মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলায় ঘটল এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা (Road Accident)। বাইক ও গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল মোট ৭ জনের, যাঁদের মধ্যে রয়েছে তিন মহিলা এবং এক শিশু। ঘটনাটি ঘটেছে একটি রাজ্য সড়কে। সেখানেই দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়৷
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে নাসিকের ইগাতপুরি এলাকার কাছে। একটি বাইকে করে ৫ জন যাত্রী যাচ্ছিলেন। সেই সময় একটি চার চাকার গাড়ি, সম্ভবত একটি SUV, দ্রুতগতিতে এসে বাইকটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। মুখোমুখি সংঘর্ষের তীব্রতায় বাইকটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং গাড়িটিও রাস্তার ধারে উলটে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন এবং আহতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও অ্যাম্বুল্যান্সে। ঘটনাস্থলেই ৬ জনের মৃত্যু হয়। বাকি এক জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকেও মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, মৃতদের মধ্যে রয়েছে ৩ জন মহিলা, ১ শিশু এবং ৩ জন পুরুষ। তাঁরা সকলেই একটি পরিবার বা আত্মীয় পরিজন হতে পারেন বলে প্রাথমিক অনুমান। তাঁদের বাড়ি নাসিক জেলারই একটি গ্রামীণ অঞ্চলে।
চোখে পড়েছে, গাড়িটির গতি ছিল অত্যন্ত বেশি এবং তা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা বাইকের উপরে উঠে যায়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, গাড়িচালক হয় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন, অথবা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিলেন। যদিও ঘটনার পর গাড়িচালক পলাতক, পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।
নাসিক জেলার পুলিশ সুপারিশ জানান, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা দোষীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেব। ইতিমধ্যেই গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং তার নম্বর প্লেটের ভিত্তিতে মালিকের সন্ধান চলছে।”
এই দুর্ঘটনা ফের একবার মহারাষ্ট্রের সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা তুলে ধরল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় স্ট্রিটলাইট নেই, পাশাপাশি গতিনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বা নজরদারির ব্যবস্থা নেই। অনেকেই বলেন, প্রায়ই রাতের বেলায় গাড়ি চালকেরা এই রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান।
এই দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক মাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেন বহু মানুষ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে এসে শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং দ্রুত তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
মহারাষ্ট্রে প্রতি বছর বহু মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। সচেতনতা, কড়া আইন প্রয়োগ এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি আরও জোরালো হল এই দুর্ঘটনার পর।