Bihar: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রশ্নের মুখে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া। শনিবার একটি বেসরকারি সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস কমিশনের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনে’ স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা দায়ের করল সুপ্রিম কোর্টে। মামলাটি দায়ের করেছেন সুপ্রিমকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, ভোটার তালিকায় এই নিবিড় সংশোধনীর কাজ বন্ধ না করলে ৩ কোটি বৈধ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে।
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এই সংশোধনের কাজকেই বলা হচ্ছে ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, অবৈধ অনুপ্রবেশকারী- সহ অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, যাতে শুধুমাত্র যোগ্য ভারতীয় নাগরিকরাই ভোট দানের অধিকার পান সেটা নিশ্চিত করতেই এই সংশোধনী। শুধুমাত্র বিহার নয়, এরপরে একে একে অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ হবে। দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি ভোটার তালিকায় নির্ভুলতা, বিশেষ করে অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। অন্যান্য দলগুলির পাশাপাশি বিজেপিও অবৈধ অভিবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই প্রেক্ষিতেই নির্বাচন কমিশন তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তালিকাভুক্ত ভোটার বা নতুন আবেদনকারীদের বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনের সময় বুথ স্তরের অফিসাররা একটি ফর্ম দেবেন। সেই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। এর পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকত্বের সেলফ অ্যাটেস্টেট ঘোষণাপত্রও জমা দিতে হবে।
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নেওয়া এই নিয়ে নিয়ে প্রবল আপত্তি বিরোধীদের। বিরোধীদের দাবি, এই প্রক্রিয়ার ফলে বহু বৈধ ভোটারও তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।
নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধনীর বিধিনিষেধ নিয়ে প্রথম গর্জে ওঠেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইন্ডিয়া জোটের তরফেও কমিশনের কাছে আপত্তির কথা জানান হয়। প্রয়োজনে দেশজুড়ে প্রচারের পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জোটের তরফে হুমকি দেওয়া হয়। মমতার দাবিকে মান্যতা দিয়ে বিধিনিষেধে কিছু পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করে কমিশন।
জানা যাচ্ছে, বিধিনিষেধে কিছু পরিবর্তন আনা সত্ত্বেও বিহারের বহু ভোটারের নাম উঠতে সমস্যা হচ্ছে। ভোটার কার্ড-আধার কার্ড থাকা গ্রামের বহু ভোটার নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণে হিমশিম খাচ্ছেন। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস-এর দাবি, এই নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় প্রান্তিক, গরিব, পরিযায়ী শ্রমিক সহ অন্তত ৩ কোটি ভোটারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যেতে পারে। পাশাপাশি, যে সব তথ্য চাওয়া হচ্ছে সেটা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী বলেও দাবি করছে এডিআর।