টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee) তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি ফিটনেস এবং স্টাইলের জন্যও সবসময় শিরোনামে থাকেন। ২০২৫ সালে তাঁর ফিটনেস রহস্য নিয়ে ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ তুঙ্গে। সম্প্রতি তাঁর ইউটিউব ভ্লগ এবং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে প্রকাশিত ওয়ার্কআউট রুটিন এবং ডায়েট প্ল্যান নিয়ে চর্চা চলছে। শ্রাবন্তীর এই ফিটনেস যাত্রা শুধু তাঁর ভক্তদেরই নয়, ফিটনেস উৎসাহীদেরও অনুপ্রাণিত করছে। তাঁর নতুন ভ্লগগুলো বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, কীভাবে তিনি ব্যস্ত শিডিউলের মধ্যেও শরীরকে ফিট রাখছেন। এই প্রতিবেদনে আমরা শ্রাবন্তীর ফিটনেস রহস্যের গভীরে যাচ্ছি।
শ্রাবন্তীর ফিটনেস যাত্রা
শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর ফিটনেসের জন্য প্রশংসিত। তাঁর ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত ওয়ার্কআউট ভিডিও পোস্ট করেন, যা ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। ২০২৩ সালে তাঁর একটি ওয়ার্কআউট ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে তিনি অ্যানিমাল ফ্লো এবং হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT) করছিলেন। ২০২৫ সালে তাঁর নতুন ইউটিউব ভ্লগগুলোতে দেখা যাচ্ছে, তিনি আরও বৈচিত্র্যময় এবং কঠিন ব্যায়ামে মনোনিবেশ করছেন। তাঁর ট্রেনারের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি, শ্রাবন্তী তাঁর ভ্লগে ফিটনেস টিপস এবং ডায়েট প্ল্যান শেয়ার করছেন, যা সাধারণ মানুষের জন্য অনুসরণযোগ্য।
শ্রাবন্তীর ভ্লগে দেখা যায়, তিনি সকালে ওয়ার্কআউট শুরু করেন যোগা এবং স্ট্রেচিং দিয়ে। এরপর তিনি কার্ডিও, স্ট্রেংথ ট্রেনিং, এবং ফাংশনাল ট্রেনিংয়ের মিশ্রণে তৈরি একটি রুটিন অনুসরণ করেন। তাঁর প্রিয় ব্যায়ামগুলোর মধ্যে রয়েছে স্কোয়াট, প্ল্যাঙ্ক, এবং বার্পি। তিনি বলেন, “ফিটনেস শুধু শরীরের জন্য নয়, মনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। আমি যখন ওয়ার্কআউট করি, তখন মানসিক চাপ অনেক কমে।” তাঁর এই বক্তব্য অনেক ভক্তকে ফিটনেসের প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে।
ডায়েট প্ল্যান: শ্রাবন্তীর গোপন অস্ত্র
শ্রাবন্তীর ফিটনেস রহস্যের একটি বড় অংশ হল তাঁর ডায়েট। তাঁর ইউটিউব ভ্লগে তিনি তাঁর দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা শেয়ার করেছেন, যা সুষম এবং পুষ্টিকর। তাঁর সকাল শুরু হয় গ্রিন টি এবং ফল দিয়ে। দুপুরে তিনি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন গ্রিলড চিকেন, মাছ, বা ডালের সঙ্গে সবজি এবং ব্রাউন রাইস খান। রাতে তিনি হালকা খাবার পছন্দ করেন, যেমন স্যুপ বা সালাদ। তিনি বলেন, “আমি কখনো কঠিন ডায়েট করি না। বরং, আমি সবকিছু খাই, কিন্তু পরিমিতভাবে।” তাঁর ভ্লগে তিনি ভক্তদের উৎসাহ দেন, তাঁরা যেন প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলেন এবং প্রচুর জল পান করেন।
শ্রাবন্তীর ডায়েটে স্থানীয় এবং ঋতুভিত্তিক খাবারের উপর জোর দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “বাঙালি হিসেবে আমি মাছ এবং সবজি খেতে ভালোবাসি। এগুলো শুধু স্বাস্থ্যকর নয়, সহজলভ্যও।” তাঁর এই সহজবোধ্য ডায়েট প্ল্যান অনেকের জন্য অনুসরণযোগ্য হয়ে উঠেছে।
২০২৫ সালে নতুন কী?
২০২৫ সালে শ্রাবন্তীর ফিটনেস রুটিনে নতুন সংযোজন হল তাঁর তলোয়ার যুদ্ধ এবং ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণ। তাঁর আসন্ন চলচ্চিত্র ‘দেবী চৌধুরাণী’-এর জন্য তিনি এই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তাঁর ভ্লগে দেখা যায়, তিনি কলকাতার ময়দানে ঘোড়ায় চড়ার অনুশীলন করছেন এবং তলোয়ার যুদ্ধের কৌশল শিখছেন। এই প্রশিক্ষণ তাঁর শারীরিক সক্ষমতা বাড়িয়েছে এবং তাঁর ফিটনেস রুটিনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি বলেন, “এই প্রশিক্ষণ আমার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু এটি আমার শরীর এবং মনকে আরও শক্তিশালী করেছে।”
তাঁর ইউটিউব ভ্লগে তিনি এই প্রশিক্ষণের ক্লিপ শেয়ার করেছেন, যা ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। তাঁর ভ্লগে তিনি দর্শকদের উৎসাহ দেন, তাঁরা যেন নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন, যা তাঁদের ফিটনেস যাত্রাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
ভক্তদের প্রতিক্রিয়া এবং প্রভাব
শ্রাবন্তীর ফিটনেস ভ্লগগুলো ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্ট এবং ইউটিউব ভিডিওগুলোতে হাজার হাজার লাইক এবং কমেন্ট পড়ে। একজন ভক্ত, সুপ্রিয়া দাস, বলেন, “শ্রাবন্তীর ভ্লগ দেখে আমি নিয়মিত জিমে যাওয়া শুরু করেছি। তাঁর সহজ টিপস আমার জন্য খুব কাজের।” তবে, কিছু ট্রোলার তাঁর ফিটনেস যাত্রা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করলেও, শ্রাবন্তী তা সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করেছেন। তিনি বলেন, “ট্রোলিং আমাকে থামাতে পারে না। আমি আমার জন্য এবং আমার ভক্তদের জন্য ফিটনেস জার্নি চালিয়ে যাব।”
২০২৩ সালে তাঁর একটি জিম ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে তিনি কঠিন ব্যায়াম করছিলেন। সেই ভিডিওতে তাঁর ট্রেনারের কঠোর নির্দেশনা এবং তাঁর নিষ্ঠা দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। ২০২৫ সালে তাঁর নতুন ভ্লগগুলোতে এই নিষ্ঠা আরও প্রকট। তাঁর ভক্তরা তাঁর এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করছেন এবং তাঁর টিপস অনুসরণ করছেন।
কাজের ফ্রন্টে শ্রাবন্তী
শ্রাবন্তীর ফিটনেস যাত্রার পাশাপাশি তাঁর পেশাগত জীবনও জোরকদমে এগিয়ে চলেছে। ২০২৫ সালে তিনি ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছাড়াও ‘মীর জাফর – চ্যাপ্টার ২’ এবং ‘আমি আমার মতো’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। তাঁর ব্যস্ত শিডিউলের মধ্যেও ফিটনেসের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা অনুপ্রেরণাদায়ক। তিনি বলেন, “ফিটনেস আমাকে আমার কাজে আরও এনার্জি দেয়। আমি যখন ফিট থাকি, তখন আমার অভিনয়ও আরও ভালো হয়।”
শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের ফিটনেস রহস্য ২০২৫ সালে তাঁর ইউটিউব ভ্লগের মাধ্যমে সকলের সামনে এসেছে। তাঁর ওয়ার্কআউট রুটিন, ডায়েট প্ল্যান, এবং নতুন প্রশিক্ষণ তাঁর ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। তাঁর সহজবোধ্য টিপস এবং নিষ্ঠা সাধারণ মানুষের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক। তাঁর ফিটনেস যাত্রা প্রমাণ করে, ব্যস্ত জীবনেও নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ফিট থাকা সম্ভব। শ্রাবন্তীর ভ্লগগুলো শুধু ফিটনেস উৎসাহীদেরই নয়, তাঁর সিনেমার ভক্তদেরও মুগ্ধ করছে। তাঁর এই যাত্রা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ফিটনেস একটি জীবনধারা, যা শরীর এবং মনকে একসঙ্গে শক্তিশালী করে।
