ভয়ঙ্কর সফর: ল্যান্ডিং গিয়ারে লুকিয়ে দিল্লি পৌঁছাল আফগান কিশোর

Afghan Stowaway Delhi

নয়াদিল্লি: বিমানে চড়ে কাবুল থেকে সোজা দিল্লিতে ল্যান্ডিং৷ প্রথমবার দিল্লিতে পা রাখে ১৩ বছরের আফাগনি কিশোর৷ কিন্তু, এতে আর নতুন কী? আসতেই পারে! তবে এই আসা যে যেমন-তেমন নয়৷ বিমানের মধ্যে যাত্রী আসনে বসে আসেনি সে৷ বরং সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে পড়ে বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের হুইল-বেল অংশে৷ আর সেখানে বসেই সোজা দিল্লির রানওয়েতে৷ এই কিশোরের কাণ্ড দেখে চোখ কপালে উঠেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের৷ রীতিমতো শোরগোল বাধে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে৷ 

Advertisements

চাকার কম্পার্টমেন্ট থেকে নেমে আসে কিশোর

রবিবার সকাল ১১.১০ মিনিট৷ Kam Airlines-এর RQ-4401 ফ্লাইট কাবুল থেকে এক ঘণ্টা ৫০ মিনিটের সফর শেষে দিল্লিতে অবতরণ করে। বিমান ট্যাক্সি করার সময় বিমান সংস্থার চিফ সিকিউরিটি অফিসার লক্ষ্য করেন, একটি ছোট ছেলেটি ট্যাকিওয়েতে হাঁটছে। সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের সিকিউরিটি অপারেশনস কন্ট্রোল সেন্টার-কে খবর দেওয়া হয়।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, Kam Airlines-এর RQ-4401 ফ্লাইটটি রবিবার সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে৷  এরপর এটি দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-এ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অবতরণ করে। অবতরণের পরেই কিশোরটি বিমানের চাকার কম্পার্টমেন্ট থেকে নেমে আসে৷ লাউঞ্জের দিকে যাওয়ার সময়ই ধরা পড়ে যায়।

ইরান যেতে চেয়েছিল ওই কিশোর Afghan Stowaway Delhi

বিমানবন্দর কর্মকর্তারা জানান, কুর্তা-পাজামা পরা ওই আফগান কিশোরটি আসলে ইরান যেতে চেয়েছিল। ভুল করে সে দিল্লিগামী বিমানে উঠে পড়ে এবং বোর্ডিংয়ের সময় লুকিয়ে বিমানের পিছনের চাকার উপরে উঠে বসে। বিমানবন্দরের এক গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলার টার্মিনাল ৩-এর ট্যাক্সিওয়ের কাছে তাকে হাঁটতে দেখে সন্দেহ করেন। ওই দৃশ্য দেখেই তিনি নিরাপত্তারক্ষীদের খবর দেন। এরপর সিআইএসএফ কিশোরটিকে হেফাজতে নিয়ে বিমানবন্দর পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

Advertisements

জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরটি জানায়, সে আফগানিস্তানের কুন্দুজ শহরের বাসিন্দা। কৌতূহলের বশেই সে কাবুল বিমানবন্দরে ঢুকে বিমানের পেছনের ল্যান্ডিং গিয়ার কম্পার্টমেন্টে উঠে পড়েছিল। তার কাছে একটি ছোট লাল রঙের স্পিকারও পাওয়া যায়। তবে বিমানটি তল্লাশি করে কোনও নাশকতার প্রমাণ মেলেনি৷ বিমানটি নিরাপদ বলেই ঘোষণা করা হয়।

ওই বিমানেই ফেরত

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে তাকে একই বিমানে করে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়। এই ঘটনা কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে যারা এভাবে বিমানের চাকায় লুকিয়ে যাত্রা করেন, তাদের মধ্যে প্রতি ৫ জনের মধ্যে ৪ জনেরই মৃত্যু হয়। ভারতের বিমানবন্দরে এটি দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রদীপ সাইনি (২২) এবং বিজয় সাইনি (১৯) নামে দুই ভাই ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমানে দিল্লি থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় লুকিয়ে পড়েছিলেন। প্রদীপ বেঁচে গেলেও, লন্ডন পৌঁছানোর পর বিজয়ের মৃত্যু হয়৷