দেশের পূর্ব সীমান্তে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ভারতীয় সেনার

arunachal-drone-strike-nscn-k-ya-insurgents-killed-india-myanmar-border

গুয়াহাটি, ২১ অক্টোবর ২০২৫: উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশের ঘন জঙ্গলে আবারও শুরু হয়েছে গর্জন। ভারতের পূর্ব সীমান্তে ঘটে গেছে এক নির্ভুল ও পরিকল্পিত ড্রোন হামলা, যার লক্ষ্য ছিল মায়ানমার-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন NSCN-K (YA)-র ক্যাম্প। সূত্রের খবর, এই হামলায় অন্তত পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন ছিল সংগঠনের এক শীর্ষ নেতার দেহরক্ষী। ওই নেতা গুরুতর আহত অবস্থায় কোনওভাবে পালাতে সক্ষম হন।

Advertisements

নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামলাটি অত্যন্ত প্রেসিশন-গাইডেড ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় উচ্চপর্যায়ের গোয়েন্দা ইনপুট ও আধুনিক নজরদারি প্রযুক্তির ব্যবহার। যদিও ভারতীয় সেনা বা অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযানে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি, তবে গোটা ঘটনাটি ছিল “অত্যন্ত সমন্বিত” এবং “পূর্বনির্ধারিত সামরিক পদক্ষেপ” বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দীপাবলির ট্রেডিংয়ে বাজারে অস্থিরতা, সেনসেক্স ও নিফটিতে সীমিত উত্থান

এই হামলা ঘটে ঠিক সেই সময়, যখন অরুণাচল প্রদেশের চাংলাং জেলার মানমাও অঞ্চলে ১৬ অক্টোবর ভোরে অসম রাইফেলসের একটি কোম্পানি অপারেটিং বেসে জঙ্গিরা অতর্কিতে হামলা চালায়। সেই হামলায় দুই জওয়ান আহত হন। পরে NSCN-K (YA) এবং ULFA-Independent (ULFA-I) যৌথভাবে দায় স্বীকার করে। এরপর থেকেই গোটা সীমান্ত এলাকায় জোরদার তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, হামলার পর অনেক জঙ্গি সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমারের জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। ঠিক তার পরপরই এই ড্রোন স্ট্রাইক সংঘটিত হয়, যা স্পষ্টতই ছিল প্রতিশোধমূলক ও কৌশলগত পদক্ষেপ।

Advertisements

নিরাপত্তা মহলের মতে, চাংলাং জেলা বরাবরই ভারত-মায়ানমার সীমান্তের সবচেয়ে সংবেদনশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এখানে রয়েছে বিস্তৃত জঙ্গল, দুর্গম পাহাড়ি পথ এবং প্রায় অরক্ষিত সীমান্ত। এই ভূখণ্ডের সুবিধা নিয়েই বহু বছর ধরে NSCN-K (YA) ও ULFA-I এর মতো উগ্রপন্থী সংগঠনগুলি গোপন ঘাঁটি তৈরি করে আসছে।

২০২৫ সালের জুলাই মাসেও অনুরূপ ড্রোন হামলা হয়, যেখানে ULFA-I নিজেদের তিন সদস্যের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছিল। এবারকার আঘাত আরও শক্তিশালী এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত। এটি শুধু সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদারই নয়, ভারতের সামরিক গোয়েন্দা সক্ষমতার নতুন অধ্যায়ও তুলে ধরেছে।

অরুণাচল ও আসাম সীমান্তে ULFA-I এবং NSCN-K (YA)-এর যৌথ কার্যকলাপ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ড্রোন-নির্ভর এই ধরনের সার্জিক্যাল অপারেশন ভবিষ্যতে উত্তর-পূর্বে জঙ্গি দমনে গেমচেঞ্জার হতে পারে।স্থানীয় প্রশাসন ও সেনা সূত্র জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় এখন হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ও নজরদারি চালানো হচ্ছে যাতে কোনো জঙ্গি আবার অনুপ্রবেশ করতে না পারে।