Illegal Immigrants in Mumbai: মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বইয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ জন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রবিবার মুম্বইয়ের ঘাটকোপার এলাকা থেকে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহারাষ্ট্র পুলিশ এবং বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এই গ্রেফতারি সম্পন্ন করেছে।
কীভাবে ধরা পড়ল অনুপ্রবেশকারীরা?
মুম্বই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘাটকোপার এলাকায় সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তির গতিবিধি নজরে আসে। তাদের পরিচয়পত্র চাওয়া হলে তারা সঠিক নথি দেখাতে ব্যর্থ হয়। পরে তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানা যায়, তারা অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ আরও অভিযান চালিয়ে অন্যান্য অনুপ্রবেশকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করে।
২৪ ঘণ্টায় ২২ জন গ্রেফতার
গত ২৪ ঘণ্টায় মুম্বইয়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ২২ জন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশি নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এরা মুম্বইয়ে বিভিন্ন নির্মাণস্থলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল এবং বেশ কয়েকজনের ভুয়া নথি রয়েছে।
পুলিশ কী বলছে?
মুম্বই পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা নিয়মিতভাবে শহরে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সন্ধান চালাচ্ছি। এই অনুপ্রবেশকারীরা প্রায়ই ভুয়া পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কাজ খুঁজে নেয়। আমরা তাদের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় দালালদেরও খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।”
কেন বাড়ছে অনুপ্রবেশ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্তবর্তী এলাকায় সুরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর এবং স্থানীয় দালালদের সহযোগিতার কারণে এমন ঘটনা ঘটছে। অনেকেই ভারতে প্রবেশ করে অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য এবং এখানে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হয়। মুম্বইয়ের মতো শহরে নির্মাণ খাত এবং ঘরোয়া কাজের জন্য এ ধরনের শ্রমিকদের চাহিদা রয়েছে।
আইনি ব্যবস্থা
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিক আইন, ১৯৪৬ এবং পাসপোর্ট (ভারতে প্রবেশ) আইন, ১৯২০-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, স্থানীয় দালাল এবং চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদন্ত জারি রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া
অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেফতারের ঘটনায় মুম্বইয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ কেউ এদের দ্রুত দেশ থেকে বের করে দেওয়ার দাবি তুলেছেন, আবার কেউ এদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এ ধরনের অনুপ্রবেশ শহরের নিরাপত্তা এবং অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
এই ঘটনার পর মুম্বই পুলিশ এবং রাজ্য সরকার সীমান্ত সুরক্ষার ওপর আরও জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভুয়া নথি ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করতে বিশেষ অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় লোকালয়ে বাড়িভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকদের পরিচয় যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুম্বইয়ে এক দিনে ২২ জন অনুপ্রবেশকারীর গ্রেফতারের ঘটনা শহরের নিরাপত্তার প্রশ্নে বড় ইঙ্গিত দেয়। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি এবং স্থানীয় পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। একই সঙ্গে, স্থানীয় বাসিন্দাদেরও এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দেখলে পুলিশকে অবহিত করতে হবে।
এই ঘটনাগুলি শুধুমাত্র মুম্বই নয়, বরং সারা দেশের নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার এবং প্রশাসনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।