দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির (আপ) ভরাডুবির পর দলের প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল মানুষের রায় মেনে নেয়ার ঘোষণা করেছেন। বিজেপিকে অভিনন্দন জানিয়ে কেজরী বলেছেন, ‘‘যে আশা নিয়ে মানুষ ওদের ভোট দিয়েছে, আশা করি তারা তা পূর্ণ করবে।’’
সোমবার, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর কেজরী তাঁর দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে এক ভিডিয়ো বার্তা দেন। যেখানে তিনি বলেন, ‘‘দিল্লির জনগণের রায় আমরা মাথা পেতে নিচ্ছি। বিজেপিকে অভিনন্দন জানাই, তারা জয়ী হয়েছে। জনগণের যে আশা, বিশ্বাস নিয়ে ভোট দেওয়া হয়েছে, আশা করি তারা তা পূর্ণ করবে।’’
কেজরী আরও বলেন, ‘‘গত ১০ বছরে আমরা দিল্লিতে অনেক কাজ করেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। আমরা দিল্লির পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছি। যদিও আমাদের ফলাফল ভালো হয়নি, তবুও আমরা গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজনীতি আমাদের কাছে কখনোই লাভের উদ্দেশ্য ছিল না। আমাদের লক্ষ্য ছিল মানুষের জন্য কাজ করা। এবারও আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যাব। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াব এবং তাদের সুখে-দুঃখে সহায়তা করব।’’
কেজরী তার দলের কর্মীদেরও কুর্নিশ জানিয়েছেন, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য আপ এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। ‘‘আমাদের দলের সকল কর্মীকে অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ জানাই, কারণ তারা নির্বাচনের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন।’’
এদিন কেজরীওয়াল তার বক্তব্যে দলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আজ নির্বাচনে হারলেও আমরা আমাদের মূল উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হব না। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাব। আমাদের লক্ষ্য একটাই, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সমস্যা সমাধান করা।’’
এদিকে, ২০১৩ সালে দিল্লিতে প্রথম ক্ষমতায় এসেছিল কেজরীর দল। তার পর ২০১৫ ও ২০২০ সালে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন কেজরী। তবে এবারের নির্বাচনে বিজেপির বিপরীতে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে আপের। কেজরীকে আবারও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখে আশা করেছিলেন অনেকেই, কিন্তু নির্বাচনে পরাজয়ের পর তার পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়া এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, কেজরীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২০২৪ সালের আবগারি দুর্নীতি মামলায়। দীর্ঘ সময় জেলে থাকার পর, আদালতের নির্দেশে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়েন। তখন আতিশী মার্লেনা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হন। এবার কেজরী আবার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আশায় ছিলেন, কিন্তু ভোটের ফলাফল তা সম্ভব করে না।