বিহার বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে রাজ্যের রাজনৈতিক আবহ এখন উত্তাল। এই উত্তাপের মাঝেই রাজনৈতিক কৌশলবিদ থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে বিজেপি নেতাদের কটাক্ষ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সম্প্রতি পাটনায় প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur) তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন জন সুরাজ পার্টির প্রধান প্রশান্ত কিশোরকে (Prashant Kishor) । তিনি বলেন, “জেনারেল তো যুদ্ধের আগেই পালালেন! তাহলে সেনাবাহিনী কী করবে?”
এই মন্তব্য সরাসরি নিশানা করেছে প্রশান্ত কিশোরের সেই সিদ্ধান্তকে, যেখানে তিনি ঘোষণা করেন যে তিনি আসন্ন বিহার নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। এক সাক্ষাৎকারে কিশোর বলেন, “জন সুরাজ দলের সিদ্ধান্ত, আমি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে সংগঠনকে মজবুত করার দিকে মন দেব।”
এই ঘোষণার পরপরই বিজেপি একের পর এক কটাক্ষ করতে থাকে কিশোরকে। অনুরাগ ঠাকুর বলেন, “যিনি নিজে ভোটে দাঁড়াতে ভয় পান, তিনি কেমন নেতৃত্ব দেবেন? এটা পরিষ্কার যে তিনি বুঝে গেছেন।”
বিজেপি মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়াল্লা বলেন, “প্রশান্ত কিশোর একজন চতুর ব্যবসায়ী। তিনি জানেন এই নির্বাচনে হারলে তাঁর ‘বিজনেস মডেল’—মানে তাঁর রাজনৈতিক কৌশল বিক্রির ক্ষমতা—একেবারে ভেঙে পড়বে। তাই তিনি লড়াইয়ে নামতেই সাহস পাননি।”
প্রশান্ত কিশোর অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি দাবি করেন, “বিহারে এনডিএ সরকারের দিন ফুরিয়ে এসেছে। নীতীশ কুমারের জেডিইউ ২৫টির বেশি আসন পাবে না। এনডিএ ক্ষমতায় ফিরবে না।” তিনি আরও বলেন, “জন সুরাজের লক্ষ্য ১৫০-এর কম কিছু না। এর চেয়ে কম হলে আমরা নিজেদের ব্যর্থ বলে মনে করব।”
তবে প্রশ্ন উঠছে, যে ব্যক্তি নিজে ভোটে দাঁড়ালেন না, তিনি কিভাবে এত বড় লক্ষ্য স্থির করছেন? এই প্রশ্নই তুলে দিয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, “লোক দেখানো প্রচারণা ও বড় বড় কথা বলার মাধ্যমে রাজনৈতিক মাঠে আসা যায় না। জনগণ নেতার সাহস ও দায়বদ্ধতা দেখে ভোট দেয়।”
অন্যদিকে, অনুরাগ ঠাকুরের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, কেন বিজেপির ১০১ জন প্রার্থীর মধ্যে একজন মুসলিমও নেই? উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা ধর্ম বা জাতির ভিত্তিতে নয়, জয়ী হওয়ার ক্ষমতার ভিত্তিতে টিকিট দিই। আমাদের মূল মন্ত্র ‘সবার সঙ্গে, সবার উন্নয়ন’। তাই আমরা সুবিধা দিই কাজের ভিত্তিতে, পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়।”