যে এন ইউ এ বামপন্থীদের দাপট, ৯ বছরের খরা কাটিয়ে পদে এ বি ভি পি

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (jnu) নির্বাচনে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি তাদের আধিপত্য বজায় রেখে কেন্দ্রীয় প্যানেলের চারটি পদের মধ্যে তিনটিতে জয়লাভ করেছে। অন্যদিকে, আরএসএস-এর সঙ্গে…

jnu wins election

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (jnu) নির্বাচনে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি তাদের আধিপত্য বজায় রেখে কেন্দ্রীয় প্যানেলের চারটি পদের মধ্যে তিনটিতে জয়লাভ করেছে। অন্যদিকে, আরএসএস-এর সঙ্গে যুক্ত অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) নয় বছরের বিরতির পর যুগ্ম সচিবের পদে জয়ী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে ফিরে এসেছে। জেএনইউএসইউ (jnu) নির্বাচন কমিশন সোমবার ভোরে ফলাফল ঘোষণা করেছে।

   

নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী

নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (এআইএসএ) প্রার্থী নীতিশ কুমার ১,৭০২ ভোট পেয়ে সভাপতির পদে জয়ী হয়েছেন। ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস ফেডারেশনের (ডিএসএফ) প্রার্থী মনীষা ১,১৫০ ভোট পেয়ে উপ-সভাপতির পদ অধিকার করেছেন।

এছাড়া, বামপন্থী ঐক্যের প্রার্থী মুন্তেহা ফাতিমা ১,৫২০ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদকের পদে জয়লাভ করেছেন। তবে, এবিভিপি-র প্রার্থী যুগ্ম সচিবের পদে জয়ী হয়ে বামপন্থীদের একচেটিয়া আধিপত্যে ফাটল ধরিয়েছেন।

জেএনইউ- (jnu) এর ছাত্র রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে বামপন্থী সংগঠনগুলির দ্বারা প্রভাবিত। এই নির্বাচ আদর্শ এবং প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি, যেমন এআইএসএ, ডিএসএফ এবং অন্যান্য, ছাত্রদের মধ্যে তাদের শক্তিশালী সমর্থন বজায় রেখেছে।

এই নির্বাচনের ফলাফল তাদের প্রভাবের ধারাবাহিকতার প্রমাণ। তবে, এবিভিপি-র যুগ্ম সচিব পদে জয় তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য, যা নির্দেশ করে যে ডানপন্থী সংগঠনটি ধীরে ধীরে জেএনইউ-এর রাজনৈতিক মঞ্চে পুনরুত্থানের চেষ্টা করছে।

নীতিশ কুমার বলেন (jnu)

নীতিশ কুমার, নবনির্বাচিত সভাপতি, জয়ের পর বলেন, “এই জয় ছাত্রদের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন, শিক্ষার গুণগত মান এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করে যাব।” তিনি আরও বলেন, বামপন্থী ঐক্য এই নির্বাচনে তাদের শক্তি প্রদর্শন করেছে এবং ছাত্রদের অধিকার রক্ষায় তারা অবিচল থাকবে।

পহেলগাঁও এফেক্টে শোয়েব আখতারের ইউটিউবসহ পাকিস্তানি চ্যানেল নিষিদ্ধ ভারতে

উপ-সভাপতি মনীষা বলেন

উপ-সভাপতি মনীষা তার জয়ের পর বলেন, “জেএনইউ-এর ছাত্ররা প্রমাণ করেছে যে তারা প্রগতিশীল চিন্তাধারার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সকলের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে কাজ করব।” মুন্তেহা ফাতিমা, নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রদের ঐক্যের উপর জোর দিয়ে বলেন, “এই জয় আমাদের সকলের। আমরা ছাত্রদের সমস্যা সমাধানে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চেতনা বজায় রাখতে কাজ করে যাব।”

এদিকে, এবিভিপি-র জয় যুগ্ম সচিবের পদে তাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। গত নয় বছর ধরে জেএনইউএসইউ- (jnu) এর কেন্দ্রীয় প্যানেলে কোনো পদে জয়লাভ করতে না পারা এবিভিপি এই জয়কে “নতুন শুরু” হিসেবে উল্লেখ করেছে। এবিভিপি-র একজন মুখপাত্র বলেন, “এই জয় প্রমাণ করে যে জেএনইউ-এর ছাত্ররা আমাদের এজেন্ডার প্রতি আস্থা রাখছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করব।”

নির্বাচনের সময় বেশ কিছু উত্তেজনা এবং বিতর্কও দেখা গেছে। বামপন্থী সংগঠনগুলি অভিযোগ করেছে যে এবিভিপি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে, যদিও এবিভিপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোট গণনা স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

এক্স-এ পোস্ট করা বেশ কিছু বার্তায় দেখা গেছে, এই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করা হচ্ছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “জেএনইউ-এর ছাত্ররা আবারও প্রমাণ করেছে যে তারা প্রগতিশীল রাজনীতির পক্ষে। বামপন্থীদের এই জয় গণতান্ত্রিক চেতনার বিজয়।” অন্যদিকে, এবিভিপি-র সমর্থকরা তাদের জয়কে “নতুন যুগের সূচনা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

জেএনইউ- (jnu) এর ছাত্র রাজনীতি ভারতের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সবচেয়ে সক্রিয় এবং আলোচিত। এই নির্বাচনের ফলাফল শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিই নয়, জাতীয় স্তরেও বামপন্থী ও ডানপন্থী শক্তির মধ্যে চলমান বিতর্ককে প্রভাবিত করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বামপন্থীদের এই জয় তাদের জন্য একটি মনোবল বৃদ্ধিকারী হলেও, এবিভিপি-র প্রত্যাবর্তন ইঙ্গিত দেয় যে জেএনইউ-এর রাজনৈতিক মঞ্চে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হতে চলেছে।

নবনির্বাচিত জেএনইউএসইউ নেতৃত্ব এখন ছাত্রদের বিভিন্ন সমস্যা, যেমন হোস্টেল সুবিধা, শিক্ষার গুণগত মান এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলির সমাধানে মনোযোগ দেবে। একই সঙ্গে, তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তাদের অবস্থান বজায় রাখবে। এই নির্বাচনের ফলাফল জেএনইউ-এর গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন এবং ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।