ওড়ার পরই ‘মে ডে কল’ এটিসি-কে! তার পরই দুর্ঘটনা! বিমান ছিল ৬২৫ ফুট উঁচুতে

আমেদাবাদ: উড়তে না উড়তেই বিপদবার্তা! রানওয়ে ছাড়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (ATC) কাছে জরুরি সংকেত পাঠিয়েছিলেন পাইলট। কিন্তু তারপর? আর কোনও উত্তর মেলেনি।…

Air India Mayday Call

আমেদাবাদ: উড়তে না উড়তেই বিপদবার্তা! রানওয়ে ছাড়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের (ATC) কাছে জরুরি সংকেত পাঠিয়েছিলেন পাইলট। কিন্তু তারপর? আর কোনও উত্তর মেলেনি। আর তার ঠিক পরেই—বিস্ফোরণের শব্দ, ধোঁয়ার কুণ্ডলী আর আতঙ্কে কাঁপা মেঘানিনগর। আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার AI-171 ফ্লাইট বৃহস্পতিবার ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে।

 কী ঘটেছিল সেই মুহূর্তে?

বিমানটি ছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর VT-ANB। ডিজিসিএ (DGCA)-র মতে, দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে রানওয়ে ২৩ থেকে উড়ে যায় ফ্লাইট AI-171। উড্ডয়নের এক মিনিটের মধ্যেই পাইলট রেডিয়ো বার্তায় পাঠান বিপদ সংকেত—‘Mayday, Mayday, Mayday’।
তবে এর পরেই বিমানের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফ্লাইটরাডার২৪ জানাচ্ছে, তখন বিমানটি ছিল মাত্র ৬২৫ ফুট উচ্চতায়, এবং সেখান থেকেই এটি দ্রুত নীচের দিকে নামতে শুরু করে। এরপরই সেটি মেঘানিনগরের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভেঙে পড়ে।

   

কী এই ‘Mayday Call’? Air India Mayday Call

‘Mayday’ শব্দটি এসেছে ফরাসি শব্দ ‘m’aider’ থেকে, যার অর্থ “আমাকে সাহায্য করুন”। বিমান চলাচলের ভাষায় এটি একটি জরুরি বিপদ সংকেত, যা পাইলটরা ব্যবহার করেন যদি বিমানে কোনও গুরুতর যান্ত্রিক ত্রুটি, আগুন, আবহাওয়াজনিত সমস্যা, অথবা মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়। এই সংকেতটি সাধারণত তিনবার বলতে হয় “Mayday, Mayday, Mayday”, যাতে এটিসি (ATC) বুঝতে পারে, পরিস্থিতি অত্যন্ত সঙ্কটজনক। যদি বিপদ কম গুরুতর হয়, তখন ‘Pan-Pan’ বার্তা পাঠানো হয়।

বিমানে কারা ছিলেন?

AI-171 বিমানে ছিলেন মোট ২৪২ জন আরোহী৷ তাঁদের মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী, ১০ জন ক্রু সদস্য৷ প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন-১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, ৭ জন পর্তুগিজ নাগরিক এবং ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক৷ বিমানটি এর আগে দিল্লি থেকে আহমেদাবাদে এসেছিল এবং সেখান থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়।

Advertisements

দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি

বিমানটি ভেঙে পড়ার পর বিকট শব্দ শোনা যায়। মেঘানিনগরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে কুণ্ডলী পাকানো কালো ধোঁয়া। আতঙ্কে মানুষ ছুটতে থাকে। দমকলের অন্তত সাতটি ইঞ্জিন পৌঁছায় দুর্ঘটনাস্থলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে বিমানের নিচের দিকে আগুন দেখা যায়, তারপর সেটি পুরোপুরি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

বিমানবন্দর বন্ধ, তদন্ত শুরু

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর আপাতত আহমেদাবাদ বিমানবন্দর সম্পূর্ণ অচল ঘোষণা করা হয়েছে। সব উড়ান স্থগিত রাখা হয়েছে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত। ডিজিসিএ তদন্ত শুরু করেছে, এবং ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।