নয়াদিল্লি: ভারতের ভাষাগত ঐতিহ্য রক্ষায় নতুন দাবি উত্থাপন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সম্প্রতি এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, দেশীয় ভাষাগুলোই ভারতের সাংস্কৃতিক সম্পদ এবং এগুলোকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাঁর কথায়, “এই দেশে যারা ইংরেজি বলবে, তারা শিগগিরই লজ্জিত বোধ করবে। এমন সমাজ গঠনের পথ বেশি দূরে নয়।”
বিদেশি ভাষায় দেশীয় সংস্কৃতি বোঝা সম্ভব নয়
অমিত শাহ আরও বলেন, বিদেশি ভাষা দিয়ে আমাদের দেশ, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ধর্ম বোঝা সম্ভব নয়। তিনি বিশ্বাস করেন, ভারতীয় সমাজ এই ভাষা যুদ্ধে জয়ী হবে এবং আমরা গর্বের সঙ্গে আমাদের দেশ চালাব আমাদের ভাষায়, পাশাপাশি বিশ্বকেও নেতৃত্ব দেব।
এদিন মন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে, ইংরেজিকে তিনি ‘ঔপনিবেশিক দাসত্বের প্রতীক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বিশ্বব্যাপী এর গ্রহণযোগ্যতা কমবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারতীয় ভাষার পুনরুদ্ধারের জন্য কঠোর প্রচেষ্টার আহ্বান জানান তিনি।
ভাষা বিতর্ক ও হিন্দি চাপানোর অভিযোগ Amit Shah Language Policy
অমিত শাহের এই মন্তব্য সেই সময় এলো, যখন দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি রাজ্য ও বিরোধী দল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘হিন্দি চাপানোর’ অভিযোগ তুলছে। নতুন শিক্ষা নীতি (NEP) এর তিন-ভাষা নীতি নিয়ে বিশেষ করে তামিলনাড়ু সরকার সরব হয়েছে, তারা বলছে, শিক্ষার উন্নতির পেছনে নয়, হিন্দি ভাষা চাপানোর পরিকল্পনা চলছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যও কেন্দ্রকে এই ইস্যুতে তীব্র সমালোচনা করেছে।
এর আগে এই বছরই অমিত শাহ ঘোষণা করেছিলেন, ডিসেম্বর থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যোগাযোগ রাজ্যগুলোর মাতৃভাষায় করা হবে। তিনি ভাষার নামে বিভাজনকে শেষ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশের মানুষ যেন আর ভাষার ভেদাভেদে বিভক্ত না হয়।
সংক্ষেপে, অমিত শাহের এই বক্তব্য দেশের ভাষা সংক্রান্ত বিতর্ককে নতুন করে জ্বালিয়ে দিয়েছে। একদিকে ভাষাগত ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, অন্যদিকে ‘হিন্দি চাপানো’ ইস্যু তুমুল রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। এই মূহুর্তে ভারতের ভাষা রাজনীতিতে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে, যার প্রভাব আগামী দিনের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরেও পড়তে পারে।