IIT: তীব্র চাপ! ২০ বছরে ‘আত্মহত্যা’ ১১৫ আইআইটি পড়ুয়ার

গত ২০ বছরে আত্মহত্যা করেছেন ১১৫ জন আইআইটি পড়ুয়া। একটি আরটিআই-এর জবাবে পাওয়া নথি থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। আইআইটি কানপুরের প্রাক্তনী তথা গ্লোবাল আইআইটি…

IIT

গত ২০ বছরে আত্মহত্যা করেছেন ১১৫ জন আইআইটি পড়ুয়া। একটি আরটিআই-এর জবাবে পাওয়া নথি থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। আইআইটি কানপুরের প্রাক্তনী তথা গ্লোবাল আইআইটি অ্যালামনাই (প্রাক্তনী) সাপোর্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ধীরজ সিং এই আরটিআইটি করেছিলেন। এই ১১৫ জনের মধ্যে ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল আইআইটি ক্যাম্পাসের মধ্যেই। ৫৬ জন গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আইআইটি মাদ্রাজে সবচেয়ে বেশি – ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আইআইটি কানপুরে ১৮ জন, আইআইটি খড়গপুরে ১৩ জন এবং আইআইটি বম্বেতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

   

২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আইআইটি বম্বের ছাত্র দর্শন সোলাঙ্কির মৃত্যুর পর গত ২০ বছরে দেশজুড়ে আইআইটিয়ানদের মৃত্যুর তথ্য চেয়ে আরটিআই করেন ধীরজ। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনে থাকা উচ্চশিক্ষা বিভাগ প্রাথমিকভাবে আমার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। আমাকে পৃথক প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক আরটিআই করতে বলে। ফের আবেদনের পর মন্ত্রক সমস্ত আইআইটিকে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

তবে গত আট মাসে দেশের ২৩টি আইআইটির মধ্যে মাত্র ১৩টি আইআইটি এই সংক্রান্ত তথ্য ধীরজ সিংকে দিয়েছে। তিনি বলেন, আরটিআইয়ের জবাব থেকে আমি কিছু তথ্য পেয়েছি। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর পরিসংখ্যান এবং সংসদে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তরসহ প্রামাণিক সূত্র থেকেও তথ্য সংগ্রহ করেছি।

গত কয়েক বছরে আইআইটি পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা খবরের শিরোনামে এসেছে। আইআইটি পড়ুয়াদের উপর চাপ কমাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন সিং। তিনি বলেন, আমি শুধু দেশের প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের উপর প্রচণ্ড চাপের কথা তুলে ধরেছি। পড়ুয়া, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের উপর চাপ কমাতে আইআইটি শিক্ষার সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।

সোলাঙ্কির মৃত্যুর পর বিভিন্ন আইআইটি ছাত্র সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৬১ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, পড়াশোনার চাপের জেরেই ছাত্রছাত্রীদের মৃত্যু হয়েছে। এরপর রয়েছে চাকরির অনিশ্চয়তা (১২ শতাংশ), পারিবারিক সমস্যা (১০ শতাংশ) এবং হয়রানি (৬ শতাংশ)। ১১ শতাংশ শিক্ষার্থী ‘অন্যান্য কারণ’-কে দায়ী করেছেন।

সোলাঙ্কির মৃত্যুর পরে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। শারীরিক সুস্থতা, খেলাধুলার প্রচার, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরামর্শ দেয় ইউজিসি। 

আত্মহত্যা ঠেকানোর জন্য পদক্ষেপ করার বিষয়ে আইআইটিগুলিকে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকারও। আইআইটি বম্বে ইতিমধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোলাঙ্কির আত্মহত্যার পরে গত বছর আইআইটি-বম্বে সেনেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতি বছর একটি করে বিষয় বাদ দেওয়া হবে। 

এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আইআইটি বম্বের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের ফলে নবাগত পড়ুয়াদের উপর থেকে চাপ কমবে। ক্যাম্পাস লাইফের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁদের আরও অবসর সময় দেওয়া সম্ভবপর হবে।