আম্বালায় বিমান হামলার সতর্কতা, বায়ুসেনার বার্তা পেল প্রশাসন

Ambala air raid alert: শুক্রবার সকালে আম্বালা ও চণ্ডীগড়ে বিমান হানার সতর্কবার্তার পর পরপর বাজানো হয় এয়ার রেইড সাইরেন। ভারতীয় বায়ুসেনা স্টেশন থেকে “সম্ভাব্য হামলার”…

Ambala air raid alert

Ambala air raid alert: শুক্রবার সকালে আম্বালা ও চণ্ডীগড়ে বিমান হানার সতর্কবার্তার পর পরপর বাজানো হয় এয়ার রেইড সাইরেন। ভারতীয় বায়ুসেনা স্টেশন থেকে “সম্ভাব্য হামলার” বার্তা পাওয়ার পরই এই সতর্কতা জারি করা হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন অ্যাম্বালার সাধারণ মানুষকে ঘরের ভেতরে থাকার এবং বারান্দায় বা ছাদে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

সূত্র অনুযায়ী, সকাল ১০টা ২০ মিনিট নাগাদ আম্বালার বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে এই সতর্কতা আসে। তৎক্ষণাৎ সাইরেন বাজিয়ে জনসাধারণকে সাবধান করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি বার্তা দিয়ে বলা হয়, বাসিন্দারা যেন অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে চলে যান এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঘরের বাইরে না যান।

   

এর আগে চণ্ডীগড়ে ভোরেই একই রকম একটি সতর্কতা জারি হয়। সেখানে সকালবেলা এয়ার রেইড সাইরেন বাজানো হয় এবং মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সতর্কতা শেষে গেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

পাকিস্তানের হামলা ও ভারতের প্রতিক্রিয়া

সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতেই সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকিস্তানের তরফ থেকে একটি সীমিত পরিসরের বিমান হামলার চেষ্টা হয়। ভারতীয় সেনা এবং বায়ুসেনা তৎক্ষণাৎ জবাব দেয় এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে। এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো না হলেও সেনা সূত্রে খবর, ভারতের পক্ষ থেকে “উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া” দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় মানুষদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন, কেউ কেউ বলেন, তারা এরকম পরিস্থিতি আগে কখনও দেখেননি।

প্রশাসনের ভূমিকা ও প্রস্তুতি

আম্বালার জেলা প্রশাসক বলেন, “আমরা অবিলম্বে সতর্কতা জারি করেছি এবং পুলিশ ও জরুরি পরিষেবাকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। তবে আমরা বাসিন্দাদের বলছি, দয়া করে সরকারি নির্দেশ মেনে চলুন।”

বায়ুসেনা সূত্রে জানা গেছে, এটি একটি নিয়মিত প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ হতে পারে, তবে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হওয়ার কারণে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। চণ্ডীগড় প্রশাসনও একইভাবে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া

চণ্ডীগড়ের এক বাসিন্দা বলেন, “সকালেই হঠাৎ সাইরেন শুনে আমরা ভয় পেয়ে যাই। সঙ্গে সঙ্গে টেলিভিশন খুলে দেখি, বিমান হানার সতর্কতা জারি হয়েছে। সবাই খুবই চিন্তিত ছিল।”

আম্বালার এক ব্যক্তি জানান, “সকাল ১০টা নাগাদ সাইরেন বাজে। আমরা ঘর থেকে বের হওয়ার সাহসই পাইনি। বাচ্চারা খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরামর্শ এসেছে, আমরা তা মেনেই চলেছি।”

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মত

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। বিশেষত সীমান্তে উত্তেজনা থাকলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এধরনের সতর্কতা আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে সহায়ক।

একজন অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল বলেন, “বিমান হানার সতর্কতা শুধু শত্রুর হামলার সম্ভাবনার জন্যই নয়, তা প্রতিরক্ষার একটি অংশ হিসেবেও কাজ করে। এর মাধ্যমে বেসামরিক জনগণকে সচেতন রাখা যায়।”

বর্তমান পরিস্থিতি

বিকেল নাগাদ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে কোনো ধরনের হুমকি নেই। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। তবে নজরদারি চালু রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, তবে আশা করা হচ্ছে শিগগিরই একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত জানানো হবে।

Advertisements