দিল্লি বিধানসভার লজ্জাজনক হারের পর এবার ভোপালের অফিসের দরজা বন্ধ হয়ে গেলো আম আদমি পার্টির। সুত্রের খবর অনুযায়ী কারণ পার্টি তিন মাস ধরে ভাড়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। স্থানীয় মালিক ভাড়া পরিশোধের জন্য পার্টিকে একাধিকবার চিঠি দেওয়ার পর, অফিসটি লক করে দেয়া হয়।
মধ্যপ্রদেশ আপ-এর যুগ্মসচিব রামাকান্ত প্যাটেল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, “এটা তখনই ঘটে যখন আমরা সততার সঙ্গে কাজ করি। সবকিছু ভালো হবে। আমরা সততা নিয়ে কাজ করি। এখন আমাদের কাছে তহবিল নেই, তাই আমরা ভাড়া দিতে পারিনি।” তিনি আরও জানান, পার্টির কার্যক্রম চালাতে তারা স্থানীয় অর্থ সহায়তায় নির্ভর করছিলেন এবং তাদের কর্মীদের আর্থিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। “আমি জানি না অফিসের ভাড়া কত এবং কতদিন বাকি রয়েছে, কারণ তা পরিশোধ করা হয়নি”।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি’র মুখপাত্র নারেন্দ্র সলুজা এক্স হ্যান্ডলারে (পূর্বে টুইটার) মন্তব্য করেছেন, “আপ-এর মধ্যপ্রদেশ অফিস বন্ধ, পরবর্তী সংখ্যাটি কংগ্রেসের।” এর মাধ্যমে তিনি প্রাক্তন রাজনৈতিক শত্রু কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও ইঙ্গিত দেন।
২০২৩ সালের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে আপ ৬৬টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল কিন্তু সবকটি আসনেই পরাজিত হয়েছে। দলের ভোটের হার ছিল মাত্র ০.৫৩%, যা নোটা এর থেকেও কম, যেটি ০.৯৮% ভোট পেয়েছিল।
তবে ২০২২ সালে আপ সিংরৌলির পৌরসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ জয় লাভ করেছিল। সিংরৌলির মেয়র পদে আপ প্রার্থী রানী আগরওয়াল বিজেপির প্রার্থী চন্দ্রপ্রকাশ বিশ্রকার এবং কংগ্রেস প্রার্থী অরবিন্দ চাঁদেলকে পরাজিত করে।
অন্যদিকে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আপ বড় ধাক্কা খেয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে বিজেপি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৮টি আসনে জয়ী হয়। আপ-এর জাতীয় সমন্বয়ক এবং প্রাক্তন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া, দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ, প্রাক্তন মন্ত্রী সোমনাথ ভারতী এবং সত্যেন্দ্র জৈনসহ পার্টির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাও তাদের নিজেদের কেন্দ্রে পরাজিত হন।
এটি বড় বিপর্যয় ছিল, কারণ ২০২০ সালের দিল্লি নির্বাচনে আপ ৭০টির মধ্যে ৬২টি আসন জিতেছিল এবং ২০১৫ সালে দল ৬৭টি আসন জিতেছিল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে,আপ-এর জন্য অর্থনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এবং দলটি নির্ভর করছে স্থানীয় তহবিলের উপর। পার্টির কর্মীরা তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম চালানোর জন্য অনিয়মিত অর্থ সাহায্য পাচ্ছেন, যার ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে ভাড়া পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।
আপের মুখপাত্ররা দাবি করছেন যে, এটি এক সাময়িক সমস্যা এবং দলটি শীঘ্রই তাদের তহবিল সংগ্রহ করে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। দলের নেতারা যদি অর্থনৈতিক অবস্থা সমাধান করতে ব্যর্থ হন, তবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
এই ঘটনাটি আপ-এর জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ এটি দলের ক্রমবর্ধমান আর্থিক সংকট এবং রাজনৈতিক দৃঢ়তা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।