বিহারের ফল বাংলায় কোনও প্রভাব নেই, দাবি তৃণমূলের

বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ–র (BJP) বিপুল জয়ের পরই উৎফুল্ল হয়ে উঠেছে বঙ্গ বিজেপি। বৃহস্পতিবার ফলাফল ঘোষণার পর মুহূর্তেই কলকাতার সল্টলেকের রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ে শুরু হয় ঢাকঢোল, মিষ্টি বিলি এবং উচ্ছ্বাসে ভরা স্লোগান। ‘নেক্সট ইজ বেঙ্গল’ এই স্লোগানেই ফেটে পড়েন রাজ্য বিজেপির কর্মীরা। শুধু কলকাতাই নয়, নন্দীগ্রাম, বর্ধমান, হাওড়া, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার জেলার জেলা অফিসে একই ধরনের উল্লাস ধরা পড়েছে।

Advertisements

নিউ টাউনের বাসিন্দা ও বিজেপি কর্মী প্রবল রায় বলেন, “বিহারের জয় আমাদের কাছে ভবিষ্যতের লড়াইয়ের বার্তা। আমরা মিষ্টি নিয়ে এসেছি উদযাপনের জন্য। এবার মূল লক্ষ্য ২০২৬ সালের বাংলা নির্বাচন। তৃণমূল কংগ্রেসের ‘বিসর্জন’ এবার নিশ্চিত।”

   

বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বিহারে কোনও জঙ্গলরাজ নেই। নির্বাচনী বিশেষ পুনর্মূল্যায়ন (SIR) দারুণভাবে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। কোনও অশান্তি হয়নি। এটা এনডিএ সরকারের কার্যকারিতারই প্রমাণ।” তিনি আরও যোগ করেন, “একসময় বিহার থেকে মানুষ চাকরির জন্য বাংলায় আসতেন। এখন উল্টে গেছে চিত্র মানুষ বাংলার পরিস্থিতির কারণে রাজ্যের বাইরে চলে যাচ্ছেন। এটা বাংলার বর্তমান দুরবস্থারই ইঙ্গিত। আমরা বিহারের জয়ে অত্যন্ত খুশি।”

তিনি আরও বলেন, “এবার লড়াই বাংলার। দিল্লিতে দিদির ভাই অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে আমরা হারিয়েছি। তার পর হরিয়ানা, তারপর মহারাষ্ট্র, এরপর বিহার। এবার পালা বাংলার। তৃণমূলের ‘বিসর্জন’ হবেই। বাংলার মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাস্তায় ইতিমধ্যেই প্রতিবাদ শুরু করেছেন।”

বিজেপির দাবি, SIR কোনও রাজনৈতিক অস্ত্র নয়। শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “SIR এর মূল উদ্দেশ্য হল বাংলার ভোটার তালিকা থেকে অবৈধ ভোটার বাদ দেওয়া। এটা গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার প্রক্রিয়া।”

Advertisements

দলীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার থেকেই বিজেপির পূর্ণ ফোকাস বাংলার দিকে ঘুরবে। ভূপেন্দ্র যাদবসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কলকাতায় এসে একাধিক বৈঠক করবেন। বাংলার জন্য একটি বিশেষ রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছে এবং দল টানা কয়েক মাস “অ্যাটাক মোডে” যাবে। জেলা কমিটিগুলিকে মাঠ পর্যায়ের কাজ জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মতে, বিহারের ফলাফল বাংলায় কোনওভাবেই প্রভাব ফেলবে না। দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপির নেতারা ভেবে বসেছেন বিহারের ফল বাংলার রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে। এটা ভুল ধারণা। বাংলা ও বিহারের নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা। দুই রাজ্যের রাজনৈতিক মনোভাব, সাংস্কৃতিক পরিবেশ সবই ভিন্ন। তাদের এই উত্তেজনার কোনও ভিত্তি নেই।”

তৃণমূলের দাবি, বিজেপি বিহারের ফলের উত্তেজনায় “দৃষ্টিভঙ্গি হারাচ্ছে” এবং বাংলার পরিস্থিতি বোঝার ভুল করছে। বিহারের ফল ঘোষণার পরই বিজেপি টুইট করে—“Next is West Bengal.”