জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত দোভাল (Ajit Doval) শুক্রবার ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির কথা তুলে ধরে বলেছেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে, যখন ভারত স্বাধীনতার ১০০ বছর উদযাপন করবে, তখন দেশের জিডিপি আটগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। চেন্নাইয়ে আইআইটি-মাদ্রাজের ৬২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি ভারতের অতীতের চ্যালেঞ্জ থেকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে যাত্রার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি ছাত্রদের (Ajit Doval) গতিশীল নেতা হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি উচ্চ-মূল্য প্রযুক্তি, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) গ্রহণের গুরুত্বের উপর জোর দেন এবং চীনের ৫জি প্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির তুলনা করেন।
দোভাল (Ajit Doval) বলেন, “ভারতের অভূতপূর্ব হারে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। ২০৪৭ সালের মধ্যে আমাদের জিডিপি আটগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ৩২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে।” তিনি জানান, এর ফলে মাথাপিছু আয় ২,৫০০ ডলার থেকে বেড়ে ২২,০০০ ডলারে পৌঁছবে। তিনি আরও বলেন, “তখন ভারতে প্রায় ১১০ কোটি কর্মক্ষম জনসংখ্যা থাকবে, যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন হবে।
মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, এবং দেশের সভ্যতাগত ও আধ্যাত্মিক শক্তি এর ক্ষমতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।” তিনি চীনের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, চীনের কর্মক্ষম জনসংখ্যা সেই সময়ে ২৩ শতাংশ কমে যেতে পারে, যা ভারতের জনসংখ্যাগত সুবিধাকে আরও স্পষ্ট করে।
প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং ৫জি উন্নয়ন (Ajit Doval)
দোভাল (Ajit Doval) ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, চীন ৫জি প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য ১২ বছর সময় নিয়ে ৩০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে সেই সময় বা অর্থ ছিল না। তবুও, মাত্র আড়াই বছরে আমরা একটি স্বদেশী ৫জি বিকল্প তৈরি করেছি।”
এই কৃতিত্ব ভারতের প্রযুক্তিগত সম্ভাবনা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতার প্রমাণ। তিনি ছাত্রদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো উচ্চ-মূল্য প্রযুক্তি গ্রহণ করার আহ্বান জানান এবং বলেন, এই প্রযুক্তিগুলি ভারতের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে
ছাত্রদের ভূমিকা
আইআইটি-মাদ্রাজের ছাত্রদের উদ্দেশে দোভাল (Ajit Doval) বলেন, “আপনারাই ভবিষ্যতের নেতা। আগামী দিনের বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করুন। আপনারা হবেন সেই ‘এক্স ফ্যাক্টর’, যারা ভারতের অগ্রগতির পথে নতুন দিশা দেবেন।”
তিনি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে প্রযুক্তির সমন্বয়ের উপর জোর দিয়ে বলেন, দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন। তিনি ছাত্রদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার আহ্বান জানান।
‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সাফল্য
দোভাল (Ajit Doval) ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই অভিযান মাত্র ২৩ মিনিটে সম্পন্ন হয়েছিল। তিনি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ভারতীয় পক্ষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে দায়িত্বহীন এবং ভুল রিপোর্টিংয়ের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের রিপোর্টিং আমাদের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে, কিন্তু আমাদের অভিযানের নির্ভুলতা এবং দক্ষতা অতুলনীয়।” এই অভিযান ভারতের সামরিক ক্ষমতা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দক্ষতার প্রমাণ।
ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ
দোভাল (Ajit Doval) ভারতের ঐতিহাসিক যাত্রার কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশ অতীতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। তিনি জাতীয় ব্যক্তিত্বদের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের ত্যাগ এবং কাজের ফলেই আজ ভারত বিশ্ব মঞ্চে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তিনি বলেন, “২০৪৭ সালের স্বপ্ন আমাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে, তবে এটি অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।” তিনি জনগণের ঐক্য এবং তরুণ প্রজন্মের ভূমিকার উপর জোর দেন।
মাত্র 10,499 টাকায় AI ফোন, Infinix Hot 60 5G+ -এ রয়েছে 50MP ক্যামেরা ও Dimensity 7020 প্রসেসর
রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
দোভালের (Ajit Doval) বক্তৃতা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে তাঁর বক্তব্যকে ভারতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে দেখছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “দোভালের বক্তৃতা তরুণদের জন্য একটি প্রেরণা। আমরা ২০৪৭ সালের মধ্যে একটি শক্তিশালী ভারত গড়তে পারি।” তবে, কেউ কেউ চীনের সঙ্গে তুলনা এবং অপারেশন সিন্দুর নিয়ে তাঁর মন্তব্যের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্যের দাবি জানিয়েছেন।
অজিত দোভালের (Ajit Doval) বক্তৃতা ভারতের অর্থনৈতিক, সামরিক এবং প্রযুক্তিগত সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করেছে। তিনি ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতের জিডিপি আটগুণ বৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয় ২২,০০০ ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনার কথা বলেছেন। তাঁর বক্তৃতা তরুণদের উদ্দেশে একটি প্রেরণাদায়ী আহ্বান, যেখানে তিনি তাদের ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে গড়ে উঠতে উৎসাহিত করেছেন।
ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, বিশেষ করে ৫জি উন্নয়ন এবং ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সাফল্য দেশের ক্ষমতার প্রমাণ। আগামী দিনে তরুণ প্রজন্ম এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ভারতকে ২০৪৭ সালের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করবে।