‘জঙ্গি নেতা মুনির কে প্রতিহত করবে ভারত’, বিস্ফোরক বিজেপি নেতা

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের (Munir) ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হুমকির প্রেক্ষাপটে ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) নেতা হেমাঙ্গ জোশী তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি আসিম…

BJP leader slams Munir

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের (Munir) ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হুমকির প্রেক্ষাপটে ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) নেতা হেমাঙ্গ জোশী তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি আসিম মুনিরকে “সেনাপ্রধান নয়, জঙ্গি নেতা” হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, “তাঁর বক্তব্য সবসময় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর কাজ করে। আমরা দেখেছি, তাঁর বক্তব্যের পর অনেক ঘটনা ঘটেছে। ইতিহাস তার প্রমাণ।

তবে, আমি মনে করি, যখনই তারা এই ধরনের কাজ করার চেষ্টা করবে, ভারত যথাযথ জবাব দেবে। তারা কোথাও ভারতের ক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।” এই মন্তব্য ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির সম্প্রতি আমেরিকার ফ্লোরিডায় সেন্টকম কমান্ডারের অবসর গ্রহণ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন।

   

তিনি বলেন, “আমরা একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। যদি আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়, তবে আমরা অর্ধেক বিশ্বকে আমাদের সঙ্গে ধ্বংস করে দেব।” এছাড়া, তিনি সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে ভারতের বাঁধ নির্মাণের সমালোচনা করে বলেন, “ভারত বাঁধ তৈরি করলে আমরা ১০টি মিসাইল দিয়ে তা ধ্বংস করে দেব।” এই বক্তব্য আমেরিকার মাটিতে দেওয়া হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

বিজেপি নেতা হেমাঙ্গ জোশী মুনিরের এই হুমকিকে “গীদড়ভাবকি” হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আসিম মুনিরের মতো নেতারা বারবার এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন। ইতিহাসে আমরা দেখেছি, তাঁর বক্তব্যের পর সীমান্তে উত্তেজনা বা জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ভারত এখন আর পিছু হটবে না।

আমাদের সামরিক শক্তি এবং কৌশলগত প্রস্তুতি যেকোনও হুমকির জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।” তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তানের এই ধরনের হুমকি তাদের নিজেদের দুর্বলতার প্রকাশ। ভারতের ক্ষমতাকে তারা অবমূল্যায়ন করলে ভুল করবে।”

আসিম মুনিরের এই বক্তব্য ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ইতিমধ্যে উত্তপ্ত সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে। সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনাকে পাকিস্তান বারবার “চুক্তির লঙ্ঘন” হিসেবে অভিহিত করেছে।

মুনিরের এই হুমকি এই বিরোধকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এছাড়া, ২০২৪ সালে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্য ভারতের জন্য উদ্বেগজনক।

Advertisements

ভারত সরকার এখনও মুনিরের বক্তব্যে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে, বিজেপি নেতা হেমাঙ্গ জোশীর মন্তব্য ভারতের কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়। ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং সরকার বারবার বলেছে যে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার বিষয়ে কোনও আপস করা হবে না। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারতের বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক এবং ২০১৬ সালের সার্জিকাল স্ট্রাইক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর নীতির প্রমাণ।

হেমাঙ্গ জোশী বলেন, “ভারতের ইতিহাস এবং বর্তমান শক্তি স্পষ্ট করে দেয় যে, আমরা যেকোনও হুমকির জবাব দিতে সক্ষম। পাকিস্তানের উচিত তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান করা, বাইরের দিকে আঙুল তোলার আগে।”

মুনিরের এই হুমকি আমেরিকার মাটিতে দেওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে, পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। আমেরিকার কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি, তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে পারে।

ভারতের সামাজিক মাধ্যমে মুনিরের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। বিজেপি সমর্থকরা হেমাঙ্গ জোশীর মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে বলছেন, “ভারত এখন আর পাকিস্তানের হুমকির সামনে নতি স্বীকার করবে না।” বিরোধী দলগুলি এখনও এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এক্স-এ লিখেছেন, “পাকিস্তানের এই ধরনের হুমকি তাদের নিজেদের দুর্বলতার প্রকাশ। ভারতের সরকারের উচিত এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া।”

‘তুমকো সাথ লেকে ডুবেঙ্গে..’: গানের সুরে কংগ্রেস-তৃণমূলকে বিঁধলেন শমীক

আসিম মুনিরের পারমাণবিক হুমকি এবং হেমাঙ্গ জোশীর বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। ভারতের দৃঢ় অবস্থান এবং সামরিক প্রস্তুতি পাকিস্তানের হুমকির জবাবে দেশের আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে। তবে, এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।