নয়াদিল্লি: এয়ার ইন্ডিয়া বিমানের ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর শুক্রবার প্রথমবার সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ খুললেন দেশের নবনিযুক্ত অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু। তিনি জানান, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে এবং তা বিশ্লেষণ করে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
মন্ত্রী জানান, Aircraft Accident Investigation Bureau (AAIB)-এর বিশেষজ্ঞ দল ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, “গতকাল সন্ধ্যা ৫টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে দুর্ঘটনার ঠিক আগে কী ঘটেছিল, বা বিমানে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল কিনা।” মন্ত্রী আরও বলেন, “বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে কোনও রকম ঢিলেমি করব না।”
ভারতীয় বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর জোর
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, ভারতে “খুবই কঠোর ও বিশ্বমানের বিমান নিরাপত্তা মানদণ্ড” বজায় রাখা হয়। তবে এই ঘটনার পরে বোয়িং ৭৮৭ সিরিজের সব বিমানেই অতিরিক্ত নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে DGCA (Directorate General of Civil Aviation)।
মন্ত্রী জানান, “ভারতে বর্তমানে ৩৪টি বোয়িং ৭৮৭ বিমান চালু রয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮টি বিমানের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা নিরীক্ষা করা হয়েছে এবং বাকিগুলোও খুব দ্রুত করা হবে।”
কী ঘটেছিল সেই দিন? Air India Crash Investigation
দিল্লি হয়ে প্যারিস থেকে আহমেদাবাদে আসা এয়ার ইন্ডিয়ার AI 171 নম্বর ফ্লাইট, একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড়ান তোলার পরপরই মেঘানিনগর এলাকার একটি মেডিকেল হোস্টেল ও ক্যান্টিন বিল্ডিংয়ে ভেঙে পড়ে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মোট ২৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য ছিলেন। বাকিরা ছিলেন হোস্টেল ও ক্যান্টিনে অবস্থানরত স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী।
তদন্ত চলছে: সিভিল অ্যাভিয়েশন সেক্রেটারির বক্তব্য
সিভিল অ্যাভিয়েশন সচিব সমীর কুমার সিনহা জানান, “দুর্ঘটনার আগে পর্যন্ত ফ্লাইটটি প্যারিস-দিল্লি-আহমেদাবাদ রুটে কোনও সমস্যা ছাড়াই যাত্রা সম্পন্ন করেছিল। কী কারণে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে এএআইবি।”
অপেক্ষায় গোটা দেশ
দুর্ঘটনার কারণ জানতে এখন সকলের দৃষ্টি ব্ল্যাক বক্স বিশ্লেষণের রিপোর্টের দিকে। কেন্দ্র জানিয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব এই রিপোর্ট সামনে আনা হবে। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা দিতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য প্রশাসন যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে।