প্রয়াগরাজ, যা বিশ্বের অন্যতম ধর্মীয় স্থান কুম্ভ মেলা এবং পুণ্যস্নানের জন্য পরিচিত, বর্তমানে ভয়াবহ যানজটের মধ্যে আছে। বিশেষত, শেষ দফার শাহি স্নান উপলক্ষে রবিবার থেকে সড়কপথে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে শহরের বহু রাস্তাঘাট।
যেখানে পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থী এবং তীর্থযাত্রী প্রয়াগরাজ পৌঁছানোর জন্য সড়কপথ ব্যবহার করছেন, সেখানে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, রবিবার সকাল পর্যন্ত যানজটের দৈর্ঘ্য পৌঁছেছে ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত।
প্রয়াগরাজে চলতি মাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কুম্ভ মেলার শেষ দফার শাহি স্নান, যেখানে দেশ ও বিদেশের লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী অংশগ্রহণ করছেন। এই উপলক্ষে শহরের সমস্ত সড়কপথে প্রচুর ভিড়ের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে বিশেষত সড়কপথে পুণ্যার্থীদের চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। সড়কপথে ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের পাশাপাশি, রাতভর গাড়িতে বসে থাকা পুণ্যার্থীদের অভিযোগ, যানজট আরও বাড়তে থাকায় তাদের চলাচল করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
যানজটের কারণে অনেক পুণ্যার্থীকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কপথে আটকে থাকতে হয়েছে, এমনকি অনেকেরকে গাড়িতে রাত কাটাতে হয়েছে। কিছু পুণ্যার্থী জানিয়েছেন, শনিবার থেকেই যানজট বাড়তে শুরু করেছিল, এবং রবিবার সকালে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। যানজটের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি পুণ্যার্থীদের সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ ২৬ ফেব্রুয়ারি, কুম্ভের শেষ দফার শাহি স্নান অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনটি শহরে ব্যাপক ভিড় ও যানজটের সৃষ্টি করবে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রয়াগরাজ প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করেছে। পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় রেলস্টেশন, যা কুম্ভ মেলায় আগত পুণ্যার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার, সেখানে বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ এবং সিআরপিএফ বাহিনীর সদস্যরা স্টেশন চত্বরে তল্লাশি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। এতে সুষ্ঠুভাবে যাত্রীদের চলাচল নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে এই ব্যবস্থা।
পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে, আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে বিশাল সংখ্যক চিকিৎসক এবং স্বেচ্ছাসেবী কর্মীও মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু যানজট এবং ভিড়ের কারণে পৌঁছানোর সময় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মানুষের চাহিদা এবং নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ একাধিক পরিকল্পনা তৈরি করেছে।
রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছেন, কুম্ভ মেলা শেষ হওয়ার পর যানজট এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হবে। তবে তা ছাড়া পুণ্যার্থীদের যাত্রা যেন নির্বিঘ্নে চলতে পারে, সে জন্য সকলেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়াও, কুম্ভ মেলার এই বিশাল ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষ সমবেত হয়েছে। শেষ দফার শাহি স্নানে যোগ দিতে আসা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন দিন-রাত কাজ করে চলেছে।