ভোটার আইডি, আধার কিংবা রেশন কার্ড—এই তিনটি পরিচয়পত্রই নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ নয় বলে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানাল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন(Election Commission)। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানায়, ইলেকটোরাল ফটো আইডেনটিটি কার্ড (EPIC) শুধু পরিচয়পত্র, এপিক কার্ড কোনও গ্রহণযোগ্য নথি নয়। এপিক কার্ড থাকলেই তাকে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন(SIR) বিবেচনা করা হবে না।
বিহারে ভোটার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এই স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন এর মাধ্যমে। ফলে ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে প্রায় কয়েকলক্ষ মানুষের নাম। বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য চলা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র EPIC কার্ড থাকা মানেই কোনও ব্যক্তিকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে—এমনটা নয়। এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছেন ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার সঞ্জয় কুমার। তিনি জানিয়েছেন, SIR হল একটি রিভিশন প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমেই এপিক কার্ড তৈরি করা হচ্ছে। তাই এপিক কার্ডের কোনও গুরুত্ব থাকে না। তাই এই এপিক কার্ড নতুন করে তৈরি করা দরকার।
আধার নিয়ে কমিশনের বক্তব্য, এটি কেবলমাত্র একটি পরিচয়পত্র, যা নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ নয়। আধার আইনের ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, এই কার্ডকে নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তবে সহায়ক নথি হিসেবে এটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
রেশন কার্ড নিয়েও কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট—এই কার্ডে জালিয়াতির প্রবণতা বেশি। তাই ভোটার তালিকার জন্য নির্ধারিত ১১টি প্রামাণ্য নথির তালিকা থেকে রেশন কার্ডকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিহারে SIR প্রক্রিয়ায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় শুনানিতে ১৭ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করেছিল, নাগরিকত্ব নির্ধারণ নির্বাচন কমিশনের অধিকারভুক্ত নয়, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। তবে আদালত একসঙ্গে এটাও বলেছিল, EPIC, আধার ও রেশন কার্ডকে অন্তত বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে বিবেচনা করা যেতে পারে। পাশাপাশি কমিশনকে সুপ্রিম কোর্ট এদিন বলে, আধার, রেশন কার্ড ও ভোটার আইডিকে বিহারের SIR প্রক্রিায়ার জন্য গণ্য করা হোক।