‘হিন্দি ছাড়া অমিত শাহ কিছু বোঝেন না,’ বিস্ফোরক বাম শিবির

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) ভাষা নীতি নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। সম্প্রতি সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা অমিত শাহর বিরুদ্ধে…

d raja slammed Amit Shah

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) ভাষা নীতি নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। সম্প্রতি সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা অমিত শাহর বিরুদ্ধে একটি কঠোর মন্তব্য করে বলেছেন, “অমিত শাহ হিন্দি ছাড়া কিছু বোঝেন না।” এই বিবৃতি ভারতের ভাষাগত বৈচিত্র্য এবং ভাষা নীতি নিয়ে চলমান আলোচনাকে আরও উত্তপ্ত করেছে।

এই প্রেক্ষাপটে (Amit Shah) আরএসএস-এর অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ সুনীল আম্বেকরের মন্তব্যও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। ডি রাজা আরএসএস-কে পরামর্শ দিয়েছেন যে, তারা বিজেপি নেতাদের ভাষা নিয়ে “অযৌক্তিক” মন্তব্যের বিরুদ্ধে শিক্ষা দেওয়া উচিত।ডি রাজার মতে, অমিত শাহ মনে করেন যে হিন্দিই একমাত্র ভাষা যা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে।

   

তিনি বলেন, “যদি কেউ ইংরেজিতে কথা বলে, তবে তারা লজ্জিত বোধ করবে—এমন একটি ধারণা অমিত শাহর (Amit Shah) মধ্যে রয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আরএসএস-এর উচিত তাদের বিজেপি নেতাদের শিক্ষা দেওয়া, যারা ভাষা নিয়ে এমন অযৌক্তিক কথা বলছেন। আরএসএস-এর উচিত বোঝা যে ভারতের সব ভাষাই জাতীয় ভাষা।

কোনও ভাষাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া উচিত নয়, সব ভাষাকে সমানভাবে সম্মান করা উচিত।”ভারতের ভাষাগত (Amit Shah) বৈচিত্র্য একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ। সংবিধানের অষ্টম তফসিলে ২২টি ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, এবং এর মধ্যে বাংলা, তামিল, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম, মারাঠি, গুজরাটি, অসমীয়া, পাঞ্জাবি, ওড়িয়া প্রভৃতি ভাষা রয়েছে।

ডি রাজার (Amit Shah)মন্তব্য এই বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান জানানোর পক্ষে একটি শক্তিশালী বার্তা। তিনি বলেন, “ভারতের প্রতিটি ভাষার নিজস্ব ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং পরিচিতি রয়েছে। একটি ভাষাকে অন্য ভাষার উপরে স্থান দেওয়ার চেষ্টা দেশের সাংস্কৃতিক ঐক্যকে দুর্বল করতে পারে।”অন্যদিকে, আরএসএস-এর সুনীল আম্বেকর ভাষা নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কে বলেছেন যে, ভারতের সব ভাষাই গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলোর মধ্যে কোনও হীনমন্যতা থাকা উচিত নয়।

তিনি (Amit Shah)জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের দেশের ভাষাগত বৈচিত্র্য আমাদের শক্তি। এটিকে আমাদের গর্ব করা উচিত।” তবে, আম্বেকরের এই মন্তব্য সত্ত্বেও, ডি রাজা মনে করেন যে আরএসএস-এর উচিত বিজেপি নেতাদের মধ্যে ভাষা নিয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া।

Advertisements

এই বিতর্ক শুধুমাত্র রাজনৈতিক মহলেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি সাধারণ মানুষের মধ্যেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলোতে হিন্দি প্রাধান্যের অভিযোগ বহুদিন ধরেই উঠছে। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলো, যেমন তামিলনাড়ু এবং কর্নাটক, বারবার হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বাংলা, অসমীয়া, ওড়িয়া প্রভৃতি ভাষাভাষী সম্প্রদায়ও তাদের ভাষার মর্যাদা ও সমানাধিকারের দাবি জানিয়ে আসছে।এই প্রেক্ষাপটে, ডি রাজার মন্তব্যকে অনেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “ভাষা একটি সংবেদনশীল বিষয়। এটি মানুষের পরিচিতি এবং আত্মসম্মানের সঙ্গে জড়িত।

কোনও নেতার উচিত নয় এমন মন্তব্য করা, যা মানুষের মনে আঘাত দেয়।” তিনি আরও জানান, সিপিআই এই বিষয়ে সরকারের কাছে তাদের দাবি জানাবে এবং ভাষাগত সমতার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে।এই বিতর্কের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে অমিত শাহর (Amit Shah) বিরুদ্ধে সমালোচনা করে বলেছেন যে, ভারতের মতো বৈচিত্র্যময় দেশে একটি ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা অগ্রহণযোগ্য।

২১ জুলাইয়ের আগে নতুন সুর? দিলীপ ঘোষ কি এবার ঘাসফুলের পথে!

অন্যদিকে, কিছু সংখ্যক মানুষ হিন্দির পক্ষে সওয়াল করে বলেছেন যে, এটি দেশের একটি সংযোগকারী ভাষা হিসেবে কাজ করতে পারে। তবে, বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন যে, ভাষার প্রশ্নে সমতা ও সম্মান বজায় রাখা (Amit Shah)অত্যন্ত জরুরি।এই বিতর্ক ভারতের ভাষাগত নীতি এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রতি নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরও আলোচনা এবং সমাধানের প্রয়োজন রয়েছে, যাতে ভারতের প্রতিটি ভাষা এবং তার ভাষাভাষী সম্প্রদায় সম্মান ও সমানাধিকার পায়।