গোলাপি-নীল মাদক বড়ি (Yaba) ইয়াবা। থাইল্যান্ডে বিপুল জনপ্রিয় এই মাদকের ব্যবহার বাংলাদেশে যেমন ছড়িয়েছে, তেমনই পড়শি দেশ থেকে চোরাচালানে সীমান্ত পার করে ভারতেও ঢুকছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ লাগোয়া ত্রিপুরা (Tripura) থেকে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা মাদক বাজেয়াপ্ত করা হয়। ইয়াবা মাদকের মূল্য ৭৮ কোটি টাকা। (A huge quantity of Yaba drug tablets seized in Tripura)
India Today Ne জানাচ্ছে, ত্রিপুরার ধলাই জেলায় ৭৮ কোটি টাকার ইয়াবাসহ আটক এক ব্যক্তি। শুল্ক বিভাগ, ত্রিপুরা পুলিশ এবং আসাম রাইফেলসের যৌথ অভিযানে ধলাই জেলার অন্তর্গত গন্ডাছেড়া থেকে 78 কোটি টাকার ইয়াবা বাজেয়াপ্ত করা হয়।
A huge quantity of Yaba drug tablets seized in Tripura (সীমান্ত জেলায় বিরাট মাদক বিরোধী অভিযান):
আসাম রাইফেলস জানিয়েছে,এই অঞ্চলে মাদক পাচারের বড়সড় চক্র সক্রিয়। তাদের বিপুল মাদক চোরাচালান ধরা পড়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ৩.৯ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি চালান আটক করেছে। ২০ ডিসেম্বর রাতে তেলিয়ামুড়া থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ধলাই জেলার অন্তর্গত গন্ডাছড়ার কাছে অভিযানটি হয়। সোনামুড়ার মেলাঘর থেকে মানিক মিয়ার ছেলে রাকেশ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। সেই মাদক পাচার করছিল।
আগরতলার সংবাদমাধ্যমের খবর, অসমের করিমগঞ্জ থেকে ত্রিপুরার গণ্ডাছড়া হয়ে সোনামুড়ায় ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করার সময় বিপুল ইয়াবা বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
“বিজেপি আমলে মাদক পাচার বেড়েছে” (A huge quantity of Yaba drug tablets seized in Tripura)
আগরতলার সংবাদ মাধ্যম আরও জানাচ্ছে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাজ্য ত্রিপুরায় বিগত আড়াই দশকের টানা বাম জমানায় এতটা মাদক পাচার ছিল না বলেই একাধিক সরকারি তথ্য মিলছে। এ রাজ্যে মাদক পাচার ও গাঁজা চাষ বিপুল বেড়েছে ২০১৮ সালে বিজেপি সরকারে আসার পর।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা ‘নেশা মুক্ত ত্রিপুরা’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। পূর্বতন শাসক ও বর্তমানে প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএমের কটাক্ষ রাজ্যে একাধিক স্থানীয় বিজেপি নেতা মাদক চোরাচালানে জড়িত। মুখ্যমন্ত্রী চোখ বন্ধ রেখেছেন। বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন রাজ্যে কর্মসংস্থানের জৌলুস দেখিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। রাজ্যবাসী এই ভাঁওতা বুঝেছেন।
ইয়াবা কী?
ইয়াবা নামের থাই ভাষার অর্থ “পাগলা ওষু়ধ”। এটি একধরনের নেশাজাতীয় ট্যাবলেট। মূলত মেথঅ্যাম্ফিটামিন ও ক্যাফেইন মিশ্রণে তৈরি হয় ইয়াবা। কখনো কখনো এর সাথে হেরোইন মেশানো হয়।
একাধিক নামে ইয়াবা
এটি সাধারণত “বাবা, গুটি, বেদোনা, ইশতুপ, আপেল, পাথর, দানা, পোক, বিচি, বিমান,ট্রেন,নৌকা, ঘোড়া এবং কালোজোরি” নামেও পরিচিত। এই মাদকটি থাইল্যান্ডে বেশ জনপ্রিয়। থাইল্যান্ডের পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার থেকে এটি চোরাচালান করা হয়। মায়ানমারের লাগোয়া বাংলাদেশ, ভারতে ক্রমে ইয়াবা মাদক তালিকায় উপরের দিকে উঠে আসছে।সৌদি আরব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এই মাদকের বিস্তার ঘটেছে।
ইয়াবা কতটা মারাত্মক
ইয়াবা যৌন উত্তেজক বড়ি হিসাবে বাজারে পরিচিত। কিন্তু দীর্ঘদিন এই মাদক সেবনের ফলে যৌন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। ব্রিটেনের “ড্রাগ ইনফরমেশন” ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ইয়াবা ট্যাবলেটটি খেলে সাময়িক ভাবে উদ্দীপনা বেড়ে যায়। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হেরোইনের চেয়েও ভয়াবহ। নিয়মিত ইয়াবা সেবন করলে মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরন, নিদ্রাহীনতা, খিঁচুনি.এবং মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা যেতে পারে। ইয়াবা গ্রহণের ফলে দ্রুতগতির হৃৎস্পন্দনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত হারে ইয়াবা গ্রহণ হাইপারথাইরয়েডিজম বা উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রার কারণ হতে পারে। অভ্যস্ততার পর হঠাৎ ইয়াবার অভাবে সৃষ্টি হয় আত্মহত্যা প্রবণতা এবং হতাশা।
দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা খেলে স্মরণশক্তি কমে যায়, সিদ্ধান্তহীনতা শুরু হয় এবং কারও কারও ক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। অনেকে পাগল হয়ে যায়। হতাশাজনিত নানা রকম অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, এমনকি অনেকে আত্মহত্যাও করে থাকে। মস্তিষ্কের রক্তনালী ছিঁড়েও অনেকে মারা যান। অনেকে রাস্তায় দুর্ঘটনায় পতিত হন। কেউ কেউ টানা সাত থেকে ১০ দিন জেগে থাকেন।
Agartala media also reports that there was not so much drug trafficking in the state of Tripura, bordering Bangladesh, during the past two and a half decades of continuous Left Front rule, according to several government sources. Drug trafficking and cannabis cultivation in the state have increased tremendously since the BJP came to power in 2018.