কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সহযোগিতা মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ (Amit Shah) আজ নয়াদিল্লিতে দুই দিনব্যাপী জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল সম্মেলন-২০২৫ উদ্বোধন করেছেন। এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান খুঁজে বের করা এবং রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (CAPF) এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ সংস্থাগুলির (CPO) শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন করা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতি অনুযায়ী, এই সম্মেলনে সারা দেশ থেকে ৭৫০ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞরা শারীরিক ও ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশগ্রহণ করছেন। এই সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার দৃষ্টিভঙ্গির অংশ হিসেবে আয়োজিত হয়েছে।
সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব
জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল সম্মেলন-২০২৫-এর মূল লক্ষ্য হলো সাইবার নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ, সীমান্ত নিরাপত্তা, বামপন্থী উগ্রবাদ এবং মাদক পাচারের মতো জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উদ্ভূত নতুন চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান খুঁজে বের করা।
এই সম্মেলন শীর্ষ পুলিশ নেতৃত্ব, তরুণ পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম প্রদান করে, যেখানে আধুনিক প্রযুক্তি এবং মানব গোয়েন্দা তথ্যের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হয়।
অমিত শাহ এই সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত করে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে।”
ডিজিপি/আইজিপি সম্মেলনের সুপারিশ ড্যাশবোর্ড
এই সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অমিত শাহ জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরো (এনসিআরবি) দ্বারা তৈরি ডিজিপি/আইজিপি সম্মেলনের সুপারিশ ড্যাশবোর্ড উদ্বোধন করেন। এই ড্যাশবোর্ডটি প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ডিজিপি/আইজিপি সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
এই ড্যাশবোর্ড নিরাপত্তা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং তাদের কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য একটি কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। গৃহ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, এই উদ্যোগ জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
অমিত শাহের ভূমিকা ও নিরাপত্তা কৌশল
অমিত শাহ, যিনি ২০১৯ সাল থেকে কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বামপন্থী উগ্রবাদ প্রভাবিত এলাকাগুলিতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় বড় সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
তিনি ত্রিপুরায় বিদ্রোহ দমনে এবং বোডোল্যান্ডে শান্তি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এছাড়াও, তিনি ব্রু-রিয়াং উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করেছেন, যা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য একটি বড় অর্জন। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “অমিত শাহের নেতৃত্বে গৃহ মন্ত্রণালয় জাতীয় নিরাপত্তায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।”
ডার্বি মাথায় রেখে সিনিয়র দলের একাধিক ফুটবলার, পুরো পয়েন্ট চায় ইস্টবেঙ্গল
সম্মেলনের প্রত্যাশিত ফলাফল
এই দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে সাইবার অপরাধ, সন্ত্রাসবাদ, সীমান্ত পেরিয়ে মাদক পাচার এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা আধুনিক প্রযুক্তি, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ডেটা বিশ্লেষণ, ব্যবহার করে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার উপায় নিয়ে আলোচনা করবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ জোর দিয়েছেন যে পুলিশ বাহিনীকে কনস্টেবল থেকে শীর্ষ পদ পর্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, “নাগরিকদের সময়মতো ন্যায়বিচার প্রদান এবং সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য।” এই সম্মেলনের মাধ্যমে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হবে।
জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল সম্মেলন-২০২৫ ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অমিত শাহের নেতৃত্বে এই সম্মেলন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন কৌশল এবং প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনার একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপদ ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আগামী দিনে এই সম্মেলনের ফলাফল ভারতের অভ্যন্তরীণ ও সীমান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।