‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’! কানাডার পর এবার খালিস্তান ইস্যুতে ভারতকে বিঁধল ব্রিটেন

After US, Canada, Now Uk threatened India over Khalistani row

ভারতীয় সংখ্যালঘু সিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত খালিস্তানি (Khalistani) আন্দোলনের জটিলতা এবং এর রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভারত, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য—এই দেশগুলির মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালিস্তানি আন্দোলনের সমর্থন এবং এর প্রভাব নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে ভারতের সঙ্গে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, যার মধ্যে কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। এখন যুক্তরাজ্যও এই সঙ্কটের মধ্যে যোগ দিয়েছে, এবং ভারতকে এর ওপর অবস্থান স্পষ্ট করতে এক ধরণের সতর্কতা পাঠিয়েছে।

Advertisements

ভারতীয় সেনার মুকুটে নতুন পালক! বাইকের কেরামতিতে গড়ল গিনেস ওয়ার্লড রেকর্ড

ব্রিটেনে বসবাসরত সিখ সম্প্রদায়ের কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে ভারতীয় সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। সেসব সিখের দাবি, তারা ভারতের পক্ষ থেকে হয়তো সরাসরি নয়, তবে তার অনুপ্রেরণায় হয়তো একধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে, ব্রিটেনের সিকিউরিটি মিনিস্টার ড্যান জারভিস হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন যে, তাদের সরকার কোনোভাবেই বিদেশি দেশের পক্ষ থেকে ব্রিটিশ নাগরিকদের বিরুদ্ধে হেনস্থা বা ভয়ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা সহ্য করবে না। তিনি এমন অভিযোগের তদন্তের জন্য ব্রিটেনের সিখ ফেডারেশনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন।

গত কিছু দিন ধরে ব্রিটিশ সিখদের মধ্যে ভারতীয় সরকার বা তার প্রতিনিধিদের কাছ থেকে হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। বেশ কিছু সিখ ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন যে, ব্রিটেনের বিমানবন্দরগুলোতে তাদের আটকানো হয় এবং ভারত রাষ্ট্রের বিষয়ে তাদের মতামত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। এই ধরনের ঘটনা ব্রিটিশ সিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ তৈরি করেছে, কারণ তারা মনে করছেন, তাদের মতামত বা দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

ঐতিহাসিক সফর, ৪৩ বছর পর কুয়েত সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী,

ড্যান জারভিস, যিনি ব্রিটেনের সিকিউরিটি মিনিস্টার, এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, “আমরা কোনোভাবেই সহ্য করব না যে, কোন বিদেশি দেশ ব্রিটিশ নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখায় বা তাদের হেনস্থা করে।” তিনি আরও বলেন, “যেকোনো ধরনের হেনস্থা বা শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন, যেটি ব্রিটিশ নাগরিকদের উপর হতে পারে, তা আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সুরক্ষার মৌলিক ধারণাকে লঙ্ঘন করে। আমরা এই ধরনের ঘটনা গুরুত্ব সহকারে নেব এবং এর যথাযথ তদন্ত করব।”

Advertisements

এছাড়া, তিনি সিকিউরিটি মিনিস্টারের অফিস থেকে সিখ ফেডারেশনের কাছে একটি লিখিত চিঠি পাঠিয়েছেন, যেখানে তিনি ব্রিটেনে বসবাসরত সিখদের বিরুদ্ধে এসব ধরনের হয়রানির ঘটনা দ্রুত তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে, বিমানবন্দরে এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

ব্রিটেনের সিকিউরিটি মিনিস্টারের বক্তব্যের পর, সিখ ফেডারেশনও তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং তারা বিশ্বাস করে যে, ব্রিটেনে বসবাসরত সিখরা তাদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, কোনো বিদেশি শক্তি ব্রিটিশ নাগরিকদের প্রভাবিত বা তাদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।

সংসদ-মারপিট মামলায় এবার রাহুলের বিরুদ্ধে সিবিআই, তুঙ্গে জল্পনা

এদিকে, ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে তাদের সাথের যোগাযোগ ও সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ব্রিটেনের সিকিউরিটি মিনিস্টার জানিয়েছেন যে, যদি এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকে, তবে ব্রিটিশ সরকার এর বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। এখন দেখার বিষয়, এই ঘটনাগুলির ফলস্বরূপ ব্রিটেন ও ভারত সম্পর্কের মধ্যে কোনও নতুন উত্তেজনা তৈরি হয় কিনা। 

এখন দেখার বিষয় হল, এই আন্তর্জাতিক চাপ কতটা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থান ও সিদ্ধান্তের ওপর। তবে, ভারতের জন্য এটি একটি বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।