্থীও কেজরিওয়ালের সুরে সুর মিলিয়ে একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন। মুকেশ আহলওয়াট জানিয়েছেন, তাঁকেও ফোন করে ১৫ কোটি টাকা ও মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি জানিয়েছেন, “কেজরিওয়াল ও আপ আমাকে যে সম্মান দিয়েছে, আমি কখনোই সেটি ত্যাগ করব না।” এই মন্তব্যটি দিল্লির রাজনৈতিক পরিবেশে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
বিজেপির পক্ষ থেকে এ সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব বলেছেন, “সঞ্জয় সিংকেও তার অভিযোগ তুলে নিতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে, অন্যথায় আইনি পদক্ষেপের জন্য আমরা প্রস্তুত।” তিনি আরও জানিয়েছেন, কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একটি মানহানির মামলা দায়ের হয়েছে, এবং তিনি এই বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন।
এখন প্রশ্ন উঠছে, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে বদলাবে। কেজরিওয়াল যে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন, তা যদি সত্যি হয়, তাহলে দিল্লির রাজনীতি এক নতুন মোড় নিতে পারে। বিজেপির পক্ষ থেকে এসব অভিযোগের অস্বীকৃতি, এবং কেজরিওয়াল ও অন্যান্য আপ নেতাদের বক্তব্য, সব মিলিয়ে দিল্লির রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন আরো জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, সময়ই বলে দেবে এই অভিযোগের সত্যতা কেমন এবং নির্বাচনের পর কী ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।