২,০০০ কিমি পরিসরে চিন-পাকিস্তান, রেলভিত্তিক লঞ্চে সফল অগ্নি-প্রাইম পরীক্ষা

নয়াদিল্লি: যুগান্তকারী সামরিক সাফল্য৷ বৃহস্পতিবার রেল-ভিত্তিক মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের ‘অগ্নি-প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল ভারত। দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই ধরণের উৎক্ষেপণ…

Agni Prime Rail Launch

নয়াদিল্লি: যুগান্তকারী সামরিক সাফল্য৷ বৃহস্পতিবার রেল-ভিত্তিক মোবাইল লঞ্চার সিস্টেম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের ‘অগ্নি-প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল ভারত। দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই ধরণের উৎক্ষেপণ এটাই প্রথম, যা ভারতের কৌশলগত প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে দিল।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই উদ্ভাবনী ব্যবস্থা সশস্ত্র বাহিনীকে কম দৃশ্যমানতা ও স্বল্পতম প্রতিক্রিয়ার সময়ের মধ্যে দেশজুড়ে গতিশীলতা (cross-country mobility) এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের অভূতপূর্ব সুবিধা দেবে।

   

এলিট ক্লাবে ভারত: ক্যানিস্টারাইজড রেল লঞ্চের তাৎপর্য

রাজনাথ সিং DRDO (ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন), কৌশলগত বাহিনী কমান্ড (SFC) এবং সশস্ত্র বাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়ে নিশ্চিত করেন, এই সফল পরীক্ষা ভারতকে বিশ্বের সেই হাতেগোনা দেশগুলির তালিকায় স্থান করে দিয়েছে, যাদের কাছে চলন্ত রেল নেটওয়ার্ক থেকে ক্যানিস্টারাইজড লঞ্চ সিস্টেম পরিচালনা করার ক্ষমতা রয়েছে।

কৌশলগতভাবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ হল-

দুর্গমতা বৃদ্ধি: ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি বিশেষ সীলমোহরযুক্ত কন্টেইনারে (ক্যানিস্টার) সংরক্ষিত থাকে, যা এর প্রস্তুতি ও উৎক্ষেপণের সময়কে নাটকীয়ভাবে হ্রাস করে।

সর্বত্র মোতায়েন: দেশের বিস্তৃত রেল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, যা শত্রুপক্ষের আগাম নজরদারি এবং হামলার বিরুদ্ধে এর সার্ভাইভাল ক্ষমতা (survivability) বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়।

ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা: চিন ও পাকিস্তানও নজরে Agni Prime Rail Launch

‘অগ্নি-প্রাইম’ বা অগ্নি-পি (Agni-P) হল অগ্নি সিরিজের একটি নতুন প্রজন্মের মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।

Advertisements

পাল্লা: এর আঘাত হানার ক্ষমতা ২,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে এটি কেবল পাকিস্তান নয়, চিনের একটি বড় অংশকেও সফলভাবে লক্ষ্য করতে সক্ষম।

উন্নত বৈশিষ্ট্য: এটি স্বনির্ভর, কঠিন জ্বালানি চালিত এবং এতে উন্নত গাইডেন্স ও নেভিগেশন সিস্টেম যুক্ত করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক এই সাফল্যটি কৌশলগত বাহিনীর জন্য ‘অগ্নি-পি’-কে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

MIRV প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা ভবিষ্যৎ

এই রেল-ভিত্তিক উৎক্ষেপণ এমন এক সময়ে এল, যখন ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। এর আগে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে ‘মিশন দিব্যাস্ত্র’-এর অধীনে অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করা হয়, যা MIRV (Multiple Independently Targetable Re-entry Vehicle) অর্থাৎ একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে স্বাধীনভাবে আঘাত হানার অত্যাধুনিক ক্ষমতা সম্পন্ন।

বর্তমানে কৌশলগত বাহিনী কমান্ডে একক ওয়ারহেডযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হলেও, MIRV-এর অন্তর্ভুক্তি ভবিষ্যতে ভারতের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও জটিল এবং শক্তিশালী করবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News