Tanya Mittal: বিগ বসে তানিয়া মিত্তালের ১৫০ বডিগার্ড ও ৮০০ শাড়ির দাবি ভাইরাল

সলমান খানের হোস্ট করা রিয়েলিটি শো বিগ বস ১৯-এর প্রিমিয়ার হওয়ার পর থেকেই কনটেস্ট্যান্ট তানিয়া মিত্তাল (Tanya Mittal) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিনই হেডলাইন তৈরি করছেন। এই…

Tanya Mittal Bigg Boss 19

সলমান খানের হোস্ট করা রিয়েলিটি শো বিগ বস ১৯-এর প্রিমিয়ার হওয়ার পর থেকেই কনটেস্ট্যান্ট তানিয়া মিত্তাল (Tanya Mittal) সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিনই হেডলাইন তৈরি করছেন। এই এন্ট্রেপ্রেনিউর এবং স্পিরিচুয়াল কনটেন্ট ক্রিয়েটর তার ধনী লাইফস্টাইলের দাবিগুলোর জন্য ট্রেন্ডিং হয়ে উঠেছেন। বাড়িতে ১৫০ জন বডিগার্ড থেকে শুরু করে কিচেন ক্যাবিনেটে লিফট পর্যন্ত—তানিয়ার বিভিন্ন অতিরঞ্জিত দাবি তাকে মেমের ম্যাটেরিয়াল বানিয়ে দিয়েছে। শো-তে তার স্টেটমেন্টগুলো নিয়ে ট্রোলাররা তাকে সফট টার্গেট করে তুলেছে।

তানিয়া মিত্তালের জন্ম ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০০ সালে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে হয়েছে। তিনি ভিদ্যা পাবলিক স্কুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে চণ্ডীগড় ইউনিভার্সিটি থেকে আর্কিটেকচারে গ্র্যাজুয়েশন করেন। ২০১৮ সালে তিনি মিস এশিয়া টুরিজম ইউনিভার্সের ক্রাউন জিতে ইনফ্লুয়েন্সার স্পেসে প্রবেশের দরজা খুলে দেন। তার দাবি অনুসারে, বাড়িতে ১৫০ জন বডিগার্ড এবং ৮০০ জন হাউস স্টাফ রয়েছে, যা ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে গেছে। অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—স্নান করার আগে কী নেবেন তা না জানা, মহাকুম্ভে তার বডিগার্ডরা লোকজনকে বাঁচানো, পরিবারের সবাই তাকে ‘বস’ বলে ডাকা, এবং তার বাড়িকে ৫-স্টার বা ৭-স্টার হোটেলের সাথে তুলনা করা। তিনি দাবি করেছেন যে তার বাড়ির একটা পুরো ফ্লোর শুধু তার কাপড়ের জন্য। বিগ বস শো-তে প্রবেশের সময় তিনি ৮০০টি শাড়ি, সাত বাক্স গয়না এবং দুটি সুটকেস নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু এসব দাবির জন্য তিনি ট্রোলের শিকার হয়েছেন, যারা তাকে তার ধনসম্পদ এবং লাইফস্টাইল নিয়ে মিথ্যা বলার অভিযোগ করেছে।

   

Also Read | 

সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা তার বাড়ির ভিডিও শেয়ার করে তাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। প্রাক্তন বিগ বস কনটেস্ট্যান্ট অভিষেক মালহান তার পোস্টগুলো দেখিয়ে বলেছেন যে তার বাড়ি একটা সাধারণ মিডল ক্লাসের বাড়ি, যা তার ‘৫ স্টার হোটেল’ এর দাবির সাথে মিলে না। নেটিজেনরা তার ফ্যাক্টরির ভিডিও খুঁজে বের করে তাকে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে তার দাবিগুলো অতিরঞ্জিত। এই কনট্রোভার্সিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং তানিয়াকে হাইপোক্রিসির অভিযোগে ফেলেছে। কেউ কেউ তার পুরনো ভিডিও বের করে দেখিয়েছে যে তিনি আগে ভিন্নভাবে তার লাইফস্টাইলের কথা বলেছিলেন।

 

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

 

A post shared by Vaidehi Tiwari 🌷 (@vaidehitiwari07)

তানিয়া মিত্তালের বিজনেস অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গেলে, তিনি ‘হ্যান্ডমেড উইথ লাভ বাই তানিয়া’ নামে নিজের ব্র্যান্ড শুরু করেছেন, যা হ্যান্ডব্যাগ, হ্যান্ডকাফস এবং শাড়ির সফল বিজনেস। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, তিনি মাত্র ৫০০ টাকা দিয়ে এই বিজনেস শুরু করেছিলেন। ইনস্টাগ্রামে তার ২.৫ মিলিয়নেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে, যেখানে তিনি মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে কাজ করেন, স্পিরিচুয়াল স্টোরি শেয়ার করেন এবং লাইফস্টাইল পোস্ট করেন। তিনি সোশ্যাল কজেসে জড়িত, যেমন গার্ল আপ অর্গানাইজেশনের সাথে কাজ করে মহিলাদের সমানাধিকার এবং মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন নিয়ে কথা বলেন।

গোয়ালিয়রের কাছে একটা গ্রাম অ্যাডপ্ট করেছেন এবং দুটি শিশুর শিক্ষা ও মৌলিক চাহিদার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন। মহিলাদের স্বাস্থ্য প্রকল্পে কাজ করছেন। বিগ বস ১৯-এর সাম্প্রতিক এপিসোডে তানিয়া তার জার্নি তুলে ধরেছেন, যেখানে কনটেস্ট্যান্ট কুনিকা সদানন্দ তার মায়ের উপর আক্রমণ করার পর তিনি বলেছেন, “আমার বাবা আমাকে এবং আমার মাকে মারতেন, মা আমাকে বাঁচাতেন। অনেক কষ্ট করে এখানে পৌঁছেছি। বিজনেস শুরু করতে অনেক অসুবিধা হয়েছে, বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুমতি নিতে হয়েছে। ১৯ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যেত, তখন আমি মরে যেতে চেয়েছিলাম।” এই রিভিলেশন তার সেল্ফ-মেড উইমেন হিসেবে স্ট্রাগলের গল্প তুলে ধরেছে।

Advertisements

তানিয়া মিত্তালের নেট ওয়ার্থ নিয়ে বলতে গেলে, টাইমস নাউ-এর রিপোর্ট অনুসারে তার মাসিক আয় ৬ লাখ টাকার বেশি। তার আয়ের প্রধান সোর্স ব্র্যান্ড কোলাবরেশন, এন্ডোর্সমেন্ট এবং বিভিন্ন বিজনেস থেকে আসে। রিপোর্টগুলো অনুসারে, তার অনুমানিত নেট ওয়ার্থ প্রায় ২ কোটি টাকা, যা তাকে বিগ বস ১৯-এর সবচেয়ে ধনী এন্ট্রেপ্রেনিউরদের একজন করে তুলেছে। কিছু রিপোর্টে এটি ১২-১৫ কোটি টাকা বলা হয়েছে, কিন্তু সাধারণত ২ কোটি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তিনি অনেক লাক্সারিয়াস কার, হাই-এন্ড ব্র্যান্ডেড শাড়ি এবং অন্যান্য দামি আইটেমের মালিক। তার ইনস্টাগ্রাম বায়োতে তিনি নিজেকে ‘সবচেয়ে যুবতী মিলিয়নিয়ার’ বলে উল্লেখ করেছেন। এই ধনসম্পদ তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রেজেন্স এবং বিজনেস সাকসেসের ফল।

তানিয়ার ফ্যামিলি ইনভলভমেন্ট নিয়ে বললে, তার বাবা অমিত মিত্তাল একজন সফল বিজনেসম্যান, কিন্তু স্পটলাইট থেকে দূরে থাকেন। ইনস্টাগ্রামে তানিয়ার টিমের শেয়ার করা স্টেটমেন্টে তার পিতামাতা তার শো-তে দেখার মিক্সড ইমোশনস প্রকাশ করেছেন। “আমরা আমাদের তানিয়াকে দেশের সবচেয়ে বড় রিয়েলিটি শো-তে দেখে যে মিক্সড ইমোশন অনুভব করছি তা বর্ণনা করতে পারব না। প্যারেন্টস হিসেবে তার হার্ট জিতে নেওয়া দেখে আমরা গর্বিত, কিন্তু একইসাথে তাকে টার্গেট করা, ক্রুয়েল কথা বলা দেখে কষ্ট হয় যারা তার হার্ট জানে না।” স্টেটমেন্টে বলা হয়েছে, “যারা প্রশ্ন করছে বা অ্যালেগেশন করছে, তাদের অনুরোধ—তার জার্নি শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাজমেন্ট করবেন না। আপনাদের রিলস এবং অ্যালেগেশন অ্যাটেনশন দেবে, কিন্তু লাইফটাইম স্কার লিভ করবে। দয়া করে আমাদের ফ্যামিলিকে এর বাইরে রাখুন। এটা আমাদের জন্য খুব কঠিন সময়। আমরা কখনো ভাবিনি যে আমাদের লাভ দিয়ে বড় করা মেয়েকে এমন নেগেটিভিটির শিকার হতে হবে। প্রত্যেক কঠিন কথা আমাদেরও কাটে। আমরা আশা করি হিউম্যানিটি এবং কাইন্ডনেস প্রিভেল করবে। আমরা তানিয়ার পাশে আছি, লাভ এবং ফেইথ নিয়ে। উই লাভ ইউ, স্টে স্ট্রং লাইক দ্য বস উই রেইজড ইউ টু বি।”

এই স্টেটমেন্ট ফ্যামিলির সাপোর্ট দেখিয়েছে এবং নেটিজেনদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে যাতে তারা তানিয়ার জার্নি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। বিগ বস ১৯-এ তানিয়ার এন্ট্রি তার ক্যারিয়ারের একটা বড় স্টেপ, যেখানে তার স্পিরিচুয়াল পডকাস্ট এবং ফিলানথ্রপিক ওয়ার্কও হাইলাইট হয়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রায়াগরাজ মহাকুম্ভ স্ট্যাম্পেডে তিনি জড়িয়ে পড়েন, যেখানে ৮০-এর বেশি লোক মারা যান। তিনি দাবি করেছেন যে তার টিম লাইভস সেভ করার চেষ্টা করেছে। এই ঘটনা তার লাইফের একটা ড্রাম্যাটিক টার্নিং পয়েন্ট। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ২.৬ মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে, যেখানে তিনি মিস এশিয়া ২০১৮, এন্ট্রেপ্রেনিউর, পডকাস্টার এবং কালচারাল এক্সপ্লোরার হিসেবে নিজেকে ডিফাইন করেছেন। তার বিজনেস ‘হ্যান্ডমেড উইথ লাভ বাই তানিয়া’ সফলতার শিখরে, যা হ্যান্ডব্যাগ এবং শাড়ির মতো প্রোডাক্ট বিক্রি করে। তানিয়া ১৯ বছর বয়সে এন্ট্রেপ্রেনিউরশিপ শুরু করেছিলেন, যা তার সেল্ফ-মেড ইমেজকে শক্তিশালী করে।

বিগ বস হাউসে তার অ্যাটিটিউড—সবাইকে ‘বস’ বলে ডাকার অভ্যাস—হাউসমেটদের অস্বস্তিকর করেছে। হোস্ট সলমান খানও ওয়েকএন্ড কা বারে তাকে ‘বস’ বলে ডেকেছেন। তার ৮০০ শাড়ি নিয়ে এন্ট্রি একটা ক্লেভার ব্র্যান্ডিং মুভ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ তিনি দাবি করেছেন যে শো-তে প্রতিদিন তিনটা শাড়ি চেঞ্জ করবেন। এই সিজনের অন্য কনটেস্ট্যান্টদের সাথে তুলনায় তার নেট ওয়ার্থ তাকে রিচেস্টদের মধ্যে রাখে, যদিও কিছু রিপোর্টে বলা হয়েছে যে তিনি সবচেয়ে ধনী নন। তার পুরনো ভিডিওগুলোতে কিছু হাইপোক্রিসি দেখা গেছে, যেমন অ্যাকট্রেস হওয়ার বিরুদ্ধে কথা বলা কিন্তু শো-তে অংশ নেওয়া।

ফ্যানরা তার জন্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে—কেউ তার স্ট্রাগলের গল্পকে সাপোর্ট করছে, কেউ তার দাবিগুলোকে ফেক বলে ট্রোল করছে। বিগ বস ১৯-এ তার জার্নি এখনও চলছে, এবং এটি তার ক্যারিয়ারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে কি না তা দেখার বিষয়। সামগ্রিকভাবে, তানিয়া মিত্তাল একটা ইউনিক মিক্স অফ গ্ল্যামার এবং গ্রিটের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যা বিগ বসের ড্রামাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।