মহারাষ্ট্রে অমিত শাহের হেলিকপ্টার-ব্যাগ তল্লাশি কমিশনের

নির্বাচনী আচরনবিধির গেরোয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra Election 2024) হিংগোলি এলাকায় শুক্রবার ভোট প্রচারের সময় (Union Home Minister) আমিত শাহ (Amit Shah)’র হেলিকপ্টার এবং ব্যাগ পরীক্ষা…

Amit Shah Helicopter checked during campaign in Maharashtra election

নির্বাচনী আচরনবিধির গেরোয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra Election 2024) হিংগোলি এলাকায় শুক্রবার ভোট প্রচারের সময় (Union Home Minister) আমিত শাহ (Amit Shah)’র হেলিকপ্টার এবং ব্যাগ পরীক্ষা করেছে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) কর্মকর্তারা। এর আগে, বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করেছিল যে, নির্বাচনী পরিবেশকে প্রভাবিত করার জন্য বিজেপিকে লক্ষ্য করে বিভিন্নভাবে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় একদিকে যেমন রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি এটি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চরম বিতর্কও শুরু হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর বিমানে যান্ত্রিক সমস্যা, দেওঘর বিমানবন্দরে বিলম্ব

   

মহারাষ্ট্রের হিংগোলিতে ভোট প্রচারের জন্য আমিত শাহ এক বিমানযোগে নির্বাচনী এলাকায় পৌঁছেছিলেন। এখানে তিনি বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন জানাতে এবং রাজ্যের মানুষের কাছে দলীয় প্রচার করতে গিয়েছিলেন। তবে, নির্বাচনী বিধি এবং আচরণবিধি মেনে চলার জন্য নির্বাচন কমিশন যে কোনও রকম অসুবিধা বা পক্ষপাতিত্ব এড়াতে সবকিছু পর্যালোচনা করছে।

হেলিকপ্টারে ওঠার আগে, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা তার হেলিকপ্টার এবং ব্যাগগুলোর সুষ্ঠু পরীক্ষা চালান। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাগগুলো পরীক্ষা করছেন এবং হেলিকপ্টারের অভ্যন্তরীণ অংশও পর্যবেক্ষণ করছেন। এ সময় আমিত শাহ নিজে ভিডিও পোস্ট করে জানান, “আমরা নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মানি এবং আমাদের দল বিশ্বাস করে যে, সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। আমরা সর্বদা তাদের সকল নির্দেশ অনুসরণ করি।”

এই ঘটনা ঘটার পর, বিরোধী দলের নেতারা অভিযোগ তোলেন যে, নির্বাচন কমিশন একপেশে কাজ করছে এবং শুধুমাত্র বিজেপির নেতাদের লক্ষ্য করেই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীরা সন্দেহ প্রকাশ করেছে যে, নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রভাবিত করতে বিভিন্ন অপতৎপরতা চলছে। তারা অভিযোগ করেছে, বিজেপির নেতা-কর্মীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু নির্বাচন কমিশন কখনই তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না। 

দিল্লি কংগ্রেসে বড় ধাক্কা, তিনবারের বিধায়ক বীর সিং ধিংগান যোগ দিলেন কেজরিওয়ালের দলে

এদিকে, বিরোধী দলগুলো আরও দাবি করেছে যে, শুধু বিজেপির বিরুদ্ধে এমন নজরদারি করা হচ্ছে, যখন যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীই নির্বাচনী বিধি ভাঙতে পারে। এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পক্ষপাতিত্বপূর্ণ করে তোলে, যা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

তবে বিজেপি এই অভিযোগগুলি উড়িয়ে দিয়ে জানায় যে, তারা নির্বাচন কমিশনের প্রতি পুরোপুরি শ্রদ্ধাশীল। বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হয়, “আমরা সবার মতো নির্বাচন কমিশনের সব নিয়ম মেনে চলি এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করি।” আমিত শাহ এই ঘটনাকে খোলামেলা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, “আমরা সবসময় নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলি এবং কোনরকম বেআইনি বা পক্ষপাতিত্বমূলক কাজ করি না।”

নির্বাচন কমিশন সবসময়ই সুষ্ঠু এবং মুক্ত নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে। ভোট প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ হয়, তার জন্য কমিশন বিভিন্ন সময়ে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা প্রার্থীদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়ে ভোটের সময় যাতে কোনো রকম প্রভাব পড়তে না পারে তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন।

এছাড়া, নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের চলাফেরার ওপর নির্দিষ্ট বিধি তৈরি করেছে, যাতে তারা নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন না করেন। ভোট প্রচারের সময় কোনো প্রার্থী বা দলের পক্ষ থেকে কোনো রকম আইন অমান্য করা হলে, কমিশন তা তৎক্ষণাৎ তদন্ত করে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।

মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি ভারতের রাজনীতিতে একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে, বিজেপি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোর প্রচারণা চালাচ্ছে, অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলি তাদের মতামত দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের উপরে নিরপেক্ষভাবে নজরদারি চালানো একান্ত প্রয়োজন।

Khalistan: ‘কানাডিয়ান ইউরোপ যাও’, খালিস্তান প্রশ্রয়েই এবার ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের’ দানব গিলছে কানাডাকে?

রাজ্যের রাজনীতি এবং ভোটের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকায়, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যে কোনও ধরনের অভিযোগ বা অনিয়মের ঘটনা যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত না করতে পারে, তার জন্য তাদের তৎপরতা বাড়াতে হবে।

নির্বাচনী বিধি এবং আচরণবিধি মেনে চলার জন্য নির্বাচন কমিশন যে ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তবে, এই পরিস্থিতি থেকে সবার উপকারই হতে পারে, কারণ এটি নিশ্চিত করে যে, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মুক্ত গণতন্ত্রের মৌলিক ধারণা রক্ষা হচ্ছে। আমিত শাহ এবং বিজেপির পক্ষ থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারির প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে, বিরোধী দলের তরফ থেকেও এই ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে আরও সতর্কতা এবং নিরপেক্ষতার দাবিও উঠে এসেছে।