মেঘালয়ের (Meghalaya) আন্তর্জাতিক সীমান্তে ভারতীয় রেডারে বেশ কিছু চালকবিহীন আকাশযান (ড্রোন) ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)। বাংলাদেশের চাতক ও সুনামগঞ্জ জেলার উত্তরাঞ্চলে, বিশেষত জ়িরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে, এই ড্রোনগুলি উড়ছিল এবং মাঝে মাঝে বাংলাদেশের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় আকাশে চলে আসছিল। বিএসএফ সূত্রের দাবি, এই ড্রোনগুলি সম্ভবত বাংলাদেশ থেকে উড়ে আসছিল এবং সীমান্ত লঙ্ঘন করার চেষ্টা করছিল।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, ড্রোনের ব্যবহার সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং সীমান্তের নিয়ন্ত্রণে এক নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় চালকবিহীন আকাশযানগুলি দেশের সীমানা লঙ্ঘন করতে সক্ষম, যা আগে কখনো সম্ভব ছিল না। বিএসএফ-এর এই অভিযোগের ফলে, সীমান্তে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে, বিশেষত যখন দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে টানাপড়েন চলছে।
বিএসএফ-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব ড্রোনের গতিবিধি নজরদারি এবং সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক জটিল করে তুলেছে। সীমান্তে থাকা বিএসএফ জওয়ানরা প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের উড়ন্ত বস্তু দেখতে পান, কিন্তু তা কখনো কখনো তাদের কাছে পৌঁছানোর আগেই সীমান্ত পেরিয়ে চলে যায়। বিশেষত, চাতক এবং সুনামগঞ্জের উত্তরাঞ্চল, যেখানে আন্তর্জাতিক সীমান্ত খুব কাছাকাছি, সেখানে ড্রোনগুলির উপস্থিতি সন্দেহের সৃষ্টি করছে। বিএসএফ মনে করছে, এসব ড্রোন সীমান্তে কোনো ধরনের নজরদারি বা সম্ভবত অসংখ্য বার্তালাপ বা অস্ত্র সরবরাহের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারে।
ড্রোন প্রযুক্তি এখন বিশ্বব্যাপী ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীগুলি এটি মোকাবিলায় নতুন প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহারের চেষ্টা করছে। তবে, এই নতুন চ্যালেঞ্জটি বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিপদজনক হয়ে উঠছে, কারণ এই অঞ্চলের ভূখণ্ডটি খুবই সংবেদনশীল এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতিও অস্থির। একদিকে যেখানে দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্কের টানাপড়েন বেড়েছে, সেখানে এই ধরনের সীমান্ত লঙ্ঘন নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশি ড্রোনের সীমান্ত লঙ্ঘন একটি খুবই গুরুতর বিষয় এবং এটি সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করবে। যদিও বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়টি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি, তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন যে, এসব ড্রোন বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে উড়ে আসতে পারে।
এদিকে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্তে ড্রোনের মাধ্যমে চলমান নজরদারি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার আপগ্রেড করতে কাজ করছে। সীমানায় পর্যাপ্ত নজরদারি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিএসএফ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যাতে সীমান্তে ড্রোনের চলাচল সঠিকভাবে ট্র্যাক করা যেতে পারে এবং তাতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হয়।