সংসদে মল্লিকার্জুন খড়গে এবং রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে চলছে নির্বাচন কমিশন বিরোধী প্রতিবাদ (Election Commission)। সোমবার নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা থাকলেও দিল্লি পুলিশের তৎপরতায় তা ভেস্তে যায়। একাধিক বিরোধী সংসদ আটক হন এবং তার অব্যবহিত পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন!
আজ মঙ্গলবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সহ আরো অনেক বিরোধীদের সাদা টি শার্ট পরে প্রতিবাদে অংশ নিতে দেখা যায়। এই সাদা টি শার্টের উপরেই একটি ছবি চোখে পড়েছে। এই ছবিটি আর কারুর নয় এই দেশের ১২৪ বছর বয়েসি এক ভোটারের যার নাম মিন্টা দেবী। টি শার্টে তার নাম এবং ছবি ব্যবহারে বেজায় চটেছেন তিনি।
মিন্টা দেবী বিরোধীদের প্রতিবাদে তাঁর ছবি ব্যবহারের বিরোধিতা করে বলেন, “প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বা রাহুল গান্ধী আমার কে? কে তাঁদের আমার ছবি টি-শার্টে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে? আমার বয়স নিয়ে তারা কেন আমার শুভাকাঙ্ক্ষী হচ্ছেন? এটা ঠিক নয়।” তিনি আরও বলেন, “আমি জানতাম না যে আমার নাম এভাবে রাজনীতিতে ব্যবহার করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের ভুলের জন্য মিন্টা তাঁকে ‘ঠাকুমা’ বানানোর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি হাসতে হাসতে বলেন, “নির্বাচন কমিশন আমাকে ঠাকুমা বানিয়ে দিয়েছে। আমার বয়স ৩৫ বছর, আর আমি প্রথমবার ভোট দেওয়ার জন্য উৎসাহিত ছিলাম। কিন্তু ভোটার তালিকায় আমার বয়স ১২৪ বছর দেখানো হয়েছে।
এই ভুলের জন্য আমি দায়ী নই।” মিন্টা দেবীর এই ঘটনা সংসদে ইন্ডিয়া ব্লকের বিরোধী সাংসদদের প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। তারা মিন্টা দেবীর ছবি ও নাম সম্বলিত ‘১২৪ নট আউট’ লেখা টি-শার্ট পরে বিহারের বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই ঘটনা ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ত্রুটি এবং রাজনৈতিক প্রতিবাদে ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের নৈতিকতা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিহারের নির্বাচনের জন্য প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় মিন্টা দেবীর জন্মসাল ১৯০০ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে, যার ফলে তাঁর বয়স ১২৪ বছর দেখানো হয়েছে। তবে, মিন্টা দেবী জানিয়েছেন, তাঁর আধার কার্ডে জন্মসাল ১৯৯০ উল্লেখ রয়েছে, এবং তিনি সেই তথ্য অনুযায়ী অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন ফর্ম পূরণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, “আমি বুথ লেভেল অফিসারের (বিএলও) জন্য অপেক্ষা করেছিলাম, কিন্তু কেউ আসেনি। তাই আমি নিজেই অনলাইনে ফর্ম জমা দিয়েছি। আমার আধার কার্ডে বয়স ১৯৯০, কিন্তু কীভাবে তা ১৯০০ হয়ে গেল, আমি জানি না।” তিনি মজা করে বলেন, “যদি সরকার আমাকে ১২৪ বছরের মনে করে, তাহলে আমাকে বৃদ্ধাভাতা দেওয়া উচিত।”
আমি চাই আমার তথ্য সংশোধন করা হোক।” মিন্টা দেবীর এই প্রতিক্রিয়া এক্স প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “মিন্টা দেবী তাঁর ছবি ব্যবহারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। বিরোধীদের এই ধরনের রাজনীতি কি নৈতিকভাবে সঠিক?”প্রশাসনের পদক্ষেপ
সিওয়ান জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মিন্টা দেবীর ভোটার তালিকার ত্রুটি সম্পর্কে ১০ আগস্ট তাঁর কাছ থেকে একটি আবেদন পাওয়া গেছে।
কৃষি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত! ক্রপইন-এর নতুন এআই-চালিত ফসল পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম
প্রশাসনের বিবৃতিতে বলা হয়, “বিএলও’র মাধ্যমে ত্রুটি চিহ্নিত হওয়ার পর মিন্টা দেবী সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। এটি দাবি ও আপত্তির পর্যায়ে নিষ্পত্তি করা হবে।” নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এসআইআর প্রক্রিয়া ২০০৪ সালের পর নিয়মিত না হওয়ায় ভোটার তালিকায় ত্রুটি দেখা দিয়েছে, এবং এই প্রক্রিয়া জালিয়াতি দূর করার জন্যই শুরু হয়েছে।