শনিবার সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব মহাকুম্ভ মেলা পদপিষ্টের ঘটনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে কেন্দ্রীয় বাজেটের চেয়ে মহাকুম্ভের মারাত্মক দুর্ঘটনাটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
মহাকুম্ভে ৩০ জনের মৃত্যু এবং অনেকের নিখোঁজ হওয়ার পরেও সরকার মৃতের সংখ্যা এবং নিখোঁজদের সঠিক তথ্য না দেওয়ায় আখিলেশ যাদব কেন্দ্রের সরকারকে কাঠগোড়ায় তুলেছেন।
সমাজবাদী পার্টি প্রধান মন্তব্য করেছেন, “বর্তমানে বাজেটের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মহাকুম্ভ মেলায় মানুষ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের খুঁজে পাচ্ছে না। প্রশাসন এবং সরকার এর কোনো সঠিক হিসাব দিতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বহুবার সেখানে গেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও গিয়েছেন, উপ-রাষ্ট্রপতি শুক্রবার সেখানে গেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীও যাবেন। কিন্তু এসবের মধ্যেও যে মহাকুম্ভে ৩০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সরকার এখনও মৃতের সঠিক সংখ্যা এবং নিখোঁজদের তালিকা দেয়নি।”
অখিলেশ আরও বলেছেন, “হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষরা প্রাণ হারিয়েছে। সরকারকে এখনই সচেতন হতে হবে। আমি আগেও বলেছি, সেখানে সেনাবাহিনী পাঠানোর প্রয়োজন। এটি এমন ঘটনা, যেখানে সাধুরা শাহী স্নান করার বিরোধিতা করেছেন।”
অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শুক্রবার প্রয়াগরাজে গেছেন। মহাকুম্ভ মেলায় পদপিষ্টের ঘটনার পর এটি তাঁর প্রথম সফর। তাঁর সফরে তিনি উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখরকে স্বাগত জানাবেন এবং মহাকুম্ভ মেলা সংক্রান্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
মাঘী পূর্ণিমার দিন মহাকুম্ভ মেলায় মাঘী স্নানের সময় ভয়াবহ পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর ছিল। প্রশাসন এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে তৎপর হয়ে উদ্ধারের কাজ চালালেও, হতাহতের সঠিক সংখ্যা ও তথ্য নিয়ে একাধিক বিভ্রান্তি দেখা গেছে।
এরপর মহাকুম্ভ মেলায় পদপিষ্টের ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট বিচারিক কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন এক মাসের মধ্যে ঘটনাটির কারণ এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট জমা দেবে বলে জানিয়েছে। এছাড়া সরকার জানিয়েছে এই রিপোর্টের পরই ঘটনার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহাকুম্ভ মেলা যা বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর লাখ লাখ তীর্থযাত্রীকে আকর্ষণ করে। তবে গত কয়েক বছরে মেলা চলাকালীন বিভিন্ন দুর্ঘটনা এবং বিশৃঙ্খল ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ২০২৫ সালের এই পদপিষ্টের ঘটনা অন্যতম। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হলেও, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এখনো পর্যন্ত মহাকুম্ভ মেলা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি। তবে মেলা কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং তা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তীব্র হয়ে উঠেছে।