ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এক যুগান্তকারী অভিযানে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল আইএস (ISIS) জঙ্গিদের চক্র। পাঁচজন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। যাদের মধ্যে দু’জন রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির বিশেষজ্ঞ।
তদন্তকারী সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গিরা শুধুমাত্র বিস্ফোরণ ঘটানোর ছকই কষছিল না। বরং তরুণ প্রজন্মকে প্রলুব্ধ করে ‘খিলাফত মডেল’-এর নামে এক নতুন নাশকতা নেটওয়ার্ক দাঁড় করাচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাঁচি, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ ও মধ্যপ্রদেশে একসঙ্গে অভিযান চালানো হয়।
রাঁচি থেকে ধরা পড়ে আশার দানিশ, যে ছাত্র সেজে তাবারক লজ-এ ভাড়া থাকছিল।নদিল্লিতে গ্রেফতার হয় মুম্বাইয়ের দুই যুবক— আফতাব ও সুফিয়ান। এছাড়া হায়দ্রাবাদ ও মধ্যপ্রদেশ থেকে আরও দু’জনকে পাকড়াও করা হয়েছে, যদিও তাদের নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
অভিযানে উদ্ধার হয়েছে এমন সব উপকরণ, যেগুলো ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যে ছোট আকারের রাসায়নিক বোমা তৈরি সম্ভব। এগুলির মধ্যে রয়েছে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিড, সোডিয়াম বাইকার্বোনেট ও সালফার পাউডার, বল বিয়ারিং ও পিএইচ চেকার। এছাড়াও ধৃতদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একাধিক মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও গোপন তথ্যভাণ্ডার সম্বলিত ডিজিটাল ডিভাইস উদ্ধার হয়েছে।
তদন্তকারীদের দাবি, দানিশ ও আফতাব রাসায়নিক অস্ত্র বানাতে দক্ষ। অনলাইনে তারা বিদেশি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং তাদের নির্দেশেই কাজ চালাচ্ছিল। পাশাপাশি, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তরুণদের ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে ‘খিলাফত মডেল’-এর মাধ্যমে সংগঠনে টেনে আনার চেষ্টা চলছিল। তরুণদের কাছে চাকরি, নিরাপত্তা ও “ধর্মরক্ষার দায়িত্ব” এর মতো ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দেখানো হতো।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, রাসায়নিক অস্ত্র বানানোর মতো প্রযুক্তি হাতে পাওয়া নিঃসন্দেহে বিপজ্জনক বার্তা বহন করছে। “এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট—দেশে এখনও একাধিক স্লিপার সেল সক্রিয় এবং তাদের লক্ষ্যবস্তু জনবহুল এলাকা,” জানাচ্ছেন এক উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা আধিকারিক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গ্রেফতার কেবল বরফগলা শিলার মতো—পেছনে আরও বড় চক্র সক্রিয় থাকতে পারে। তাই গোয়েন্দা সংস্থা এখন সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। ভারতের মাটিতে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা আটকাতে এখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছে নিরাপত্তা বাহিনী।