“AI ক্যান্সার চিকিৎসা ও ওষুধ আবিষ্কারে বিপ্লব ঘটাচ্ছে”-সংগিতা রেড্ডি

এআই ক্যান্সার শনাক্তকরণে এবং নতুন ওষুধ আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাপোলো হাসপাতালের জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর সংগিতা রেড্ডি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন,…

এআই ক্যান্সার শনাক্তকরণে এবং নতুন ওষুধ আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাপোলো হাসপাতালের জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর সংগিতা রেড্ডি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এআই স্বাস্থ্যখাতে বিপ্লব ঘটাতে সাহায্য করছে এবং ভবিষ্যতে মানুষের স্বাস্থ্য আরও উন্নত হবে।

সংগিতা রেড্ডি বলেছেন, “ক্যান্সার চিকিৎসায় এআই-এর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথমত এটি রিস্ক মডেল তৈরি করতে সহায়ক। ভারতের মতো দেশ যেখানে ১.৪ বিলিয়ন মানুষের বসবাস, সেখানে সবার স্ক্রীনিং করা খুবই কঠিন। কিন্তু যদি রিস্ক মডেল তৈরি করা যায় এবং তা জনগণের মাঝে প্রয়োগ করা যায়, তবে উচ্চ ঝুঁকির রোগীদের সহজেই শনাক্ত করা যাবে। এআই এই কাজটি করবে এবং তারপর উচ্চ ঝুঁকির রোগীদের ওপর নজর দেওয়া যাবে, যা ক্যান্সারের প্রাথমিক শনাক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

   

এছাড়া এআই ক্যান্সার চিকিৎসার পাশাপাশি নতুন ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখছে। রেড্ডি আরও উল্লেখ করেছেন, এআই প্রোটিন ফোল্ডিং বুঝতে সাহায্য করছে, যা বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষকরা প্রোটিন ফোল্ডিং বিশ্লেষণ করে রোগের কার্যকর চিকিৎসা তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছেন।

ভারতের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে, রেড্ডি বলেছেন, “ভারতের স্বাস্থ্যকর্মীরা রিমোট কেয়ার সেবা এবং টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে দূরবর্তী এলাকার রোগীদের চিকিৎসা প্রদান করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন।” তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ১৭ মিলিয়ন স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি রয়েছে এবং এই খাতে ভারতীয় যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করলে সেই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে।

ভারতের স্বাস্থ্যখাতের সরকারী উদ্যোগগুলির প্রসঙ্গেও রেড্ডি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানিয়েছেন, “বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী এবং তার বেশি বয়স্ক নাগরিকদের প্রি-এক্সিস্টিং ডিজিজ সহ বিমা কভারেজ দেওয়া হচ্ছে, যা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।” তিনি ভারতের ডিজিটাল হেলথ মিশনের গুরুত্বও উল্লেখ করেন, যা স্বাস্থ্যসেবা ডেটা সংগ্রহ ও ব্যবহারে সহায়ক হয়ে উঠেছে।

এছাড়াও, রেড্ডি জানান যে, ভারতের সরকার আগামী ৫ বছরে ৭৫,০০০ নতুন ডাক্তার নিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই বছর ১০,০০০ নতুন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে, যা ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।

রেড্ডি ভারতের স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, “ভারত এখন স্বাস্থ্যখাতে একটি বৈশ্বিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। অন্যান্য দেশের মানুষ ভারতকে স্বাস্থ্যসেবা জন্য নির্বাচন করছে, কারণ এখানে উচ্চমানের চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে মাত্র এক দশমাংশ খরচে।”

তিনি শেষে উল্লেখ করেছেন, “এটি ভারতের সময়, আমরা নিজেদের জনগণকে সুস্থ রাখব, পাশাপাশি একটি সুস্থ, সুখী বিশ্ব গঠনে সাহায্য করব।”