রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ না থামালে মানচিত্র থেকে মুছে যাবে পাকিস্তান: সেনাপ্রধান

ভারত–পাক সম্পর্কের টানাপোড়েনের আবহে ফের বিস্ফোরক সতর্কবাণী শোনালেন সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। শুক্রবার রাজস্থানে এক সামরিক অনুষ্ঠানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাষ্ট্রীয়…

Army Chief Pakistan Warning

ভারত–পাক সম্পর্কের টানাপোড়েনের আবহে ফের বিস্ফোরক সতর্কবাণী শোনালেন সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। শুক্রবার রাজস্থানে এক সামরিক অনুষ্ঠানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে গেলে পাকিস্তানকে তার “ইতিহাস ও ভূগোলের অস্তিত্ব নিয়ে ভাবতে হবে”।

Advertisements

জেনারেল দ্বিবেদীর মন্তব্যে প্রতিধ্বনিত হল কড়া বার্তা, “অপারেশন সিঁদুর ১.০ চলাকালীন আমরা সংযম দেখিয়েছিলাম। কিন্তু এবার যদি আবার উসকানি আসে, তাহলে সংযম নয়, বরং আরও এক ধাপ এগিয়ে পাল্টা আঘাত হানব।”

   

তিনি সেনাদের উদ্দেশে কার্যত যুদ্ধসঙ্কেত দিয়ে বলেন, “সতর্ক থাকুন। ঈশ্বর ইচ্ছা করলে খুব শিগগিরই আরও একবার আপনাদের সেই সুযোগ আসবে। জয় হিন্দ।”

অপারেশন সিঁদুর: পাকিস্তান কেঁপেছিল মে মাসে

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৭ মে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হওয়ার জবাবেই ভারত চালায় অপারেশন সিঁদুর। সেই অভিযানে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে ৯টি জঙ্গি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করে, নিহত হয় ১০০-রও বেশি জঙ্গি। সঙ্গেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় একাধিক সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি।

পাল্টা পাকিস্তান ড্রোন ও মিসাইল হামলার চেষ্টা চালালেও ভারতীয় বাহিনী সেই আঘাত প্রতিহত করে। দেশের সামরিক ও বেসামরিক কোনও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। পরিস্থিতির চাপে শেষ পর্যন্ত ১০ মে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের নির্দেশে ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (DGMO) ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করে।

যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, এই সংঘাত মেটাতে তিনি নাকি ‘মধ্যস্থতা’ করেছিলেন। ভারত অবশ্য তা সরাসরি অস্বীকার করেছে—“তৃতীয় পক্ষের কোনও ভূমিকা ছিল না।”

আকাশপথে ‘সবচেয়ে দীর্ঘ কিল’ Army Chief Pakistan Warning

এদিন সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারির কয়েক ঘণ্টা আগেই এয়ার ফোর্স ডে উপলক্ষে বড়সড় প্রকাশ্যে আসেন বায়ুসেনা প্রধান এপি সিং। তাঁর দাবি, মে মাসের সংঘর্ষে ভারতীয় বায়ুসেনা ৮–১০টি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে, যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন এফ–১৬ এবং চিনা জেএফ–১৭।

পাকিস্তানের দাবি যে সাতটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে, তা তিনি কটাক্ষ করে “মনোহর কাহানিয়ান” বলে উড়িয়ে দেন।

এপি সিং জানান, পাকিস্তানের ভেতরে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানা হয়েছিল, যা ভারতীয় বায়ুসেনার ইতিহাসে “সবচেয়ে দীর্ঘ কিল” হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।

রাজনৈতিক তাৎপর্য

সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি এবং বায়ুসেনা প্রধানের বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ, দুটিই একই দিনে পাকিস্তানের প্রতি ভারতের বার্তা আরও স্পষ্ট করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, “অপারেশন সিঁদুর শেষ হয়নি, প্রয়োজনে আরও ভয়াবহ আঘাত আসবে।”

প্রতিরক্ষা মহলের মতে, ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনার এই শক্তিশালী বার্তা শুধু সীমান্তেই নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়াবে।