তিরুঅনন্তপুরম: কেরালার কোঝিকোড় জেলায় বার্ড ফ্লু-এর (Bird Flu) প্রকোপ দেখা গিয়েছে। বুধবার একটি সরকারি পোল্ট্রি ফার্মে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের কারণে ১৮০০ মুরগি মারা গেছে। এই পোল্ট্রি ফার্মটি জেলা পঞ্চায়েত দ্বারা পরিচালিত হয়। মৃত মুরগির মধ্যে H5N1 ভেরিয়েন্ট পাওয়া গেছে বলে সূত্র থেকে জানা গেছে। কেরালার পশুপালন মন্ত্রী জে চিঞ্চু রানি কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা এবং প্রোটোকলের অধীনে অবিলম্বে সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ বলে মনে হচ্ছে তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নমুনাগুলি ভোপালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিউরিটি অ্যানিমাল ডিজিজ ল্যাবে পাঠানো হবে। যে পোল্ট্রি ফার্মে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেখানে প্রায় ৫০০০ মুরগি রয়েছে, যার মধ্যে ১৮০০টি সংক্রমণের কারণে মারা গেছে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ে মৃত মুরগি নিরাপদে দাহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, কেরালার তিরুঅনন্তপুরম জেলাতেও সম্প্রতি বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে দুটি গ্রামে প্রায় ৩০০০ মুরগি মারা হয়েছে। একটি ব্যক্তিগত পোল্ট্রি ফার্মের কিছু মুরগি বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হয়েছিল, যার পরে পশুপালন বিভাগকে সতর্ক করা হয়েছিল এবং সংক্রমণের বিস্তার রোধ করার জন্য মুরগিগুলিকে হত্যা করা হয়েছিল। কেরালার স্বাস্থ্য দফতর সংক্রমণের বিস্তার রোধ ও বন্ধ করার নির্দেশনাও জারি করেছে। গত বছরও বার্ড ফ্লু সংক্রমণের কারণে কেরালায় প্রচুর পাখি মারা গিয়েছিল।
বার্ড ফ্লু একটি অত্যন্ত সংক্রামক রোগ, যা গৃহপালিত এবং বন্য উভয় পাখিকেই প্রভাবিত করে। এর সংক্রমণ মানুষের মধ্যেও ঘটে, তবে এখন পর্যন্ত এটি মানুষের মধ্যে খুব কমই দেখা গেছে। বার্ড ফ্লু প্রথম ১৯৯৬ সালে শনাক্ত হয় এবং ২০০৫ সালে বিশ্বের অনেক দেশে এর বিপর্যয় দেখা যায়। ২০১৪ সালে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ এড়াতে প্রায় ৪ কোটি পাখি মারা হয়েছিল। বেশিরভাগ মানুষের সংক্রমণ বার্ড ফ্লু-এর H7N9 এবং H5N1 স্ট্রেইনের কারণে হয়েছে।
মনে করা হচ্ছে, অনেক পরিযায়ী পাখি প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কেরালায় আসে, যা রাজ্যে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার কারণ বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে কেরালার কুত্তানাদ হাঁস-মুরগির জন্য পরিচিত, যেখানে পরিযায়ী পাখি বেশির ভাগই আসে। কেরালায় হাঁস-মুরগি পালন করা হয় বৃহৎ পরিসরে এবং প্রায় ৪ লক্ষ পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। এই কারণেই কেরালায় বার্ড ফ্লু সংক্রমণের বেশি ঘটনা দেখা যায়।