এশিয়া কাপে আগামীকাল ১৪ সেপ্টেম্বর দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ভারত পাক ম্যাচ (India Pakistan Match)। এই ক্রিকেট ম্যাচকে ঘিরে দেশজুড়ে ম্যাচ বয়কটের আবহ। এরই মধ্যে কানপুরে অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM) কর্মীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছে। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট ম্যাচ খেলা ‘দেশদ্রোহিতা’ বলে উল্লেখ করে AIMIM নেতারা বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে।
কানপুরের গড়তল্লা এলাকায় অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ মিছিলে শত শত কর্মী অংশ নিয়েছে, যা সারা দেশের অন্যান্য প্রতিবাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি জাতীয় আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে। এই ঘটনা শুধুমাত্র ক্রিকেট নয়, বরং ভারত-পাক সম্পর্কের উত্তপ্ততা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জনমতের প্রকাশ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কানপুরের প্রতিবাদে AIMIM এর স্থানীয় নেতারা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে স্লোগান দিয়েছে: “পাকিস্তান সন্ত্রাস সমর্থক, ক্রিকেট ম্যাচ বয়কট করো!” এবং “পাহেলগাঁওয়ের শহিদদের রক্তের বিনিময়ে ক্রিকেট খেলো না!”। প্রতিবাদকারীরা বলেছেন, এপ্রিল মাসের ২২ তারিখে পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছে, এবং তারপরের চার দিনের যুদ্ধে ভারত অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিয়েছে।
সেই পরিস্থিতিতে ক্রিকেট ম্যাচ খেলা সেনা ও শহিদদের অপমান। AIMIM এর একজন স্থানীয় নেতা বলেন, “আমরা কানপুরের মুসলিম সমাজের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ করছি। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে, তাই তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখা যায় না। এই ম্যাচ বয়কট না করলে দেশের ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
প্রতিবাদ শেষে একটি মিটিংয়ে বক্তারা সরকারের ‘দ্বিমুখী নীতি’র সমালোচনা করেছে, যেখানে অর্থনৈতিক বাণিজ্য বন্ধ করা হয়েছে কিন্তু ক্রিকেট চলছে।এই প্রতিবাদ এআইএমআইএমের কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গত ১১ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে AIMIM এর প্রধান স্পোকসপার্সন ওয়ারিস পাঠান বলেছেন, “পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সমর্থন করে, আমি এশিয়া কাপ ম্যাচ দেখব না।
পহেলগাঁও হামলার শিকারদের কী জবাব দেব? ভারতকে এই ম্যাচ বয়কট করতে হবে।” তিনি যোগ করেছেন, “আমরা পাকিস্তানি সেলিব্রিটি ও ইনফ্লুয়েন্সারদের ব্যান করেছি, তাহলে তাদের টিমের সঙ্গে কেন খেলব? এটি অর্থের লোভে হচ্ছে।” AIMIM প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি জুলাই মাসে সংসদে বলেছিলেন, “আমার বিবেক এই ম্যাচ দেখতে বারণ করে ।
সন্ত্রাসের পর কীভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলব?” এই বক্তব্যগুলো কানপুরের প্রতিবাদকে জোরদার করেছে।দেশব্যাপী এই বয়কটের আন্দোলন শিবসেনা (ইউবিটি), সমাজবাদী পার্টি এবং অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত ‘সিঁদুর রক্ষা অভিযান’ শুরু করে মহারাষ্ট্রে প্রতিবাদ করেছেন।
তিনি বলেছেন, “রক্ত এবং ক্রিকেট কীভাবে মিশবে? এটি বিশ্বাসঘাতকতা।” সমাজবাদী পার্টির আবু আজমি বলেছেন, “সরকারের দ্বিমুখী নীতি। পাহেলগাঁওয়ে শত শত লোক মারা গেছে, তবু ম্যাচ চলছে। এতে কিছু ষড়যন্ত্র আছে।” আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি পাঞ্জাব কিংসও সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে বয়কটের সমর্থন করেছে।
Lakshya Sen : হংকং ওপেনে ছন্দে ফিরে বাঙালি লক্ষ্যের বাজিমাত, ফাইনালে সত্ত্বিক-চিরাগ জুটিও
AIMIM প্রধান আসাদুদ্দিন ওআইসি আরও বলেন আমরা ভারতবাসী অপারেশন সিঁদুরের পরে প্রতিনিধি দল কেন পাঠানো হল সারা বিশ্বে। কেনই বা ভারত সরকার ক্রিকেটের ময়দানে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলবে। এতে পহেলগাঁও শহীদ এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর অপমান হবে।