জম্মু ও কাশ্মীরের বদগাম জেলায় শনিবার গভীর রাতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় (Budgam road accident) মৃত্যু হয়েছে চারজনের এবং আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। রাতের অন্ধকারে টাটা সুমো গাড়ি এবং একটি ডাম্পার ট্রাকের মধ্যে সংঘর্ষের পর এলাকার পরিবেশ হয়ে ওঠে শোকাভিভূত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত প্রায় ১০টা ৩০ মিনিটের সময় বদগামের পালার এলাকায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি যাত্রীবোঝাই টাটা সুমো দ্রুতগতিতে চলছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ডাম্পার ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্থানীয়রা দূর থেকে বিশাল শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার কাজে যোগ দেন।
দুর্ঘটনার পরপরই মোট নয়জন যাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যার মধ্যে চারজনকে চিকিৎসকেরা ‘ব্রট ডেড’ ঘোষণা করেন। বাকি পাঁচজনকে গুরুতর জখম অবস্থায় শ্রীনগরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে, ফলে চিকিৎসকেরা প্রয়োজনীয় বিশেষ নজর রাখছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে বদগাম জেলা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। ভাঙাচোরা টাটা সুমোটি প্রায় চেনার উপায় ছিল না গাড়িটির সামনের অংশ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। পুলিশ ডাম্পার ট্রাকটিকে জব্দ করেছে এবং ট্রাক চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতি এবং অন্ধকারে কম দৃশ্যমানতা এই দুর্ঘটনার কারণ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পালার এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই দুর্ঘটনাপ্রবণ। রাতে ভারী যানবাহনগুলির বেপরোয়া গতি, রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর অভাব এবং উপত্যকার শীতকালের কুয়াশা মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনেকেই বলেন, প্রশাসনকে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
শীতের রাতে রাস্তার ধারে কুয়াশার পরিমাণ ছিল প্রচুর। ফলে সামনে দেখা কঠিন হয়ে পড়েছিল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে রাস্তার পরিস্থিতি আরও খারাপ ছিল, যা দুর্ঘটনার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজ চলছে। পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক পরিচয় নিশ্চিত হলে নাম প্রকাশ করা হবে। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বিগত কয়েক বছরে বদগাম জেলা বেশ কয়েকটি বড় সড়ক দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে বলেছেন যে পাহাড়ি রাস্তা, আবহাওয়া এবং অদক্ষ বা বেপরোয়া ড্রাইভিং মিলে বারবার মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। শনিবারের এই দুর্ঘটনা আবারও সামনে এনে দিল সড়ক নিরাপত্তার গুরুতর প্রশ্ন।
এলাকার মানুষদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রশাসন মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছে এবং আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার নিশ্চয়তা দিয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা রাতের পাহাড়ি রাস্তায় সতর্কতার গুরুত্ব আরও একবার মনে করিয়ে দিল।


