বেঙ্গালুরু: ২৭ মাস ধরে দেওয়া হয়নি বেতন। হকের পাওনা চাইতে গেলে করা হয়েছে মানসিক অত্যাচার! গ্রাম পঞ্চায়েত (Gram Panchayat) অফিসের সামনে আত্মহত্যা করলেন জলকর্মী। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের চামরাজনগর জেলার হঙ্গানুরু গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে। সুইসাইড নোটে ২ বছর ধরে বেতন বকেয়া রাখা এবং তা চাইতে গেলে স্থানীয় আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ করে গেছেন ওই কর্মী। মৃতের নাম চিকুসা নায়ক বলে জানা গিয়েছে।
সুইসাইড নোটে (Suicide Note) তিনি লেখেন, “আমি ২০১৬ সাল থেকে এই পঞ্চায়েত অফিসে (Gram Panchayat) ওয়াটারম্যান হিসেবে কাজ করছি। পঞ্চায়েত উন্নয়ন কর্মকর্তা (PDO) এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী আমার ২৭ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তাঁরা আমাকে উপেক্ষা করেন। আমি জেলা পঞ্চায়েতের সিইওর সাথেও যোগাযোগ করেছি, কিন্তু কিছুই হয়নি।”
এমনকি অসুস্থতার কারণে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া সত্ত্বেও কর্মকর্তারা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি, বলে সুইসাইড নোটে (Suicide Note) উল্লেখ করেছেন চিকুসা নায়ক নামক ওই কর্মী। তিনি আরও লেখেন, “আমি ছুটি নিতে চাইলে, ওই দিনগুলোতে আমার কাজ করার জন্য অন্য কাউকে খুঁজে নিয়েব আসতে বলা হত। আমাকে সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত অফিসে থাকতে বাধ্য করা হত। পিডিও রাম গৌড়া এবং পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী মোহন কুমারের হয়রানির কারণে আমি আমার জীবন শেষ করছি।”
কর্তৃপক্ষকে এই দুজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে গেছেন চিকুসা নায়ক নামক কর্মী। ঘটনায় পিডিও, গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে এসসি/এসটি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। আত্মহত্যার পর, জেলা পঞ্চায়েতের সিইও অবহেলা এবং পরিষেবা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে রামে গৌড়াকে বরখাস্ত করেছেন।
সিদ্দারামাইয়াকে তুলোধোনা বিজেপির
ঘটনায় রাজ্য সরকারের নিন্দায় সরব হয়েছে বিজেপি (BJP)। রাজ্য বিজেপির তরফে বলা হয়, “কংগ্রেস সরকারের জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হলেন আরও এক সরকারি কর্মী”। রাজ্য বিজেপির এক্সে লেখা হয়, “মাত্র দু-দিন আগেই বেতন না পাওয়ায় কালাবুরাগিতে এক লাইব্রেরিয়ান আত্মহত্যা করেন। সেই শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই রাজ্যে আরও এক সরকারি কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনা সামনে উঠে এল!”
সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah) এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে পোস্টটিতে বলা হয়, “সিদ্দারামাইয়া এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার (D K Shivkumar), মাত্র ৫,০০০ টাকা মাসিক আয়কারী একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে দুই বছর ধরে বেতন না দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলেন। আপনার সরকারের কি কোনও হৃদয় নেই? কোনও মানবতা নেই? আরও কত নিরীহ সরকারি কর্মচারীকে আপনার কুশাসনের শিকার হতে হবে?”