মৃতদেহের ডিএনএ পরীক্ষা শীঘ্র শুরু করার কথা জানালেন অমিত শাহ

২০২৫ সালের ১২ জুন, গুজরাটের আহমেদাবাদে (amit-shah) এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই১৭১-এর দুর্ঘটনা ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক অধ্যায় যোগ করেছে। এই দুর্ঘটনায় গুজরাটের প্রাক্তন…

amit-shah in ahmedabad

২০২৫ সালের ১২ জুন, গুজরাটের আহমেদাবাদে (amit-shah) এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই১৭১-এর দুর্ঘটনা ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক অধ্যায় যোগ করেছে। এই দুর্ঘটনায় গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি-সহ প্রায় ২৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (amit-shah) দুর্ঘটনার পরপরই মিডিয়াকে ব্রিফ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাকে উদ্ধার কার্যক্রমে নামানো হয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমরা দুর্ঘটনার বিবরণ, উদ্ধার কার্যক্রম এবং অমিত শাহের বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরব।

   

দুর্ঘটনার বিবরণ

১২ জুন বিকেল ১:৩৮ মিনিটে, আহমেদাবাদের সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে টেকঅফ করে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। বিমানটিতে ২৩০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন, যার মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন।

টেকঅফের মাত্র ৫৯ সেকেন্ড পর বিমানটি মেঘানি নগর এলাকায় বিজে মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে বিধ্বস্ত হয়। (amit-shah) প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, পাইলটরা টেকঅফের পরপরই মেডে কল জারি করেছিলেন, কিন্তু এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফ্লাইটরাডার২৪-এর তথ্য অনুসারে, বিমানটি ৬২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পর প্রতি মিনিটে ৪৭৫ ফুট হারে নামতে শুরু করে। বিমানটিতে দীর্ঘ যাত্রার জন্য ১.২৫ লক্ষ লিটার জ্বালানি ছিল, যা বিস্ফোরণ ও আগুনের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়।

অমিত শাহের ব্রিফিং

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (amit-shah) দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, রাজ্যের গৃহমন্ত্রী হর্ষ সাংভি এবং আহমেদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএস মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি দ্রুত আহমেদাবাদে পৌঁছে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহতদের দেখতে আসরওয়া সিভিল হাসপাতালে যান।

শাহ জানান(amit-shah), “এটি একটি দুর্ঘটনা, এবং দুর্ঘটনা কেউ ঠেকাতে পারে না। তবে গুজরাটের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল দ্রুত ও সমন্বিতভাবে কাজ করেছে।” তিনি একমাত্র জীবিত ব্যক্তি, ব্রিটিশ-ভারতীয় নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশের সঙ্গে দেখা করেন, যিনি ১১এ আসনে ছিলেন। শাহ আরও বলেন, মৃতদের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে, এবং চূড়ান্ত মৃত্যুর সংখ্যা এর পরেই ঘোষণা করা হবে।

উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম

দুর্ঘটনার পরপরই জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। গান্ধীনগর থেকে তিনটি ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) দল, যার মধ্যে ৯০ জন সদস্য ছিলেন, এবং বড়োদারা থেকে আরও তিনটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী, কোস্ট গার্ড, সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ) এবং স্থানীয় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সমন্বিতভাবে কাজ করে।

ভারতীয় সেনা আহমেদাবাদের আর্মি ক্যান্টনমেন্টের সীমানা দেওয়াল ভেঙে উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা করে। আহমেদাবাদ পুলিশ কমিশনার জানান, ২৬৫টি মৃতদেহ সিভিল হাসপাতালে আনা হয়েছে, এবং ৪১ জন আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য গ্রিন করিডোরের ব্যবস্থা করেন।

Advertisements

তদন্ত ও সহায়তা

বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু একটি উচ্চ-পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা করেছেন। এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) এবং বোয়িংয়ের একটি প্রযুক্তিগত দল তদন্তে সহায়তা করছে। এনএসজি দুর্ঘটনাস্থল থেকে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে।

প্রাথমিক রিপোর্টে ফ্ল্যাপের ত্রুটি বা যান্ত্রিক সমস্যার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে(amit-shah)। টাটা গ্রুপ, এয়ার ইন্ডিয়ার মালিক, প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসা খরচ বহনের ঘোষণা করেছে। এয়ার ইন্ডিয়া দিল্লি ও মুম্বাই থেকে দুটি ত্রাণ ফ্লাইট পরিচালনা করছে যাত্রীদের পরিবারের সদস্যদের জন্য।

রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্ঘটনাকে “হৃদয়বিদারক” বলে বর্ণনা করেছেন এবং শাহ ও নাইডুর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতির তদারকি করেছেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ শোক প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য তদন্তে সহায়তার জন্য দল পাঠাচ্ছে।

অনুপ্রবেশের চেষ্টা! বিএসএফের তৎপরতায় ৫ বাংলাদেশি আটক

দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিরোধ

বিমান দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হল শক্তির ক্ষতি (লস অফ পাওয়ার) এবং উত্তোলনের ক্ষতি (লস অফ লিফট)। এই দুর্ঘটনায় যান্ত্রিক ত্রুটি বা ফ্ল্যাপের সমস্যা সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, পাইলটদের উন্নত প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জরুরি।

আহমেদাবাদের (amit-shah) বিমান দুর্ঘটনা ভারতের জন্য একটি বড় ক্ষতি। অমিত শাহের নেতৃত্বে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং সমন্বিত উদ্ধার কার্যক্রম প্রশংসনীয়। তবে, এই ঘটনা বিমান চলাচলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করে। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং আশা করি ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।