শান্তির বার্তা বিশ্বমঞ্চে, গান্ধী দর্শনে ভর করে আন্তর্জাতিক কূটনীতির পথে অভিষেক

Operation Sindoor: পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের মুখোশ খুলে বিশ্বের সামনে ভারতের অবস্থান তুলে ধরতে এক নতুন কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করল ভারত। এই প্রয়াসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে…

All-party delegation

Operation Sindoor: পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের মুখোশ খুলে বিশ্বের সামনে ভারতের অবস্থান তুলে ধরতে এক নতুন কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করল ভারত। এই প্রয়াসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে জাপানে পা রাখলেন ভারতের সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। নয় সদস্যের এই সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলে রয়েছেন জেডিইউয়ের সঞ্জয় ঝা, এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি।

প্রতিনিধিদলটি জাপানে পৌঁছানোর পর দিনটি শুরু করেন টোকিওতে অবস্থিত মহাত্মা গান্ধীর মূর্তিতে মাল্যদান করে। ভারতীয় মূল্যবোধ ও শান্তির বার্তা বহন করেই এই কূটনৈতিক সফরের সূচনা হয়। এরপর প্রতিনিধিরা যান টোকিওতে ভারতীয় দূতাবাসে, যেখানে ভারতের রাষ্ট্রদূত সিবি জর্জের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সিবি জর্জ দলটিকে তাদের কর্মসূচি ও জাপানের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকনির্দেশনা দেন। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, “জাপান সেই দেশগুলির অন্যতম যারা পহেলগাঁও হামলার পর তৎক্ষণাৎ শোক প্রকাশ করেছিল এবং ভবিষ্যতেও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে পাশে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।”

   

এই সফরের মূল লক্ষ্য হলো সম্প্রতি ঘটে যাওয়া পহেলগাঁও হামলা ও অপারেশন সিঁদুর-এর প্রেক্ষিতে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি আন্তর্জাতিক মহলের সামনে তুলে ধরা। জাপানের পর প্রতিনিধিদলটি আরও চারটি দেশে এই বার্তা পৌঁছে দেবে। এ এক সুপরিকল্পিত কূটনৈতিক অভিযাত্রা, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন অর্জনই মূল উদ্দেশ্য।

এই প্রেক্ষাপটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্তি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শুরুতে তাঁর নাম ছিল না এই দলে, কিন্তু পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সক্রিয় হস্তক্ষেপে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এটি শুধু অভিষেকের নয়, বরং তৃণমূল কংগ্রেসের একটি নৈতিক জয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ় অবস্থানের ফলেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু নিজে ফোন করে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে কথা বলেন এবং অভিষেকের নাম অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব দেন, যা পরে গৃহীত হয়।

Advertisements

এই ঘটনায় প্রতিফলিত হয়, জাতীয় স্বার্থে তৃণমূল কংগ্রেস কতটা আন্তরিক ও সক্রিয়। দলমত নির্বিশেষে জাতীয় নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক কূটনীতি যখন প্রশ্নে আসে, তখন রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করাই এক প্রকৃত রাজনৈতিক প্রাজ্ঞতার পরিচায়ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ভূমিকা তা স্পষ্ট করে দিয়েছে।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তর্ভুক্তি শুধু রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের অবস্থান উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও তা তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও সপ্রতিভতা প্রতিনিধিদলের কণ্ঠস্বরকে আরও বলিষ্ঠ করতে সাহায্য করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই সফর নিঃসন্দেহে ভারতের কূটনৈতিক পরিধিকে আরও বিস্তৃত করবে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানকে আন্তর্জাতিক স্তরে জোরালোভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এই সর্বদলীয় উদ্যোগ। আগামী দিনে এই ধরনের আরও উদ্যোগ জাতীয় স্বার্থে কেমন কার্যকর হয়, তা নির্ধারণ করবে ভারতের কূটনৈতিক ভবিষ্যৎ।